জয়েন গ্রুপ

বাংলা সিরিয়াল

এই মুহূর্তে

“এই কষ্ট আমি নিতে পারছি না… খণ্ডোয়ায় ফিরে যাচ্ছি”— ছেলের বিয়ের ধাক্কায় হৃদরোগ, জানুন কিশোর কুমারের জীবনের অজানা অধ্যায়!

কিশোর কুমার—এই নামটার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে শুধুই গান নয়, এক অদ্ভুত আকর্ষণ, এক অদ্বিতীয় আবেগ, এক নিঃসঙ্গ সত্তা। বাংলা ও হিন্দি সংগীত জগতে যাঁর অবদান আজও সমানভাবে শ্রদ্ধার দাবি রাখে, সেই মানুষটি ব্যক্তিগত জীবনে কতটা আবেগপ্রবণ ছিলেন, তা আজও অনেকের অজানা। হাস্যরসের মোড়কে যিনি সারাজীবন নিজের যন্ত্রণাকে ঢেকে রেখেছিলেন, তিনিই একসময় এমন এক মানসিক ধাক্কা খেয়েছিলেন, যা নাকি তাঁর হৃদরোগের সূচনাকারী হয়ে দাঁড়িয়েছিল—এমনটাই দাবি করেছেন তাঁর পুত্র অমিত কুমার।

সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে অমিত জানান, ১৯৮১ সালে তাঁর বিয়ের সমস্ত প্রস্তুতি চূড়ান্ত ছিল। পাত্রী ছিলেন কলকাতার এক সম্মানীয় পরিবারের মেয়ে, কার্ড ছাপানো হয়ে গেছে, অতিথি তালিকায় বলিউডের তাবড় তাবড় তারকারা। কিন্তু বিয়ের ঠিক ১০ দিন আগে তাঁদের কানে আসে এক বিস্ফোরক খবর—ওই পাত্রী আগেই একবার বিবাহিত ছিলেন! অথচ এমন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গোপন রাখা হয়েছিল। এই অপ্রত্যাশিত তথ্য সামনে আসতেই, পুরো পরিবারের উপর বাজ পড়ে যেন। কিন্তু সবচেয়ে বেশি ভেঙে পড়েন কিশোর কুমার।

ঘটনার আকস্মিকতায় স্তম্ভিত হয়ে পড়েছিলেন কিশোর। তিনি নাকি বলেছিলেন—“তুই বিয়ে কর, আমি খণ্ডোয়ায় ফিরে যাব, সেখানেই থাকব চুপচাপ।” কিন্তু পরবর্তী সময়ে, অমিতের বিয়ে বাতিল হওয়ার পরদিন, অর্থাৎ ২৪ জানুয়ারি, তিনি জেদ করে কলকাতা চলে আসেন নতুন পাত্রী খুঁজতে। সেই সফরই হয়ে দাঁড়ায় ভয়ঙ্কর মোড় নেওয়া এক অধ্যায়।

কলকাতা পৌঁছে বিমানবন্দর থেকে বেরোনোর কিছু সময়ের মধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়েন কিশোর কুমার। তৎক্ষণাৎ তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকেরা জানান, তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছেন। এই ঘটনাই নাকি ছিল কিশোর কুমারের প্রথম হার্ট অ্যাটাক, যেটা পরবর্তী জীবনে তাঁকে শারীরিকভাবে আরও দুর্বল করে দেয়। অমিতের মতে, “সেই মানসিক ধাক্কাটা ওঁর শরীর নিতে পারেনি।”

কিশোর কুমার সারাজীবন নিজের স্বপ্ন ও অনুভবকে গানে ফুটিয়ে তুললেও, নিজের পুত্রের জীবনে ঘটে যাওয়া এই হতাশাজনক ঘটনা তাঁকে অন্তর থেকে নিঃশেষ করে দিয়েছিল। একসময় বলেছিলেন—“এই শহরে কেউ নিজের নয়, আমি খণ্ডোয়ার মাটিতেই ফিরে যেতে চাই।” কিন্তু সেই ফেরা আর হয়ে ওঠেনি। বলিউডের ঝলমলে পর্দার আড়ালে লুকিয়ে থাকা এই করুণ কাহিনি আজও কিশোর-প্রেমীদের চোখে জল এনে দেয়—কারণ তিনি শুধু এক শিল্পী ছিলেন না, ছিলেন এক ভেঙে যাওয়া পিতাও।

Piya Chanda

                 

You cannot copy content of this page