জয়েন গ্রুপ

বাংলা সিরিয়াল

এই মুহূর্তে

“আজকের প্রজন্ম অনেক বেশি প্রলোভনের মধ্যে দিয়ে বড় হচ্ছে…ঔদ্ধত্যকেই স্মার্টনেস ভাবতে হবে, নাহলে পিছনে পড়ে যাবে!” “ঋদ্ধি অনেক ভাগ্যবান, ভালো সময়ে জন্মেছে!”— প্রযুক্তির ছায়ায় একাকীত্বই বর্তমান প্রজন্মের আসল শত্রু, বলছেন কৌশিক সেন!

বাংলা চলচ্চিত্রের অন্যতম প্রতিভার এক উজ্জ্বল নাম অভিনেতা ‘কৌশিক সেন’ (Kaushik Sen), যাঁর অভিনয় বরাবরই দর্শকের মনে গভীর ছাপ ফেলে। ছোট পর্দা হোক বা বড়, চরিত্রের অন্তর্নিহিত আবেগকে তিনি এত নিখুঁতভাবে তুলে ধরেন যে, তা বাস্তবের সীমানা ছুঁয়ে যায়। এবারের ভাতৃদ্বিতীয়ার আবহকে পর্দায় তুলে ধরেছেন নবাগত নির্মাতা অন্নপূর্ণা বসু তাঁর প্রথম ছবি ‘স্বার্থপর’-এ। যেখানে কোয়েল মল্লিক এবং কৌশিক সেন পর্দার ভাই-বোনের জটিল সম্পর্ক ফুঁটিয়ে তুলবেন এই ছবিতে।

সম্প্রতি এই ছবি নিয়ে এক সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে আলোচনায় কৌশিক সেনকে জানতে চাওয়া হয়, ছবির নামটা আজকের দিনে দাঁড়িয়ে কি একটু বেশীই প্রাসঙ্গিক? কারণ বর্তমান প্রজন্মকে নিয়ে অধিকাংশ মানুষের মধ্যেই একটা ধারণা কাজ করে যে, এর একাকী জীবন যাপন করে যৌথ পরিবার নয় বরং প্রযুক্তি নির্ভর জীবনে সম্পর্কগুলোর মূল্য বোঝে না সন্মান কি জিনিস ভুলে গেছে। যেহেতু অভিনেতারও ছেলে রয়েছেন, এই নিয়ে অভিনেতার কি মত?

কৌশিক সেনের কথায়, “এটা একদমই ভুল আর অত্যন্ত বাজে ধারণা। অনেককেই বলতে শুনি যে আমাদের সময় এটা ছিল ওটা ছিল, কিন্তু এটাও তো স্বীকার করতে হবে তাদের যে অনেক কিছু ছিল না! বর্তমান প্রজন্মরা অনেক বেশি প্রলোভনের মধ্যে দিয়ে বড় হচ্ছে তাই ওদের সংগ্রামটাও আলাদা। জন্মানোর পর যে বেসিক শিক্ষাটুকু পাওয়ার দরকার, তার আগেই হাতে প্রযুক্তি এসে যাচ্ছে। এর ফলে বিভিন্ন রকম মানসিক সমস্যার দেখা দিচ্ছে, বিকৃত মানসিকতা তৈরি হচ্ছে।

বাচ্চাটি তখন মনে করছে, অমুকের কাছে যেটা আছে আমার কাছে সেটা নেই কেন? তার চাহিদা বেড়ে যাচ্ছে, নিজের পরিসর ভুলে যাচ্ছে।” তিনি আরও যোগ করলেন, “এতে দোষ যদিও তাদের নয়, সময়টাই এমন! আমার ছেলে ঋদ্ধি মনে হয় সেই শেষ ভাগ্যবান, যে ভালো সময় জন্মেছে। মা-বাবার যে ফাঁকা সময়টুকু ঋদ্ধি পেয়েছে, আজকের দিনে হয় হলে হয়তো সেটা সম্ভব হতো না। ছোটবেলা যখন ঋদ্ধির একবার চিকেন পক্স হল, ডাক্তারের পরামর্শে ওকে কিছুদিন আলাদা থাকতে হয়েছে মায়ের সঙ্গে।

ওই সময়টুকু ঋদ্ধিকে বিশ্বের নানান প্রান্তের সিনেমা দেখিয়ে ব্যস্ত রেখেছিলাম আমরা। সেই থেকেই ওর সিনেমার প্রতি ভালোবাসা, আজকের দিনে হলে হাতে মোবাইল ধরিয়ে দেওয়া হত। আসলে মা-বাবাদেরও দায়িত্ব থাকে সন্তান জন্ম দেওয়ার আগে, তাকে কতটা সময় দিতে পারবে সেটা হিসেব করে নেওয়া। সব দোষ সন্তানদের দিলে হয় না। অভিভাবকের সময়ের অভাবে নানান রকম মানসিক সমস্যা বেড়েই চলেছে, এটা গবেষণাও বলছে।

কিছুদিন আগেই অমিতাভ বচ্চনের সামনে একটি বাচ্চার আচরণ নিয়ে সবার মধ্যে যে প্রতিক্রিয়া সেটা মোটেই কাম্য নয়। বাচ্চাটি নিঃসন্দেহে ভুল করেছে, কারণ তার প্রজন্ম মনে করে ঔদ্ধত্যটাই স্মার্টনেস! সে যদি সেটার বাইরে চলে যায়, তাহলে তাকে পেছনে ফেলে দেবে সবাই। এখানে পারিবারিক শিক্ষা বা মা-বাবাকে দোষ দেওয়ার আগে একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞর দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে দেখতে হবে বাচ্চাটির মধ্যে কোনরকম ট্রমা কাজ করছে কিনা।”

Piya Chanda

                 

You cannot copy content of this page