একটা সময় বাংলা ধারাবাহিক মানেই ছিল আবেগ, সম্পর্কের টানাপোড়েন আর বাস্তবতার ছোঁয়া। কিন্তু এখন? এখন তো গল্পের নামে যা চলছে, তাতে দর্শকরাই বিরক্ত হয়ে উঠেছেন। জি বাংলার “কোন গোপনে মন ভেসেছে” (Kon Gopone Mon Bheseche) যেন এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ। দিন দিন সিরিয়ালটি এতটাই অবাস্তব আর নোংরামোর দিকে এগোচ্ছে যে অনেকেই বলছেন, “এবার এসব বন্ধ করুন!” গল্পের মোড় এখন এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে দর্শকরাই বুঝতে পারছেন না, এটা সিরিয়াল নাকি কোনও আজগুবি কন্টেন্ট!
একে অপরের বিরুদ্ধে চক্রান্ত, বিশ্বাসঘাতকতা, প্রতিশোধ, অবাস্তব সম্পর্কের জটিলতা – সবকিছুর এতটাই ওভারডোজ দেওয়া হচ্ছে যে সাধারণ দর্শকরাও বিরক্ত। একটা বিয়ের দৃশ্য মানেই নতুন কোনও কেলেঙ্কারি! একটা সম্পর্ক একটু গভীর হওয়ার আগেই বেরিয়ে আসছে নতুন প্রেম, নতুন প্রতারণা! একসময় যারা ছিলেন দুই সতীন, তারা এখন পরিণত হয়েছেন দুই জায়েতে! হ্যাঁ, ঠিকই শুনেছেন। সিরিয়ালের গল্প এমন বাঁক নিয়েছে যে দর্শকরাও ভাবছেন, এ কী হচ্ছে!

শ্যামলী যাকে বিয়ে করতে চলেছে, সেই চন্দ্রাশীষের ভাই ইন্দ্রাশীষের সঙ্গেই এবার অনন্যার বিয়ের ঠিক হয়ে গেছে। একদম নাটকীয় মোড়! শুধু এখানেই শেষ নয়। শ্যামলীর বিয়েতে ক্যাটারিংয়ের দায়িত্ব পেয়েছে অনিকেত মল্লিকের দ্য গ্রেট বেঙ্গল ক্যাটারার! অর্থাৎ, অনিকেত তার প্রাক্তন ও বর্তমান দুই স্ত্রীর বিয়ের আয়োজনে ব্যস্ত! তার সামনে মণ্ডপে বসে শ্যামলী নতুন জীবনে পা রাখবে, অনন্যাও নতুন সম্পর্কে জড়াবে, অথচ সে শুধু দাঁড়িয়ে দেখবে।
আরও পড়ুনঃ নতুন ধারাবাহিকে, নতুন চরিত্রে ফিরেছেন নিম ফুলের মধুর কৃষ্ণা! বাবুর মাকে দেখা যাবে কোথায়?
শুধু তাই নয়, সিরিয়ালের ভেতরে ভেতরে এমন সব জটিল সমীকরণ ঢোকানো হচ্ছে, যা বাস্তবে কল্পনাও করা যায় না। একটা বিয়ের আসরেই তিন-চারটা সম্পর্কের গণ্ডগোল চলে আসছে। কখনও প্রেমিকা নিজের প্রাক্তনের বিয়েতে উপস্থিত হয়ে নাটক করছে, তো কখনও দাদা-বোনের সম্পর্ক মুহূর্তে বদলে গিয়ে অন্য কোনও ত্রিভুজ প্রেমে পরিণত হচ্ছে। দর্শকরা একদিকে অবাক, অন্যদিকে হাসতে হাসতে বেহাল! এতদিন শ্যামলী-অনন্যার সম্পর্ক ছিল প্রতিদ্বন্দ্বিতার, এখন তারা এক পরিবার হয়ে যাচ্ছে!
কিছু দর্শকরা বলছেন, “এত নোংরামো আমরা আর সহ্য করতে পারছি না। বাংলা সিরিয়ালের মান এত নিচে নামিয়ে আনা হচ্ছে যে ভবিষ্যতে আর কেউ সিরিয়াল দেখতে চাইবে না।” অনেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরাসরি এই সিরিয়াল বন্ধের দাবি তুলেছেন। কেউ লিখেছেন, “এগুলো সিরিয়াল না, জাস্ট একটা জগাখিচুড়ি! এটা দেখার চেয়ে টিভিটাই বন্ধ করে দেওয়া ভালো।” এখন প্রশ্ন হলো, ধৈর্যেরও একটা সীমা আছে? নাকি যতদিন গালি দিয়ে হলেও মানুষ দেখছে, ততদিন এই অবাস্তব, নিম্নমানের নাটকীয়তা চলতেই থাকবে?