জয়েন গ্রুপ

বাংলা সিরিয়াল

এই মুহূর্তে

“আমি অন্যদের ছাপিয়ে যাচ্ছি, তাই অভিনয়টা নাকি কমাতে হবে!” “অভিনয়টাই আমার রাজনীতি, তেল মারতে পারব না!”— ইন্ডাস্ট্রির দুই মুখো নীতির বিরুদ্ধে মুখ খুললেন প্রসূন! প্রতিভার শাস্তি পাচ্ছেন চরিত্রাভিনেতা! ‘নিম ফুলের মধু’র পর হাতে নেই কাজ!

টলিউডে দীর্ঘদিনের এক পরিচিত মুখ ‘প্রসূন গাইন’ (Prasun Gain)। চরিত্রাভিনেতা হিসেবেই ইন্ডাস্ট্রিতে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা থাকলেও, সেই স্বীকৃতির অভাবেই বারে বারে আঘাত পেয়েছেন তিনি। ২০২২ সালে হঠাৎ করেই এক চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছান অভিনেতা, যে অভিনয় জগৎ থেকে নিজেকে সরিয়ে নেবেন। ১৮ বছরের কেরিয়ারে একাধিক সিনেমা ও ধারাবাহিকে অভিনয় করেছেন তিনি, কিন্তু তাঁর দাবি অনুযায়ী, যোগ্য সম্মান তাঁকে কখনওই দেওয়া হয়নি। দেবের বন্ধু হিসেবে একাধিক ছবিতে অভিনয় করে চেনা মুখ হয়ে ওঠা প্রসূন, শেষবার পর্দায় দেখা গিয়েছিলেন ‘নিম ফুলের মধু’ (Neem Phooler Madhu) ধারাবাহিকে।

তবে সেই ধারাবাহিকও অসম্পূর্ণ রয়ে যায় তাঁর কেরিয়ারে। কারণ হিসেবে তিনি স্পষ্ট করে কিছু না বললেও, ইঙ্গিত দেন ইচ্ছাকৃতভাবে তাঁকে ধরা ধারাবহিক থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল। এমনকি, ধারাবাহিকের শেষ পর্বের সেলিব্রেশনেও নাকি তাঁকে ডাকা হয়নি। তাঁর কথায়, এই ঘটনাগুলি তাঁর মনোবল ভেঙে দেয়। যদিও ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে তাঁর ক্ষোভ আজকের নয়, বহুদিন ধরে জমে এবার বি’স্ফো’রণের রূপ নিচ্ছে। আগেও তিনি বলেছিলেন, “ইদানীং অনেকেই ফোন করেন, ভালো চরিত্র দেবে বলে। কিন্তু কিছু দিন আগে পর্যন্ত হিরোর পিছনেই দাঁড়িয়ে থাকতে হত।

বলা হয়েছে– এত ভাল অভিনয় করিস না, হিরো মার খেয়ে যাবে তো।” সম্প্রতি একটি পডকাস্ট শো-তে এসে আবারও নিজের জমে থাকা ক্ষোভ উগরে দেন প্রসূন গাইন। দীর্ঘ দিনের হতাশা এবং ইন্ডাস্ট্রির প্রতি অসন্তোষ সেখানে উঠে এসেছে অকপটে। তিনি বলেন, “আগাগোড়া অনেককেই বলতে শুনেছি ‘প্রসূনের সেলিং নেই, ফেস ভ্যালু নেই, ওকে নিস না।’ তাহলে আমি কি করবো? তাহলে কি যাঁরা দাদা দিদি আছেন, তাদের গিয়ে আমি তেল মারব? সবাই জানে, আমার কোনও রাজনৈতিক ট্যাগলাইন নেই। অভিনয়টাই আমার রাজনীতি।

আমার পরিচিত পরিচালক বন্ধুরা সব সময় বলে, ‘এত ভালো অভিনয় কেন করিস? কেটে বাদ দিতে হবে!’ একবার এক দাদা বলেছিলেন, ‘অভিনয়টা একটু কমা, অন্যদের ছাপিয়ে যাচ্ছে।'” তাঁর এই বক্তব্যে স্পষ্ট, ‘সেলিং’ বা ‘ফেস ভ্যালু’ নামক মাপকাঠির বাইরে থাকা একজন অভিনেতা কীভাবে বারবার অবহেলার শিকার হন, তা নিজের অভিজ্ঞতা থেকে উঠে এসেছে তাঁর কণ্ঠে। প্রসূনের অভিযোগ, ইন্ডাস্ট্রির অনেক বড় পরিচালক প্রতিশ্রুতি দিলেও শেষমেশ তাঁকে কোনও কাজ দেননি।

এই ধরনের ছুঁতমার্গ, প্রতিযোগিতার নামে প্রতিহিংসা— সব মিলিয়ে তাঁর বিশ্বাস, ইন্ডাস্ট্রির অনেক কিছুই বদলানো প্রয়োজন। তাই অভিনয় থেকে তাঁর স্বেচ্ছা অবসর এখনও বহাল। তবে আশার আলো এখনও পুরো নিভে যায়নি। প্রসূন জানান, যদি নতুন প্রজন্মকে সুযোগ দেওয়া শুরু হয়, এবং যদি তিনি দেখেন ইন্ডাস্ট্রির দৃষ্টিভঙ্গি বদলাচ্ছে, তবেই আবার অভিনয়ে ফিরতে আগ্রহী হবেন। আপাতত অপেক্ষায় আছেন, দেখার ইন্ডাস্ট্রি সত্যিই বদলাচ্ছে কিনা— নাকি অভিনয় শুধু কিছু নির্দিষ্ট মুখের একচেটিয়া খেলা হয়েই থেকে যাবে।

Piya Chanda