আজকাল বাংলা সিরিয়ালের দুনিয়ায় একের পর এক নতুন নতুন সিরিয়াল আসছে এবং সেই সঙ্গে নতুন নতুন গল্প রোজ দেখতে পাচ্ছে বাঙালি দর্শকরা টেলিভিশনের পর্দায়। একটা সময় ছিল যখন ধারাবাহিক বলতেই দর্শকরা বিভিন্ন ধরনের সামাজিক বিষয়বস্তুকে চিনত।
এখন সেখান থেকে ভাবনা চিন্তা অনেক পাল্টেছে ধারাবাহিক নির্মাতাদের। তাই এখন আর শুধু সামাজিক বিষয়বস্তু কি উপস্থাপিত করা নয় বরং এমন অনেক নিত্য নতুন বিষয় স্থান পাচ্ছে যে আগে কখনো ভাবেনি মানুষ। এমনকি শাশুড়ি বৌমার ঝামেলা সাংসারিক অশান্তি এগুলির বাইরে বেরিয়ে মেয়েদের স্বপ্ন বাস্তবায়িত করা নারী কেন্দ্রিক চরিত্রে নারীকে সম্মানের সঙ্গে উপস্থাপিত করা দর্শকদের সামনে এই বিষয়গুলি অনেক বেশি উঠে আসছে।
আসলে বাংলা সিরিয়াল বলতেই আমরা বুঝি সেগুলি নারীকেন্দ্রিক চরিত্রই হবে। এই যেমন ধরুন মাধবীলতা বা সাহেবের চিঠি বা নবাব নন্দিনী। ধারাবাহিকে মুখ্য চরিত্রগুলি আগে প্রতিষ্ঠিত করা হয় এবং তারপর তাদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য গুলি আস্তে আস্তে প্রকাশ পায়।
কিন্তু এই দিক থেকে দেখতে গেলে একটা সময় ছিল বাংলা সিরিয়ালে বিয়ে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ হয়েছিল যা এখনো একইভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে রয়েছে। উপরে যে ধারাবাহিক গুলির কথা আমরা তুলে ধরলাম প্রত্যেকটাই সম্প্রতি শুরু হয়েছে এবং সবগুলোর ক্ষেত্রে একটা সাদৃশ্য খুঁজে পেয়েছে দর্শকরা।
এ ধারাবাহিক গুলোর মধ্যে একটাই মিল আর সেটা হল মুখ্য চরিত্র অর্থাৎ মুখ্য চরিত্রে যে নারীরা রয়েছে তারা সমস্ত কাজবাজ ছেড়ে দিয়ে শুধুমাত্র বিয়ে করার কথা ভাবে এবং বিয়ে করার পর তাদের একটাই লক্ষ্য হয় শ্বশুরবাড়িকে ইমপ্রেস করা। কেরিয়ার জলাঞ্জলি দিয়ে মন প্রাণ দিয়ে তারা সেই কাজ করে যায়।
View this post on Instagram
মাধবীলতা, নবাব নন্দিনী কিংবা সাহেবের চিঠি এই তিন ধারাবাহিকের ক্ষেত্রেই আমরা দেখলাম নতুন শুরু হয়েছে আর নতুন শুরু হওয়ার পরেই বিয়ে ঢুকিয়ে দেওয়া হলো নায়ক-নায়িকাদের। তাই মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করা নায়িকাদের শ্বশুর বাড়িতে সুখে শান্তিতে সংসার করা ছাড়া আর কোন কাজ নেই এখন।
একমাত্র ব্যতিক্রম হিসেবে লীনা গঙ্গোপাধ্যায় একটি ধারাবাহিককে তুলে ধরেছেন আর সেটা হলো সম্প্রতি শুরু হওয়া এক্কা দোক্কা।
View this post on Instagram
ধারাবাহিকে পোখরাজ এবং রাধিকা দুজনেই ডাক্তারি পড়ছে। মেয়েটি জীবনে একটা বড় স্বপ্ন রয়েছে এবং সেটা সফল না হওয়া পর্যন্ত লীনা গঙ্গোপাধ্যায় বিয়ের বিষয়ে টেনে আনতে চাইছেন না যেটা খুবই ভালো লেগেছে দর্শকদের। রাধিকা অর্থাৎ সোনামণি সাহা এমনিতেই পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী। তারপরে আবার এই ধারাবাহিকে তিনি নিজের শর্তে নিজে জীবনযাপন করছেন বিষয়টা খুবই ভালোভাবে গ্রহণ করেছে দর্শকরা।
এদিকে সাহেবের চিঠি, নবাব নন্দিনী কিংবা মাধবীলতায় যেভাবে নায়ক নায়িকার বিয়ে দিয়ে সিরিয়াল শুরু করা হলো তাতে রেগে গিয়েছে দর্শকরা। মেয়েদের সংসার করা ছাড়া কি আর কোনো ধর্ম-কর্ম নেই? বারবার এই প্রশ্নই তুলতে চাইছে দর্শকরা।