জি বাংলার ‘পরিণীতা’ (Parineeta) ধারাবাহিকের প্রধান চরিত্র পারুল নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সে কলকাতায় আসে, ঘটনাচকে দেখা হয় নায়ক রায়ানের সঙ্গে। এরপর ভাগ্যদোষের দুজনে বিবাহ হয়ে যায়। দুজন ভিন্ন মরুর দুই মানুষ। তাদের মধ্যে বৈবাহিক সম্পর্ক থাকলে দুজন দুজনকে স্বামী স্ত্রী মনে করে না। রায়ানের জীবন আগে থেকেই উপস্থিতি ছিল শিরীনের। পারুল রায়ানের দ্বন্দ্বের মাঝেই হঠাৎ আবির্ভাব এক অজানা ব্যক্তির, যে রায়ানকে মারতে চায়। কে এই ব্যাক্তি? তার উদ্দেশ্য কি?
আজকে পর্বের শুরুতেই দেখা যায় বসু বাড়িতে সন্ধ্যে বেলায় সবাই চা খাচ্ছেন বসার ঘরে। পারুল সেখানে আসতেই দাদু জিজ্ঞেস করেন রায়ান কোথায়? পারুল জানায় সে জনেনা রায়ান কোথায়, দাদু এতে রেগে গিয়ে বলেন যে রায়ানকে চোখে চোখে রাখার দায়িত্ব ছিল পারুলের তার কি হলো? পারুল বলে রায়ান তাঁকে ইউনিভার্সিটিতে দাঁড়িয়ে সাফ জানিয়ে দিয়েছে যে সে আর পারুলের তত্ত্বাবধানে থাকতে অরাজি, না বাড়িতে না বাইরে সে পারুলের কোনও বাধা মানবে না। দাদু বলেন তাই বলে এভাবে স্ত্রী এর জায়গা তার অধিকার ছেড়ে দিচ্ছে পারুল!

পারুল বলে একজন প্রাপ্তয়স্ক মানুষকে বারবার হুমকি দিয়ে কথা শোনানো যায়না, এমনকি এতোবার এই ঘটনা ঘটেছে যে এখন পারুলকে আত্মসম্মানে লাগছে তাই সে সরে এসেছে। পিসিমণী আর চুপ থাকতে না পেরে বলেন যে শিরীনের সাথে মিশে বারবার রায়ান বিপদে পড়েছে এবার যদি কোনও ক্ষতি হয়ে যায়? পারুল বলে যে সব সময় চোখ খুলে ঘুমায় তাকে আর কতবার জাগিয়ে তোলা যায়! পারুল বলে সে চায় না রায়ানের মানুষিক অশান্তি সৃষ্টি করে পথে আনতে আর রায়ানও বলে দিয়েছে যে শিরীনকে সে ছাড়তে পারবেনা।
এরপর বৌদি পারুলকে মনোজিতের ঘরে চা দিয়ে আসতে বলে, পারুল চা নিয়ে দরজার কাছে পৌঁছাতেই ভেতর থেকে শুনতে পায় মনোজিতের স্ত্রী অনেক রাগারাগি করছেন আর বলছেন, “ওরা তোমাকে সারাজীবন খাটিয়ে মারল কোনদিনও যোগ্য সম্মানটুকু দিল না, আসল কথা তুমি এবাড়ির ছেলে নও! বংশ বলেও তো একটা বিষয় আছে, আর আমার কপাল কি ভেবেছিলাম কি হলো।” পারুল থমকে যায় আর বৌদি এসে পারুলকে সঙ্গে করে নিয়ে যায় চা দিতে হবে না বলে। বৌদি বিষয়টা খোলসা করে বলতে শুরু করে পারুলকে, কেন তার শাশুড়ির এতো রাগ নিজের স্বামীর উপর।
বৌদি বলেন প্রথমত তার শাশুড়ি অত্যন্ত হিংসাপরায়ণ একজন মানুষ। উনি কারোর ভালোই সহ্য করতে পারেন না, এমনকি নিজের ছেলেকেও হিংসা করেন। আর দ্বিতীয়ত হল, বসু বাড়ির দুই ছেলে পরিতোষ ও মনোজিতের স্ত্রী আসলে দুই বোন। ঘটনাচক্র বড় বোনের সঙ্গে বিবাহ স্থির হয় পরিতোষ এর কিন্তু বিয়ের দিনখন ঠিক হতেই হটাৎ করে পাত্রী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে, এমনকি ডাক্তার জবাব দিয়ে দেয়। অজ্ঞতা আশুতোষ বসু বাড়ির বড় ছেলের সঙ্গে মনোজিতের স্ত্রী অর্থাৎ জেঠিমনীর বোনের বিবাহ স্থির করেন।
কিন্তু বিয়ের এক মাস আগেই জেঠিমনী সেরে ওঠেন, আর আগের কথা মতন বড় ছেলের সাথে বিয়ে হয় তার কিন্তু আশুতোষ বসু নিজের কথার দাম রাখতে জানে, তাই ছোট বোনকেও ছোট ছেলে বউ করে আনেন বাড়িতে। বিয়ের পরে কলের নিয়মে সংসার, সন্তান সব হলেও তাঁর শাশুড়ির মনে ওই ক্ষত চিহ্ন আজও রয়ে গেছে যে তাঁর স্বামী এই বাড়ির সন্তান নয়, বরং ড্রাইভার এর ছেলে। সম্পূর্ণ ঘটনা জেনে দুঃখিত হয়ে পড়ে এবং বৌদিকে আশ্বাস দেয় একদিন সে তাদের দুজনের মধ্যে সম্পর্ক ঠিক করে দেবে।
অন্যদিকে তূর্য প্রতিশোধের আগুনে জ্বলছে, আশুতোষের ছবিকে উদ্দেশ্য করে বলে, “যেভাবে আমার দাদুকে অপমান করে চোর অপবাদ দিয়ে চাকরি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিলে। সেই অসহ্য অপমান নিয়ে আমার পরিবারকে বাঁচতে হয়েছে দীর্ঘদিন। এইবার তোমার পালা তোমাকেও সেই যন্ত্রণার মধ্যে দিয়েই যেতে হবে, যার শুরুটা হবে মনোজিতের হাত দিয়ে।” এরপর পারুলের ছবির সামনে দাঁড়িয়ে তূর্য বলে, “আগে বসু বাড়িটাকে শেষ করে দিই তারপর শুধু আমি আর তুমি থাকব।” এরপর পারুলের সাথে প্রেমের স্বপ্ন দেখতে থাকে সে।
অন্যদিকে রায়ান বাড়ি ফিরে এসে দেখে পারুল ফোন হাতে নিয়ে কিছু একটা করছে। রায়ান জানতে চায় সেই ব্যক্তির সাথে আর কোনও কথা হয়েছে কিনা, পারুল বলে তার সাথেই কথা বলছে। রায়ান হাত দিয়ে ফোনটা কেড়ে নিয়ে বলে পারুলকে সে যতটা বোকা ভাবতো সে কিন্তু তা নয়। রায়ান বলে, “জন্তু, তুই তো তলে তলে ভালোই প্রেম করতে শিখেছিস!” পারুলও বলে যতই তাকে অপছন্দ হোক রায়ানের কিন্তু যেই না দেখেছে সে অন্য ছেলের সাথে কথা বলছে, রায়ানের পুরুষত্বে আঘাত লেগেছে। রায়ান বলে এই ভাবনা তার ভুল, ঠিক সেইসময় ওই ব্যাক্তি জানায় পরের দিন ব্লু মুন নামের একটি হোটেলে সাড়ে দশটায় পারুলের সাথে দেখা করতে চায় সে।
আরও পড়ুনঃ কুলদেবতার মন্দিরে মাকে খুঁজে পেল ফুলকি! রাণীমাকে হাতিয়ার করেই জেল থেকে ছাড়া পেল রুদ্র! জমজমাট আজকের পর্ব
ঠিক সেই মতন পারুল রায়ানকে পুলিশ নিয়ে গিয়ে আগে থেকে লুকিয়ে থাকতে বলে। পুলিশ গিয়ে চারিদিক ঘিরে ফেলে, রায়ানের বন্ধুরাও যে যার মতন লুকিয়ে থাকে। কিন্তু তূর্য তো আর আসবে না! সে মনোজকে ফোন করে পারুলের গলা করে বলে তাঁর খুব বড় বিপদ হয়েছে। মনোজ বলে কোথায় আছে সে? পারুল এর গলা করে তূর্য বলে ব্লু মুন হোটেলে একটা ৯৬ নম্বর রুমে, তাড়াতাড়ি এসে আমায় নিয়ে যাও। এবার কি তবে তূর্যর প্ল্যানে পা দিয়ে মিথ্যে মামলায় ফেঁসে যাবে মনোজ? পারুল কি এবারও তূর্যকে ধরতে পারবে না?