রাতারাতি শহরের আলোচনার কেন্দ্রে চলে এসেছেন গায়িকা লগ্নজিতা চক্রবর্তী। ঢাকুরিয়ার ছোট্ট গলিতে তাঁর বাড়ি ঘিরে সংবাদমাধ্যমের ভিড়, ফোনের পর ফোন, সাক্ষাৎকারের অনুরোধ। তবু ক্লান্তি উপেক্ষা করেই সব প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন শিল্পী। তাঁর কথায়, তারকা কি না জানেন না, তবে একটি ঘটনার জেরে জাতীয় স্তরের সংবাদমাধ্যমও এখন তাঁর ঠিকানা চেনে। পরিচিত পাড়ায় যাঁরা তাঁকে আগে চিনতেন না, তাঁরাও আজ এক ডাকে নাম জানছেন।
স্কুলের এক অনুষ্ঠানে ‘জাগো মা’ গান গাওয়ার পর আচমকা বিপত্তি। সম্মাননা নেওয়ার পর ফের গান শুরু করেছিলেন লগ্নজিতা। গান শেষ হতেই স্কুলমালিক মেহবুব মল্লিক মঞ্চে উঠে উত্তেজিত হয়ে পড়েন এবং প্রায় হাত তুলতে উদ্যত হন। উপস্থিত শিক্ষক ও অভিভাবকেরাই তাঁকে ধরে নামান এবং স্কুল চত্বর থেকে বের করে দেন। হতবাক শিল্পী নিজেকে সামলে মঞ্চ ছাড়েন এবং পরে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সেই ঘটনার পর থেকেই আলোচনার ঢেউ।
পরিস্থিতি সামলাতে গিয়ে পরিবারকেও সময় দিতে পারেননি তিনি। মা বাবা শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে স্বাভাবিক কথাবার্তা পর্যন্ত হয়নি। স্বামী সাত্যকি বেঙ্গালুরুতে থাকলেও তিনি জানেন, তাঁর স্ত্রী নিজের লড়াই নিজেই লড়তে পারেন। লগ্নজিতার কথায়, তিনি বিবাহিত হলেও নিজের অভিযোগ নিজেই লিখতে জানেন এবং কারও হয়ে কথা বলার প্রয়োজন নেই। এই আত্মবিশ্বাসই তাঁকে শক্ত রাখছে।
ভয় পেয়েছিলেন কি না সেই প্রশ্নে লগ্নজিতার উত্তর আলাদা। তিনি বলেন, ভয় পান রেওয়াজে ফাঁকি দিলে, কাছের মানুষ অসুস্থ হলে বা পড়াশোনায় মন না বসলে। মঞ্চে ওই ঘটনার দিন ভয় নয় বরং কষ্টই পেয়েছিলেন তিনি। তাঁর মতে, এমন বাংলা তিনি আগে দেখেননি এবং ভাবেনওনি দেখতে হবে। যা ঘটেছে তা ঠিক হয়নি এবং হওয়া উচিতও ছিল না।
আরও পড়ুনঃ প্রেমের গুঞ্জনের মাঝেই পর্দায় ফিরছে জনপ্রিয় জুটি রোহান ভট্টাচার্য ও অঙ্গনা রায়, কোথায় দেখা যাবে তাঁদের
সব বিতর্কের মাঝেই থামছেন না লগ্নজিতা। আগামী আরামবাগের অনুষ্ঠানে তিনি মঞ্চে উঠবেন এবং সেদিনও তাঁর সপ্তম গান হবে ‘জাগো মা’। পুলিশের উপর ভরসা রেখে তিনি চান অভিযুক্ত শাস্তি পাক। সহকর্মীদের সমর্থনে তিনি আপ্লুত। আত্মবিশ্বাসী কণ্ঠে বলছেন, আশা করছেন সেদিন কোনও অশান্তি ছাড়াই অনুষ্ঠান শেষ করে শান্তিতে বাড়ি ফিরতে পারবেন।
