ডিজিটাল দুনিয়ার ব্যবহার যত বাড়ছে, ততই নতুন নতুন ঝুঁকিও সামনে আসছে। বিশেষ করে শিশু-কিশোররা যখন অনলাইন গেম বা ইন্টারনেটে সক্রিয় থাকে, তখনই অচেনা বিপদ তাদের দিকে এগিয়ে আসে। বহু সময়ে এই বিপদের আকার এতটাই ভয়াবহ হয় যে পরিবারের অভিভাবকরাও হতবাক হয়ে পড়েন। সম্প্রতি বলিউডের জনপ্রিয় নায়ক অক্ষয় কুমার এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের এক অভিজ্ঞতা প্রকাশ করলেন, যা শুনে স্তম্ভিত হয়ে যায় উপস্থিত সবাই।
অক্ষয় জানান, ঘটনাটি ঘটেছিল তাঁর বাড়িতেই। একদিন অনলাইনে গেম খেলছিল তাঁর কন্যা নিতারা। খেলার মাঝেই হঠাৎ এক অচেনা ব্যবহারকারীর কাছ থেকে বার্তা আসে— প্রথমে জিজ্ঞেস করা হয় সে ছেলে নাকি মেয়ে। নির্দোষ মন নিয়ে উত্তর দেয় ছোট্ট মেয়ে। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই আসে আরও এক চমকে দেওয়া বার্তা— ‘‘তুমি কি আমাকে নগ্ন ছবি পাঠাতে পারো?’’ এই ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আনতেই চারদিক নিস্তব্ধ হয়ে যায়।
অক্ষয় জানান, নিতারা ভাগ্যক্রমে যথেষ্ট বুদ্ধিমানের মতো সঙ্গে সঙ্গে গেম বন্ধ করে মাকে অর্থাৎ টুইঙ্কল খান্নাকে সবটা জানায়। যদিও দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার ফলে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি এড়ানো গিয়েছিল, কিন্তু অভিনেতার মতে, বিষয়টি আরও ভয়াবহ হতে পারত। অক্ষয়ের কথায়, ‘‘এভাবেই শুরু হয় সমস্যা। অনলাইনে অপরিচিতদের সাথে মিশতে গিয়ে অনেক সময়ে শিশু-কিশোররা বিপদের জালে জড়িয়ে পড়ে।’’
সেই মঞ্চে দাঁড়িয়েই অক্ষয় কুমার আবেদন জানান মহারাষ্ট্র সরকারের কাছে। তিনি প্রস্তাব দেন, সপ্তম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত প্রতিটি ক্লাসে সপ্তাহে একটি ‘‘সাইবার পিরিয়ড’’ রাখা উচিত। যেখানে ছাত্রছাত্রীদের শেখানো হবে কীভাবে অনলাইনে সতর্ক থাকতে হয়, কোন ধরনের বার্তা বা পরিস্থিতি বিপজ্জনক হতে পারে এবং তার থেকে কীভাবে নিজেকে বাঁচাতে হবে। তাঁর মতে, এই ধরনের শিক্ষা এখন সময়ের দাবি, কারণ ‘‘সাইবার ক্রাইম রাস্তায় ঘটে যাওয়া অপরাধের থেকেও বড় হয়ে উঠছে।’’
আরও পড়ুনঃ রান্নাঘরে হঠাৎ বিপদ! আর্য-অপর্ণার অভিমান শেষে ভয়ঙ্কর মোড়! অপর্ণার সামনে আচমকাই লুটিয়ে পড়ল আর্য! ভবিষ্যৎবাণী কি সত্যি হয়ে গেল? কি করবে এখন অপর্ণা? ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’এ টানটান পর্ব!
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ, পুলিশের মহাপরিচালক রশ্মি শুক্লা, আইপিএস ইকবাল সিং চাহাল ও অভিনেত্রী রানি মুখোপাধ্যায়। সকলের সামনেই অক্ষয়ের এই আবেদন আলোচনার কেন্দ্রে উঠে আসে। বিশেষজ্ঞদের মতে, আজকের দিনে বাচ্চাদের হাতে যখন সহজেই স্মার্টফোন পৌঁছে যাচ্ছে, তখন অভিভাবক ও স্কুল উভয়ের দায়িত্ব শিশুদের সাইবার নিরাপত্তা শেখানো। অক্ষয়ের অভিজ্ঞতা সেই দিকেই সকলকে নতুন করে সতর্ক করল।