জি বাংলার জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’ (Chirodini Tumi Je Amar), এই নামটার সঙ্গে এখন শুধু গল্প নয়, জড়িয়ে গিয়েছে বাস্তবের নানা টানাপোড়েনও। অপর্ণা চরিত্র বদলানোর পর থেকেই ধারাবাহিক ঘিরে আলোচনা, সমালোচনা আর আবেগের ঘনঘটা যেন থামছেই না। দিতিপ্রিয়া রায়ের (Ditipriya Roy) হঠাৎ প্রস্থান অনেক দর্শকের কাছেই ছিল ধাক্কার মতো। কারণ শুরুটা হয়েছিল তাঁকে নিয়েই, তাঁকে অপর্ণা হিসেবেই আর্যর সঙ্গে রসায়নেই তৈরি হয়েছিল ধারাবাহিকের জনপ্রিয়তার ভিত।
সেই জায়গায় একেবারে নতুন মুখ, ঝাড়গ্রামের মেয়ে শিরিন পাল (Shirin Paul)! স্বাভাবিকভাবেই দর্শক দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। কেউ আজও পুরনো অপর্ণাকে ভুলতে পারেননি, আবার কেউ নতুন জুটির গল্পে খুশি। এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির মাঝেই নীরবে নিজের কাজটা করে যেতে দেখা যায় শিরিনকে। শুরুতে তাঁকে ঘিরে নেতিবাচক মন্তব্য কম ছিল না, কিন্তু ধীরে ধীরে তাঁর অভিনয় অনেকের মনোভাব বদলাতে শুরু করে। সহ-অভিনেতাদের কাছেও তিনি প্রশংসিত হয়েছে।
জিতু কমলও বিভিন্ন সময়ে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, নতুন সহ-অভিনেত্রীর সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা তাঁর কাছে ইতিবাচক। তবে আসল বিতর্কের আগুনে ঘি পড়ে ২০২৫ সালের ‘টিভি নাইন বাংলা ঘরের বায়স্কোপ’ পুরস্কার অনুষ্ঠানে। দর্শকের ভোটে সেরা অভিনেতার সম্মান পেয়ে মঞ্চে উঠে জিতু যে কথা বললেন, তাতেই চমকে গেলেন অনেকেই। নিজের প্রাপ্ত পুরস্কার তিনি উৎসর্গ করলেন শিরিন পালকে! আর বললেন, এই লড়াইয়ে তাঁর ‘যুদ্ধের সঙ্গী’ শিরিন। বক্তব্যটা আন্তরিক হলেও, তার অভিঘাতটা ছিল বেশ তীব্র।
একদিকে জিতুর অনুরাগীরা এই মুহূর্তকে দেখলেন পাশে দাঁড়ানোর সুন্দর উদাহরণ হিসেবে। তাঁদের মতে, নতুন শিল্পী হিসেবে এত চাপের মধ্যে কাজ করা সহজ নয় আর সেই লড়াইটাকেই সম্মান জানিয়েছেন জিতু। কিন্তু অন্যদিকে, দিতিপ্রিয়া ভক্তদের চোখে বিষয়টা মোটেও এত সরল নয়। তাঁদের প্রশ্ন, যে সফরের শুরুতে তাঁর পাশে ছিলেন দিতিপ্রিয়াই, যে জুটিকে ঘিরেই জনপ্রিয়তা তৈরি, সেখানে তাঁকে একবারও উল্লেখ না করে নতুন অভিনেত্রীকে পুরস্কার উৎসর্গ করা কি আসলে কটাক্ষ নয়?
আরও পড়ুনঃ সো’না ডাকাতির মামলায় পুলিশি তৎপরতা, আইনের হাত এড়াতে গিয়ে বিপদে উজি-নিশা! জিৎ বসুর থামার নির্দেশ অমান্য, গু’লিবিদ্ধ নিশা লুটিয়ে পড়ল মাটিতে! ‘জোয়ার ভাঁটা’য় নাটকীয় মোড়! কী করবে এবার উজি?
উপরন্তু, অনুষ্ঠানে দিতিপ্রিয়া উপস্থিতও ছিলেন না বা তাঁর হাতে কোনও পুরস্কারও ওঠেনি, এই বিষয়গুলো যেন ক্ষোভ আরও বাড়িয়েছে। ফলে সমাজ মাধ্যমে শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক। কেউ বলছেন, জিতুর সিদ্ধান্ত সাহসী এবং মানবিক। আবার কেউ মনে করছেন, আবেগের বশে তিনি একটু বাড়াবাড়িই করে ফেলেছেন। ইচ্ছে করে কি দিতিপ্রিয়াকে কোণঠাসা করা হল, নাকি পরিস্থিতির চাপেই এমন মন্তব্য বেরিয়ে এল? পর্দার আর্য-অপর্ণার গল্প যেখানে নতুন মোড় নিচ্ছে, সেখানে বাস্তবের এই টানাপোড়েন যেন ধারাবাহিকের গল্পকেও ছাপিয়ে যাচ্ছে। কোনটা ঠিক, কোনটা ভুল, সেটা বিচার সময়ই করবে।
