জয়েন গ্রুপ

বাংলা সিরিয়াল

এই মুহূর্তে

“তোকে ডোনেশন দিয়ে পড়াশোনা করিয়েছি, পড়াশোনা কর, না হলে খুন্তি নাড়তে হবে”— বাবার সেই সতর্কবানী শোনালেন দেব! তবে কি এমন কঠিন লড়াইয়ের পথ পেরিয়ে আজকের সুপারস্টার হয়ে উঠেছেন অভিনেতা?

বাংলা সিনেমার জগতে দেব নামটা আজ এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। প্রায় দুই দশক ধরে একের পর এক হিট ছবি উপহার দিয়ে তিনি দর্শকের মনে আলাদা জায়গা করে নিয়েছেন। শুধু অভিনেতা নন, রাজনৈতিক মঞ্চেও তাঁর উপস্থিতি স্পষ্ট। তবে সবকিছুর ঊর্ধ্বে দেবকে টলিউডের ‘সুপারস্টার’ বলা হয় মূলত তাঁর জনপ্রিয়তা আর ভক্তদের নিঃশর্ত ভালোবাসার কারণেই।

দর্শককে কীভাবে আপন করে নিতে হয়, দেব সেটা ভালো করেই জানেন। শুরুটা ছিল একেবারে সাধারণ ছবি দিয়ে, কিন্তু ধীরে ধীরে তাঁর অভিনয়ের পরিসর বদলেছে। অ্যাকশন হোক কিংবা রোমান্স—প্রতিটি চরিত্রে তিনি নিজের স্বকীয়তা প্রমাণ করেছেন। এই কারণেই আজও তাঁর নতুন ছবি মুক্তি মানেই দর্শকের আগ্রহ তুঙ্গে থাকে। সিনেমা হলে দেবকে দেখতে যাওয়াটা যেন একটা উৎসবের মতো হয়ে উঠেছে।

সেই আগ্রহই আবার প্রমাণিত হলো সম্প্রতি মুক্তিপ্রাপ্ত ধূমকেতু ছবিতে। ছবিটি দশ বছর আগে তৈরি হলেও নানা জটিলতার কারণে মুক্তি পায়নি। অবশেষে দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে ২০২৫ সালে মুক্তি পেল ছবিটি। ভক্তদের কাছে এই ছবি শুধু সিনেমা নয়, যেন এক আবেগের প্রতিফলন। বহু বছর আগে তৈরি হওয়া গল্প হলেও দেবের উপস্থিতি আর অভিনয় নতুন করে দর্শকদের হৃদয় ছুঁয়ে যাচ্ছে।

ছবির মুক্তির সময়ে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে দেব খোলাখুলি জানিয়েছেন তাঁর জীবনের সংগ্রামের কথা। তিনি বলেন, ছোট থেকেই অভিনেতা হওয়ার স্বপ্ন দেখলেও তাঁর বাবা-মায়ের প্রতিক্রিয়া ছিল ভিন্ন। মা সবসময় বিশ্বাস করতেন, ছেলে একদিন সুপারস্টার হবে। তাই তখন থেকেই তাঁকে ‘হিরো’ বলে ডাকতেন। কিন্তু দেবের বাবা চাইতেন ছেলে পড়াশোনায় মন দিক, চাকরি করুক। তাঁর কথায়, “স্টুডিওর বাইরে যারা ছবি জমা দিতে আসে, তাদের আমি ক্যাটারিং-এর বেঁচে যাওয়া খাবার খাওয়াতাম। তোরও যেন সেই অবস্থা না হয়, তাই ডোনেশন দিয়ে পড়াশোনা করালাম, ভালো করে পড়াশোনা করে চাকরি কর নয়তো আমার মত খুন্তি নাড়তে হবে।”

বাবার সেই আশঙ্কা আজ ইতিহাস হলেও, দেব জানেন সংগ্রাম ছাড়া কিছুই সম্ভব নয়। তিনি অকপটেই স্বীকার করেছেন, বাবার কথাগুলো তাঁকে আরও দৃঢ় করেছিল। যদি সফল না হতেন, তবে হয়তো বাবার মতো তাঁকেও খুন্তি হাতে রান্নাঘরে নামতে হতো। আজ তিনি বাংলার অন্যতম সেরা নায়ক হলেও সেই শুরুর দিনগুলোর লড়াই তাঁকে মনে করিয়ে দেয়—সফলতার পথে কতটা কষ্ট আর আত্মত্যাগ প্রয়োজন। আর সেই কারণেই ‘ধূমকেতু’র মুক্তি দেবের কাছে শুধু ছবি নয়, তাঁর জীবনের আরেক অধ্যায়ের প্রতীক।

Piya Chanda

                 

You cannot copy content of this page