তাঁদের নিয়ে সমালোচনায় যেন আর নতুন কিছু নেই। যেমন পোস্টই করুন না কেন, সমাজ মাধ্যমে প্রশংসার থেকে যেন কটাক্ষই বেশি জোটে কপালে! হ্যাঁ, কথা হচ্ছে অভিনেত্রী ‘শ্রীময়ী চট্টরাজ’ (Sreemoyee Chattoraj) আর অভিনেতা ও বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিকের (Kanchan Mullick)। মেয়ে কৃষভিকে (Krishvi) নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলা সমালোচনা, কটাক্ষ আর ব্যক্তিগত আক্রমণের বিরুদ্ধে একেবারে স্পষ্ট ও অকপট কণ্ঠে নিজেদের অবস্থান জানালেন তাঁরা! জনপ্রিয়তার দায়, বিশ্বাস আর লড়াইয়ের গল্পে উঠে এলো তাঁদের জীবনের না বলা অধ্যায়।
এদিন কাঞ্চন বলেন, “এইসবের মধ্যে একটা জিনিস আমি বুঝে গেছি যে, ভয় পেলে চলবে না। আমায় বাঁচতে হবে আর তাঁর জন্য এইসব সহ্য করতেই হবে। জনপ্রিয়তা তো আমিই একদিন চেয়েছিলাম, তাহলে এইসব হলেও পিছিয়ে আসা বা নিজেকে গুটিয়ে নেওয়াটা অন্যায়। আজকের যুগে চুপচাপ থাকা বা কাউকে কষ্ট না দিয়ে কথা বলাটাকে মানুষ দুর্বলতা মনে করে, কেউ আমি যে বলতে পারি বা সেই ক্ষমতা আছে সেটা মানুষ ভুলে যায়। আমি ঈশ্বরে বিশ্বাসী, তাই কর্ম করে যায় আর ফলের আশা রাখি না!” এই কথার রেশ টেনেই শ্রীময়ী বলেন, “অযথা সৌজন্যবোধ! কথায় আছে না, নরম মাটি মানুষ বেশি আঁচড়ায়।
এটা আমি নিজের জীবন দিয়ে বুঝেছি! ২০২১ সালে আমার জীবনের মোড় ঘুরে গেছে পুরোপুরি। বছরের শুরুতে অত এটা হিট চরিত্রে অভিনয়, ধারাবাহিকের জন্য সেরা পুরস্কার আর তারপর নোংরা একটা ভিকটিম কার্ড খেলা হলো আমায় আর কাঞ্চনকে নিয়ে। একজন অতি নিম্ন অপরাধী থেকেও নিচে নামিয়ে দেওয়া হলো আমাকে। বাস্তব জীবনেও আমি খলনায়িকা হয়ে গেলাম, তারপর রাতারাতি আমার কাজ চলে গেল। আমার কাছে হাত পেতে কাজ চেয়েছি, তবুও কেউ কাজ দেয়নি তখন। কাঞ্চন পাশে ছিল, ওই বুঝিয়েছিল যে সময় একদিন পল্টাবেই।”
শ্রীময়ী আরও বলেন, “একটা সময় আমিও আঘাত পেতাম সমালোচনায়, তবে যেদিন থেকে বুঝেছি যে ঈশ্বর আমায় সৃষ্টি করেছে তাই অন্য কেউ আমায় ধ্বংস করতে পারবে না! আমরা পাবলিক ফিগার ঠিকই, কিন্তু আমাদের ব্যাক্তিগত জীবনে ঢুকে অযাচিত মন্তব্য করার অধিকার নেই! যাঁরা এসব বলে, তারা একটা শিয়াল! এদের রোজনামচা হচ্ছে, জল আনতে গিয়ে চারটে লোকের সঙ্গে ঝগড়া আর বাড়ি ফিরে অন্যদের সমাজ মাধ্যমে কটাক্ষ। এদের তো কেউ চেনেই না! কৃষভিকে কাঞ্চনের মতো দেখতে, আমাদের সন্তান তো আমাদের সহবাসের ফলেই এসেছে।
তাকে আমাদের মতোই দেখতে হবে, এটাই তো স্বাভাবিক! এছাড়াও একজন বলেছেন, আমাদের মেয়ের রেট কত! আমার কথা হচ্ছে, আমার মেয়ের এক রাতের রেট বোঝার ক্ষমতা এখনও করোর হয়নি আর ওর বাবা-মা এখনও বেঁচে আছে তাই ওর রোজগার করার প্রশ্নই ওঠে না! যে বলেছে এই কথা, আগে তার মায়ের রেটটা আমায় জানালে ভালো হতো! যে বা যারা এগুলো বলেন, এরপর থেকে আপনার স্ত্রী, সন্তান বা মায়ের রেট এবং কোথায় কোথায় এক রাতের জন্য পাঠিয়েছেন একটু লিখে পাঠাবেন তো! এক কথায়, এরা হচ্ছে সেইসব সৃষ্টি, যাদের পাঠিয়ে ভগবান নিজেই অনুশোচনায় আছেন!”
আরও পড়ুনঃ “কানে কম শুনতে হয়, অনেক কিছু দেখেও না দেখার মতো করে থাকতে হয়” তাপস পাল পত্নী নন্দিনীর এই মন্তব্যের আড়ালেই কি প্রয়াত অভিনেতার অজানা কষ্ট লুকিয়ে রয়েছে?
শেষে ক্ষোভ উগড়ে শ্রীময়ী হুশিয়ারি দেন, “কারোর যদি কিছু বলার থাকে তো আমার সামনে এসে বলবেন। তখন আমি মানবো না যে, কোন বিধায়ক বা অভিনেতার স্ত্রী। একজন মা হয়েই থাপ্পর মেরে মুখ ভেঙে দেব! পেছনে মন্তব্য করে কী লাভ? বুকের পাটা রাখ, সামনে এসে খেল! লুকিয়ে লুকিয়ে মহিলাদের মতো ঘিরে চুড়ি পরে বসে কিছু করতে পারবে কি?” প্রশ্ন উঠছে, মতপ্রকাশের স্বাধীনতার সীমা ঠিক কোথায় শেষ হয় আর ব্যক্তিগত জীবনে হস্তক্ষেপ কোথা থেকে শুরু হয়? নীরব থাকা কি সত্যিই দুর্বলতা, নাকি সব সময় জবাব দেওয়াই একমাত্র পথ?
