জি বাংলার ‘পরিণীতা’ (Parineeta) তে আজকের পর্বের শুরুতেই দেখা যায় ইউনিভার্সিটিতে রবীন্দ্রজয়ন্তী উপলক্ষে ‘রক্তকরবী’ নাটকের নির্দেশনার দায়িত্ব পায় রায়ান। পারুলকে সঙ্গে করে বাড়ি ফিরেই বাবার কাছে যায় সে। পরিতোষ এই খবর শুনে, রায়ানকে বুকে টেনে নেয়। এরপর জানতে চান কোন নাটকের নির্দেশনা করছে? রায়ানের উত্তরে যেন এক টুকরো অতীত ভেসে ওঠে তাঁর বাবার সামনে। এক নিঃশ্বাসে নাটকের সংলাপ বলতে থাকেন তিনি। রায়ান পারুলকে বলে তাঁর বাবা একদিন যাত্রার মঞ্চে অভিনয় করার স্বপ্ন দেখেছিলেন, কিন্তু পরিবারের দায়িত্ব নিতে গিয়ে সেই স্বপ্ন ভুলতে হয়েছে তাঁকে।
পারুল মনে মনে কষ্ট পায় রায়ানের বাবার কথা ভেবে, আর বলে রায়ানের মধ্যে দিয়েই উনি নিজের স্বপ্নকে বাঁচবেন। বাবার কাছে রায়ান আরও ভালো করে নাটক করার জন্যে কিছু জরুরী করণীয় জানতে চায়। পরিতোষ বলেন, “একটা ভালো নাটক করতে গেলে শুধু সুন্দর পোশাক বা সাজসজ্জা লাগে না। যেটা লাগে, সেটা হলো এমন কিছু মানুষ যারা মুখস্ত করে নয় বরং চরিত্রগুলোকে আত্মস্থ করতে পারবে। আর বিশেষ করে রক্তকরবী নাটকে নন্দিনীর চরিত্রে যিনি থাকবেন, তাঁকে হতে হবে প্রাণবন্ত ও স্বতঃস্ফূর্ত।”

বাবার মুখে এই কথা শুনতেই রায়ানের চোখ যায় পারুলের দিকে, তাঁর হাসি দেখে কিছুক্ষনের জন্য মুগ্ধ হয়ে যায় সে। এরপর রায়ান আর পারুল চলে যেতেই পরিতোষ বলেন, তিনি যদি ডিরেক্টর হতেন তাহলে পারুলকেই নন্দিনীর চরিত্রে নিতেন। কারণ পারুলের মধ্যে একটা এক্স ফ্যাক্টর আছে। ঘিরে গিয়ে রায়ান নাটকের জন্য চরিত্র অঙ্কন শুরু করে দেয়, ঠিক এমন সময় শিরীনের ফোন আসে। শিরীন জানায় তাঁকে প্রধান চরিত্রের অভিনয় করতে দিতে হবে। কিন্তু রায়ান স্পষ্ট করে জানিয়ে দেয় সে কোন পক্ষপাতিত্ব করবে না।
নিজের প্রতিভার জোরে যদি শিরীন নিজেকে প্রমাণ করতে পারে তাহলে সে ওই চরিত্রটা পাবে। এরপর পারুল রায়ানের জন্য কফি বানিয়ে এনে দেখে নাটক নিয়ে মেতে রয়েছে সে। একটা সংলাপ এর মাঝখানে বারবার আটকে যাচ্ছে সে, এই দেখে পারুল সেই সংলাপ বলতে শুরু করে। এরপর দুজনে একসাথে কিশোর আর নন্দিনীর সংলাপগুলো বলতে থাকে। এক পর্যায় রায়ানের ঘোর কাটতেই সে পারুলকে বলে যতই কফি বানিয়ে দিক, যোগ্যতা ছাড়া প্রধান চরিত্র সে কেউকে দেবে না।
পারুল রায়ানকে জানতে চায় তাঁর স্বপ্ন কি? রায়ান বলে বরাবরই সে থিয়েটার করতে চেয়েছে, ক্যামেরার সামনে ও ক্যামেরার পেছনে কাজ করতে তাঁর খুব ভালো লাগে। প্রধানত অভিনেতা হতে চায় সে। এই কথা বলেই খানিকটা হতাশ হয়ে সে জানায়, বাবার মতো একদিন তাঁকেও নিজের স্বপ্ন ত্যাগ করতে হবে। পারুল বলে সে যদি সত্যিই অভিনেতা হতে চায়, তাহলে লড়াইটা চালিয়ে যেতে হবে আর পথে কোনও বাধা আসলে পারুল তাঁর পাশে থাকবে।
অন্যদিকে নেড়া গোয়ালে রুক্মিণী মালতীর বাড়ি গিয়ে চঞ্চলকে পুলিশের ভয় দেখিয়ে মালতীকে আবার পড়াশোনায় ফেরাতে চায় সে, কিন্তু চঞ্চল হুমকি দেয় যে রুক্মিণীর সংসার ভেঙে দেবে সে আর এই ভয়তেই মালতী রুক্মিণীকে চলে যেতে বলে। রুক্মিণী মালতীকে বলে যে নিজের হয়ে গলার স্বর বের করতে পারে না, নিজের পাশে দাঁড়াতে পারে না, তাঁর পাশে কেউই দাঁড়াতে পারবে না। এই বলে সে নিজের ঘরে এসে একরাশ নিরাশা নিয়ে বসে থাকতে দেখে গোপাল তাঁকে সাহস যোগায়।
আরও পড়ুনঃ দীর্ঘ সময় ধরে চলল অস্ত্রপচার, পবনদীপের জীবন ঘিরে আশঙ্কা! কাঁপা কণ্ঠে প্রেমিকা অরুণিতা জানালেন, ‘মৃ’ত্যুর সঙ্গে লড়ছে ও!’
ঠিক এমন সময়ে ভাদু আর গোপালের মা এসে উপস্থিত হন, আর রুক্মিণীকে বলেন যে নিজের সংসার সামলাতে অক্ষম হয়ে অন্যের সংসার ভাঙতে যায় কি করে? এখন মালতীকে যে শারীরিক নির্যাতন সহ্য করতে হচ্ছে এর দায় কে নেবে? এরপর রুক্মিণী কাঁদতে কাঁদতে বেরিয়ে যায়। পরদিন ইউনিভার্সিটিতে অডিশনে কেউ ঠিকঠাক নন্দিনীর চরিত্রে অভিনয় করতে পারছে না। এমন সময় রায়ান জানায় পারুলই হবে নন্দিনী, কিন্তু সবাই শুনে হেসে ওঠে পারুলের কথা বলার ধরন মাথায় রেখে। এরপর কি হবে জানতে চোখ রাখুন আগামী পর্বে।