জয়েন গ্রুপ

বাংলা সিরিয়াল

এই মুহূর্তে

বুকফাটা হাহাকার থেকে অগ্নিকন্যা! এক মুহূর্তে ভাঙন, পরের মুহূর্তে প্রতি’শোধের হুং’কার নিশার! ‘জোয়ার ভাঁটা’র গত পর্বে শ্রুতি দাসের অভিনয়ে নেটপাড়ায় প্রশংসার ঝড়!

গত পর্বে জি বাংলার ‘জোয়ার ভাঁটা’ (Jowar Bhanta) যেন একেবারে অন্য মাত্রা পেল নিশার উপস্থিতিতে! পর্দায় যা ঘটেছে, তার চেয়েও বেশি ছাপ ফেলেছে শ্রুতি দাসের (Shruti Das) অভিনয়। একের পর এক দৃশ্যে তাঁর অভিব্যক্তির ওঠানামা দর্শকদের স্থির হয়ে বসতে বাধ্য করেছে। কোনও বড় সংলাপ ছাড়াই চোখ, মুখ আর শরীরী ভাষায় যে আবেগের বিস্ফোরণ তিনি দেখিয়েছেন, সেটাই যেন হয়ে উঠছে প্রতিটি পর্বের আসল শক্তি! নেটপাড়ায় এই ধারাবাহিক নিয়ে যে এত আলোচনা, তার কারণ গল্প নয়, নিশার সেই নীরব যন্ত্রণার মুহূর্তগুলো!

গত পর্বে ঋষির সামনে নিজেকে সামলে রাখা নিশার দৃশ্যগুলো বিশেষভাবে দাগ কেটে গেছে দর্শকদের মনে। বাবার নাম উঠতেই ভিতরে ভিতরে ভেঙে পড়া, অথচ মুখে একচিলতে শান্ত ভাব, এই দ্বন্দ্বটাই শ্রুতি দাস এত নিখুঁতভাবে ধরেছেন যে দর্শক নিশার মনের ভেতর ঢুকে পড়তে পারেন। আসানসোল, ভিত পুজো কিংবা মেগা সিটির পরিকল্পনা নিয়ে কথার আড়ালে বাবার মৃ’ত্যুর যে ক্ষতটা বারবার চেপে ধরছিল তাঁকে, সেটা বোঝাতে কোনও বাড়তি নাটক লাগেনি। ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে নিঃশব্দে বুঝিয়ে দেওয়ার এই ক্ষমতাই তাঁকে আলাদা করে দিয়েছে অনেকের থেকে।

অন্যদিকে, উজির সঙ্গে নিশার সম্পর্কের টানাপোড়েন ছিল গত পর্বের আবেগী মেরুদণ্ড। এক মুহূর্তে বোনের ওপর প্রচণ্ড রাগ, পরক্ষণেই তাকে আঁকড়ে ধরার তীব্র প্রয়োজন, এই চোখের পলকে আবেগের বদল যেন আরও বেশি প্রাসঙ্গিকতা বাড়িয়ে দিয়েছে গল্পের। খুব কম অভিনেত্রীই এমন স্বাভাবিকভাবে ‘ইমোশনাল ট্রানজিশন’ দেখাতে পারেন বলছেন দর্শকরা। দর্শক হিসেবে, “মনে হয়নি এটা অভিনয়, বরং যেন বাস্তব কোনও মানুষের ভেঙে পড়া আর নিজেকে আবার শক্ত করার চেষ্টা দেখছি।”

এই পর্বে নিশার চরিত্রে প্রতিশোধের আগুন নতুন করে জ্বলে ওঠার মুহূর্তগুলোও আলাদা করে বলার অপেক্ষা রাখে না। কান্না থামিয়ে হঠাৎ দৃঢ় হয়ে ওঠা, চোখে জমে থাকা কঠিন সিদ্ধান্তের ছায়ার পরিবর্তনটা শ্রুতি দাস এমনভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন যে চরিত্রটি আগের থেকে যেন আরও গভীর হয়েছে। এখানে তিনি শুধু রাগী বা ভাঙা মেয়ে নন, বরং একজন লড়াকু মানুষ, যে নিজের যন্ত্রণা থেকেই শক্তি খুঁজে নিচ্ছেন। দর্শকদের মতে, এই স্তরগুলোই নিশাকে ‘একমাত্রিক’ হতে দেয়নি।

সব মিলিয়ে “গত কয়েকটা পর্বটা আসলে শ্রুতি দাসের শো-স্টপার পারফরম্যান্সের জন্যই মনে থাকবে” এমনটাই মত নিয়মিত দর্শকদের। গল্পে রহস্য আছে, ভবিষ্যতে বড় মোড়ের ইঙ্গিতও মিলেছে, কিন্তু দর্শকের মনে যে দাগটা থেকে গেছে সেটা নিশার অভিনয়ের জাদু। এমন স্বাভাবিক, সংযত অথচ গভীর অভিনয় দেখতে দেখতে সত্যিই মাথা নত হয়ে আসে। পরবর্তী পর্বে গল্প কোন দিকে যাবে তা নিয়ে কৌতূহল থাকছেই, তবে এটুকু বলা যায় যে নিশার এই আগুনঝরা উপস্থিতি থাকলে ‘জোয়ার ভাঁটা’ দেখার অপেক্ষা আরও বাড়বে।

Piya Chanda

                 

You cannot copy content of this page