জি বাংলার (Zee Bangla) আসন্ন ধারাবাহিক ‘জোয়ার ভাঁটা’–র (Jowar Bhanta) প্রোমো প্রকাশ হতেই দর্শকমহলে শুরু হয়েছে আলোড়ন। আসানসোলের কয়লাখনির পটভূমিতে গড়ে ওঠা এই কাহিনিতে একেবারে বিপরীতধর্মী দুই বোনের গল্প ধরা পড়েছে। ছোট বোন উজি, যাঁর চরিত্রে আছেন ‘আরাত্রিকা মাইতি’ (Aratrika Maity), পরিশ্রমী ও দায়িত্বশীল। সংসারের ভার সামলিয়ে চাকরি করে বাবাকে ও দিদিকে ভালো রাখার স্বপ্ন দেখে সে। অপরদিকে বড় বোন নিশা, অর্থাৎ ‘শ্রুতি দাস’ (Shruti Das), অর্থলোভী এবং ঝুঁকিপূর্ণ জীবনে অভ্যস্ত।
ফোনে প্রতারণা করে অর্থ উপার্জনের সাইবার জালিয়াতির সঙ্গে সে জড়িয়ে পড়েছে। প্রোমোতেই স্পষ্ট হয়েছে, দুই বোনের স্বপ্নের পথ কতটা আলাদা। এক গুরুত্বপূর্ণ দৃশ্যে দেখা যায়, চাকরির পরীক্ষার দিনে উজি দিদির জন্য খাবার গুছিয়ে রওনা দেয়। অথচ ঠিক সেই মুহূর্তে পুলিশ হানা দেয় নিশার প্রতারণার আস্তানায়। খবর পেয়েই পরীক্ষা ছেড়ে দিদিকে বাঁচাতে ছুটে যায় সে। কিন্তু বিপদ থেকে মুক্ত হওয়ার পরও নিশার মনে অনুশোচনা নেই। উল্টে ব্যাগ থেকে টাকা বের করে জানিয়ে দেয়, সরকারি চাকরি করে যা আয় হয়, তার থেকেও বেশি সে রোজগার করে।
এমনকি এক নামী ব্যবসায়ীর পোস্টারের দিকে ইঙ্গিত করে নিশা বলে ওঠে—ওই তার পরবর্তী টার্গেট। এখানেই উজি ক্ষুব্ধ হয়ে দিদিকে সতর্ক করে দেয়, এখনই বদলাতে না পারলে একদিন তিনিই দিদির বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়াবেন। গল্পের এই টানটান পরিস্থিতি দর্শকদের আগ্রহ বাড়ালেও, সমালোচনা থেকে রেহাই পাননি আরাত্রিকা। কারণ, এর আগেও তিনি ‘মিঠিঝোরা’ ধারাবাহিকে রাইপূর্ণা চরিত্রে একই ধরনের দায়িত্বশীল, আত্মত্যাগী দিদির ভূমিকায় দেখা গিয়েছিলেন। সেই চরিত্রে আবেগ ও কান্নার ছড়াছড়ি থাকলেও, প্রতিবাদের জায়গায় তিনি চুপ থেকেছেন।
দর্শকদের অভিযোগ ছিল, বোনের অন্যায়ের সামনে রাইপূর্ণার নীরবতা এবং সারাক্ষণ কান্না বিরক্তিকর হয়ে উঠেছিল। ফলে, নতুন ধারাবাহিকে আরাত্রিকার চরিত্রের সঙ্গে সেই পুরনো ছাপের মিল দেখে অনেকেই আশঙ্কা করছেন আবারও তাঁকে একই ধাঁচে দেখানো হবে। সমাজ মাধ্যমে প্রোমো প্রকাশ পেতেই দর্শকদের সেই অসন্তোষ স্পষ্ট করেছে। কেউ লিখেছেন, “দূর রাই শুধু ন্যাকা অভিনয় করে, বিরক্ত লাগে। আরাত্রিকার চোখের জলে এই সিরিয়াল টাও ভাসতে চলেছে!” অন্যজন বলছেন, “সেই আবার দয়াবান আমাদের রাই দিদি সব জায়গায় দয়া দেখাবেন।
একে ছাড়া আর অভিনেত্রী পায় না নাকি!” আবার একজন বলেছেন, “যতই সুযোগ দাও, রাই দিদির মহান, দয়াময়ী হওয়া শেষ হবে না। বারবার এই আরাত্রিকার প্যানপ্যানানি অভিনয়, খুবই বিরক্তিকর!” শেষে একজন বলেছেন, “প্রোমোতে যত যাই দেখাক না কেন, কিছুদিন পর শুরু হবে এক নায়ক নিয়ে দুই বোনের টানাটানি। আর রাইয়ের মহানুভবতা, বলছি সুচিত্রা সেন আবার সিরিয়ালে কেন? মহানায়িকা তো সিনামা করেন জানতাম!” তবুও একথা মানতেই হবে, শ্রুতি দাস ও আরাত্রিকা মাইতির জুটি দর্শক টানার ক্ষেত্রে সক্ষম।
আরও পড়ুনঃ জন্মাষ্টমীর পুজোয় সিংহরায় বাড়িতে অপর্ণার আগমন, গোপাল প্রতিষ্ঠার মাঝেই ঘটে গেল বিপদ! অবাক রাজলক্ষ্মী থেকে অর্ক, শুরু হল অদ্ভুত ঘটনা! রহস্যঘেরা ঘরের দরজা খুলল নিজের থেকেই!
একদিকে প্রতারণায় জড়ানো উচ্চাকাঙ্ক্ষী দিদি, অন্যদিকে পরিশ্রমী ছোট বোনের মধ্যে দ্বন্দ্ব গল্পকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। সেইসঙ্গে নায়ক বীর শর্মাকে ঘিরে দুই বোনের ভালোবাসার লড়াইও বাড়তি আকর্ষণ যোগ করবে। তবে দর্শকদের বড় প্রশ্ন থেকেই গেছে—এই ধারাবাহিক কি নতুন কিছু উপহার দেবে, নাকি আগের মতোই কাঁদো কাঁদো চরিত্রে আটকে পড়বেন আরাত্রিকা? এখন দেখার, ‘জোয়ার ভাঁটা’–র জোয়ার দর্শকের ভালোবাসা টেনে আনে, নাকি ভাঁটা নামিয়ে দেয় অতি দ্রুত।