শাহিদ কপূরের ‘কবীর সিংহ’ সিনেমাটি মুক্তির পর দর্শকমহলে ব্যাপক সাড়া ফেললেও, তার চারপাশে বিতর্কের আগুন বেশ কিছুদিন জ্বলেছিল। বিশেষ করে নারীবাদী মহলে ছবির নায়ককে নিয়ে বেশ আপত্তি উঠেছিল। একজন প্রেমিক যদি নিজের ভালোবাসার মানুষকে কখনও আদরে জড়িয়ে ধরে, তো কখনও রেগে গিয়ে চড় মেরে দেয়, সেটা কি আদৌ প্রেম? প্রেম কি শুধুই একপাক্ষিক অধিকার? এই প্রশ্নগুলো সেই সময় অনেকের মনেই ঘুরপাক খাচ্ছিল।
তবে কিছু মানুষ আবার এই উগ্র প্রেমিককেই ভালোবাসার একধরনের ‘হিরোইক’ রূপ বলে মেনে নিয়েছেন। যেখানে প্রেমিক তার প্রেমিকার জন্য সব কিছু করতে পারে, প্রয়োজনে রাস্তায় মারামারিও! অভিনেতা ‘সোহম চক্রবর্তী’ (Soham Chakraborty) সম্প্রতি নিজের প্রেম জীবনের গল্প বলতে গিয়ে, মজার ছলেই নিজেকে ‘কবীর সিংহ’-এর মতো প্রেমিক বলে আখ্যা দেন। তিনি বলেন, স্ত্রী তনয়ার সঙ্গে সম্পর্কের শুরুতেই এমন এক ঘটনা ঘটেছিল, যা অনেকটাই সিনেমার সেই চরিত্রের মতো ছিল।
তখন তনয়া স্কুলে, আর সোহম কলেজে পড়েন। তনয়া রাগ করে কথা বলছিল না, আর সোহম বাইক নিয়ে গিয়ে স্কুলবাসের পেছনে পৌঁছে থামিয়ে কথা বলে বোঝানোর চেষ্টা করেন। অনেকের চোখে হয়তো এমন প্রেমিক ‘অ্যাগ্রেসিভ’ বা ‘পজেসিভ’ মনে হতে পারে, কিন্তু সোহমের ভাষায়, তখন ওটাই ছিল ভালোবাসার এক ধরনের প্রকাশ। তবে এই ঘটনাকে নিয়ে সোহম নিজেও এখন আর গর্ব করেন না। বরং এটাকে তার যুবক বয়সের আবেগপ্রবণতা হিসেবেই দেখেন। সময়ের সঙ্গে মানুষ বদলায়, সম্পর্কের রূপও বদলায়।
এখন তিনি এক সন্তুষ্ট পরিবারবিবাহিত মানুষ, দুই ছেলের বাবা এবং দীর্ঘ ১৩ বছরের বৈবাহিক জীবনে এক রুটিনবাঁধা প্রেমিক ও পরিবারের কর্তা। উল্লেখ্য, টলিউডে দীর্ঘদিন ধরে নায়ক হিসেবে কাজ করলেও সোহমের ব্যক্তিগত জীবনে কোনও বিতর্কের ছায়া কখনও খুব একটা পড়েনি। পর্দার বাইরে তিনি বরাবরই শান্ত ও পরিশীলিত এক মানুষ হিসেবে পরিচিত। নায়িকা বা গ্ল্যামারের বাইরে থেকেও একজন তারকা কীভাবে নিজের সম্পর্ক এবং সংসারকে এতটাই সুন্দরভাবে আগলে রাখতে পারেন, তা সত্যিই প্রশংসনীয়।
আরও পড়ুনঃ কঠিন সংগ্রাম করে জায়গা করেছিলেন টলিউডে, সেই সুখেন দাসকেই বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিলেন সুচিত্রা সেন! কিন্তু কেন অভিনেতার সঙ্গে এমন আচরণ করেছিলেন তিনি? জানেন সেই কারণ?
তনয়ার সঙ্গে তার সম্পর্ক শুধু দীর্ঘদিনের ভালোবাসার গল্প নয়, এক ধরনের বন্ধুত্ব, বিশ্বাস আর পারস্পরিক শ্রদ্ধার ওপর দাঁড়ানো জীবনযাপন। তাই ‘কবীর সিংহ’ চরিত্র নিয়ে সমাজে নানা মিশ্র প্রতিক্রিয়া থাকলেও, সেই চরিত্রের ছায়ায় নিজের জীবনের এক ছোট্ট অধ্যায়কে তুলে ধরার মধ্যে দিয়ে সোহম স্পষ্ট করে দিয়েছেন, আবেগ অনেক সময় সিনেমার মতো বাস্তব জীবনেও প্রতিফলিত হয়। তবে তার মতো মানুষরাই আবার সেই আবেগকে সময়ের সঙ্গে পরিণতিতে পরিণত করেন।