এক সময়ের বেঙ্গল টপার ধারাবাহিক ‘পরিণীতা’ (Parineeta) আজ যেন হারিয়ে ফেলেছে তার মূল শক্তিকে—গল্প বলার ধারাবাহিকতা। যে ধারাবাহিক একাধিক সাব-প্লটের ভারসাম্য বজায় রেখে দর্শকের মন জয় করেছিল, আজ সেখানে একটি ট্র্যাক দেখাতে গিয়ে বাকি সব চরিত্র আর গল্পের স্তর হারিয়ে যাচ্ছে। কলেজের দৃশ্য এলে বাড়ির লোক গায়েব, আবার ন্যাড়াগোয়ালের ট্র্যাক চললে কলেজটাই যেন নেই।
এমন একপাক্ষিক গল্প বলার ধরন, এখন ধারাবাহিকটিকে দর্শকের আগ্রহের তালিকা থেকে ধীরে ধীরে সরিয়ে দিচ্ছে। শুরুতে যেখানে অন্যতম আকর্ষণ ছিল তার সাপোর্টিং কাস্ট—গোপাল, রুকু, বৌদি, দাদা বা বাড়ির অন্যান্য চরিত্রেরা যাদের নিজস্ব উপস্থাপন ছিল স্পষ্ট। কিন্তু সাম্প্রতিক পর্বগুলোতে তাদের উপস্থিতি যেন শুধুই প্রয়োজনের ভিত্তিতে। যারা ধারাবাহিকটি শুরু থেকে দেখে আসছেন, তারা এই ব্যবহারিক চরিত্রায়নকে ইতিমধ্যেই লক্ষ্য করেছেন।
গোপাল-রুকু, বৌদির সংলাপ আর দাদার কাণ্ডকারখানা যেখানে এক সময় প্রাণ জুগিয়েছিল, সেগুলো এখন খণ্ড খণ্ড এবং প্রাসঙ্গিকতা হারাচ্ছে। সবচেয়ে বেশি সমালোচনার মুখে পড়েছে পারুল চরিত্রটি। যে মেয়েটি একসময় ছিল আত্মবিশ্বাসী, যুক্তিনিষ্ঠ ও স্পষ্টবক্তা, আজ তার চরিত্র যেন গতে বাঁধা ধারাবাহিকের শান্ত প্রকৃতির নায়িকাদের ছাঁচে ঢালার চেষ্টা চলছে। রায়ানের সঙ্গে সম্পর্কের কোনও দৃঢ়তা না থাকলেও,
গল্পে বারবার সেই সম্পর্ককে জোর করে টেনে আনার চেষ্টা দর্শকদের বিরক্ত করছে। এর উপরে রায়ানের অকারণ ভুল বোঝাবুঝি এবং শিরীনের প্রতি পক্ষপাতিত্ব তার চরিত্রের গ্রহণযোগ্যতাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করছে। এই সমস্ত বদল ধারাবাহিকটির প্রতি দর্শকের আগ্রহ কমিয়ে দিচ্ছে, যার প্রভাব স্পষ্ট টিআরপি চার্টে। ধারাবাহিকের সেই পুরনো ধারাবাহিকতা হারিয়ে ফেলেছে।
আরও পড়ুনঃ “আমার তরফ থেকে দিতিপ্রিয়ার সঙ্গে আর কোনও ছবিই আসবে না!”— সমালোচনায় ইতি টানলেন জীতু! ট্রোলের মুখে দিতিপ্রিয়ার কথা মাথায় রেখে, কঠিন সিদ্ধান্ত জীতুর!
অন্যদিকে চরিত্রগত গভীরতা ও বাস্তবতাকে হারিয়ে দিয়ে এখন যেন একদিকেই হাঁটছে ‘পরিণীতা’। এখন দর্শকরা প্রশ্ন তুলছেন—এই মোড় ঘোরানো কি সত্যিই প্রয়োজন ছিল? ‘পরিণীতা’ কি তার মৌলিকতা আর ভারসাম্যহীন ট্র্যাকে হারিয়ে ফেলছে নিজস্ব ছন্দ? না কি নির্মাতারা আবার গল্পকে তার মূল কাঠামোয় ফিরিয়ে আনবেন? দর্শকরা অপেক্ষায় আছেন, কিন্তু ধৈর্যের সীমাও অনন্ত নয়।