জয়েন গ্রুপ

বাংলা সিরিয়াল

এই মুহূর্তে

“ইন্ডাস্ট্রি আমার জন্য নয়, আমি পলিটিক্স জানি না, ম্যানিপুলেশনও জানি না!”— চরিত্র থেকে হঠাৎ বাদ পড়ে ভেঙে পড়লেন তুলিকা বসু! কাঁদতে কাঁদতে অভিনয় ছাড়ার ইঙ্গিত দিলেন অভিনেত্রী ! তবে কি গ্ল্যামারের আড়ালে চলছে ইন্ডাস্ট্রির অমানবিক রাজনীতি?

বাংলা বিনোদন জগত ভাবলে প্রথমেই চোখে পড়ে আলো, ক্যামেরা, গ্ল্যামার আর তারকাদের ঝলকানি। এই জগতের মানুষদের জীবনের সাজানো হাসি আর পর্দার উজ্জ্বল রঙেই যেন লুকিয়ে থাকে তাদের সত্তা। কিন্তু সেই হাসি আর চাকচিক্যের আড়ালেও রয়েছে অনেক না-বলা কষ্ট, মানসিক চাপ ও অনিশ্চয়তার গল্প। এই জগত একদিকে যেমন স্বপ্ন পূরণের মঞ্চ, অন্যদিকে তেমনই অনেক সময় হৃদয়ভাঙার জায়গাও হয়ে ওঠে।

বিনোদনের এই দুনিয়ায় সবসময় চোখে পড়ে কেবল খ্যাতি ও করতালির দিকটা। কিন্তু পর্দার আড়ালে চলে আরেক লড়াই— সময়ের সঙ্গে দৌড়, শিডিউলের চাপ, পারিশ্রমিকের অস্থিরতা এবং সম্পর্কের রাজনীতি। অনেক শিল্পীকে প্রতিদিন নিজের জায়গা ধরে রাখার জন্য যেভাবে লড়তে হয়, তা দর্শক জানেন না। সেখানে আবেগের জায়গায় অনেক সময় চলে আসে ক্যালকুলেশন, আর শিল্পীরা হারিয়ে ফেলেন তাঁদের মানসিক স্থিরতা। প্রত্যেক হাঁসি, প্রতিটি সংলাপের আড়ালে থাকে রক্ত-মাংসের মানুষের পরিশ্রম আর অপ্রকাশিত যন্ত্রণা।

সেই যন্ত্রণার কণ্ঠস্বরই উঠে এসেছে জনপ্রিয় অভিনেত্রী তুলিকা বসুর কথায়। সম্প্রতি তিনি প্রকাশ করেন, যাত্রা ও শুটিংয়ের সময়সূচি নিয়ে যোগাযোগহীনতার কারণে তাঁকে হঠাৎ করে চরিত্র থেকে বাদ দেওয়া হয়। বিষয়টি তাঁকে ভীষণভাবে নাড়িয়ে দেয়। তুলিকার ভাষায়, শিল্পী হিসেবেও তাঁর সম্মান ক্ষুণ্ণ হয়েছে। তিনি বলেন, “আমাদেরকে বারবার মানিয়ে নিতে হয়, অথচ কেউ ভাবেন না আমরা মানুষ, আমাদেরও আবেগ আছে।” এমন আচরণে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে তুলিকা চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি। তাঁর কথায়, হয়তো এই ইন্ডাস্ট্রি আর তাঁর জন্য নয়।

তুলিকা আরও বলেন, “আমি ক্যালকুলেটিভ না, আমি পলিটিক্স জানি না, ম্যানিপুলেশনও জানি না।” তাই ক্রমে এই ইন্ডাস্ট্রির পরিবর্তিত পরিবেশে নিজেকে বেমানান লাগছে তাঁর। তবু এটিকেই তিনি তাঁর প্রফেশন বলে মেনে নিয়েছেন। একসময় যাদের সঙ্গে পরিবারের মতো সম্পর্ক ছিল, এখন সেই সম্পর্কেই এসেছে দূরত্ব।

এখন তুলিকা আপাতত যাত্রা নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন, এবং কিছুটা সময় নিচ্ছেন নিজের মানসিক স্থিরতা ফিরে পেতে। তাঁর বিশ্বাস, সময়ই সকল উত্তর দেবে। এই ঘটনার পরেও তিনি আশা হারাননি, তিনি জানিয়েছেন— “একদিন নিশ্চয়ই সব বদলে যাবে,”। বিনোদন জগতে তাঁর দীর্ঘ ২৯ বছরের পথচলা যেমন দর্শকদের ভালোবাসায় ভরা, তেমনই আজও সেই নিজের পাওয়া ভালোবাসাকেই ভরসা করে দিন কাটাচ্ছেন অভিনেত্রী।

Piya Chanda