বাংলা টেলিভিশনের পর্দায় এখন অনেক নতুন নতুন ধারাবাহিক আসছে এবং যাচ্ছে। স্টার জলসা এবং জি বাংলার ক্ষেত্রে তো এই সংখ্যা আরও বেড়ে গেছে। এই যেমন জি বাংলার পর্দায় সম্প্রতি বন্ধ হয়ে গেল ধারাবাহিক সোহাগ জল। দীর্ঘদিন ধরেই নিম্নমুখী ছিল এই ধারাবাহিকের টিআরপি। বন্ধ হওয়ার গুঞ্জনও চলছিল অনেকদিন ধরেই। অবশেষে বন্ধ হয়ে গেল। আর এই ধারাবাহিকের জায়গায় শুরু হল নতুন ধারাবাহিক “কার কাছে কই মনের কথা।”
সোহাগ জল ধারাবাহিকে নায়ক-নায়িকা চরিত্র ছাড়াও নজর কেড়ে ছিল আরও বেশ কিছু চরিত্র। আর তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলো ভিলেন সাম্যর বউয়ের চরিত্রটি। স্বতঃস্ফূর্ত অভিনয়ে দর্শকদের নজর কেড়ে নিয়েছিলেন তিনি। সম্প্রতি নিজের জীবন নিয়ে অকপট হলেন অভিনেত্রী অস্মিতা মুখার্জি।
আজ সফল অভিনেত্রী হলেও জীবনে একটা সময়ে ভীষণ কঠিন অবস্থা পার করেছেন তিনি। মা, দাদু, ঠাকুমা, পিসির ছত্রছাওয়ায় বাবাকে ছাড়াই নিজের অভিনয়ে জীবনে পা রেখেছিলেন তিনি। বলা যায় অভিনয়ের এই পেশাকে বেছে নিতে ছোট থেকেই স্ট্রাগল করেছেন তিনি। থিয়েটারের মঞ্চেই তাঁর অভিনয়ের হাতেখড়ি। বাড়ির সবথেকে আদরের মেয়েটাকে অভিনয়ের প্রথম পাঠ দিয়েছিলেন তাঁর ঠাকুমা। যদিও নিজের ঠাকুমাকে বড়মা বলেই ডাকেন তিনি।
বিয়ের আগে থিয়েটার যাত্রাপালায় অভিনয় করতেন তাঁর ঠাকুমা। আর অভিনয়ের প্রতি নিজের সেই প্রেম নিজের নাতনির মধ্যেও সঞ্চারিত করেছিলেন। আর তাই ক্লাস থ্রি থেকেই থিয়েটারের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েন অভিনেত্রী অস্মিতা মুখার্জি। যদি প্রথম দিকে তাঁর ঠাকুরদা অর্থাৎ বড় বাবা অভিনেত্রীর নিজের বাবা কাররই সাপোর্ট পাননি তিনি। শুধুমাত্র তাঁর সহায় ছিলেন তাঁর বড়মা।
পড়াশোনা ভালোভাবে করতেই হবে এটাই ছিল তার বড় বাবার আদেশ। যদিও পরবর্তীতে তাঁর বাড়ির সবাই তাঁর অভিনয় জীবনটাকে মেনে নিলেও একেবারেই মেনে নিতে পারেননি অভিনেত্রীর বাবা বলে জানিয়েছেন অভিনেত্রী। দূরত্ব বাড়ে বাবার সঙ্গে। বড় বাবার অর্থনৈতিক সাহায্য এবং বড় মার দুর্নিবার সাপোর্টের জন্য নিজের মাকে নিয়ে আলাদা থাকতে শুরু করেন অভিনেত্রী।
মেয়ের জন্য স্ত্রীর সঙ্গে এই দূরত্ব মেনে নিতে পারেননি অভিনেত্রীর বাবা। একটা সময় প্রতিনিয়ত বাড়িতে লেগে থাকত অশান্তি। আর সেই জন্যই তাদের দুজন কি আলাদা থাকার নির্দেশ দেন অভিনেত্রীর বড় বাবা। যদিও এখন তাঁর বাবা তাঁর কাছে ফিরে আসতে চাইলেও মেনে নিতে পারেন না অভিনেত্রী। ভুলতে পারেন না সেই দিনগুলো।
তিনি জানেন পরিবারের সবার জন্য এমনকি তাঁর বাবার জন্যও তাঁকে কর্তব্য করতে হবে। কিন্তু নিজের প্রতি বাবার সেই অবিচারের দিনগুলি ভুলতে পারেন না তিনি। আর তাই অকপটে বলেন আমার বাবা থেকেও নেই। আজও তিনি ভুলতে পারেন না তাঁর এবং তাঁর মায়ের সেই কঠিন জীবন সংগ্রামের দিনগুলো। বর্তমানে নিজের মায়ের সঙ্গে দিব্য আছেন অস্মিতা। বড় মা, বড় বাবা, পিসি এমনকি মাঝেমধ্যে তাঁর বাবাও আসেন তাঁদের কাছে। তাঁর মাও যান নিজের শ্বশুরবাড়িতে। তবে অস্মিতার যাওয়াটা অনেকটাই কমে গেছে। অভিনয় সেই সঙ্গে মায়ের ক্লাউড কিচেন সবকিছু নিয়ে ব্যস্ততম জীবন কাটছে অভিনেত্রীর।