বাংলার টেলিভিশন দুনিয়ায় সুদীপা চ্যাটার্জি (Sudipa Chatterjee) শুধুমাত্র এক জন সঞ্চালক নন, বরং এক বিশেষ অধ্যায়ের নাম। ছোটপর্দায় তিনি তাঁর অনবদ্য উপস্থিতি, সাবলীল উপস্থাপনা এবং স্বতঃস্ফূর্ত ব্যক্তিত্বের জন্য দর্শকদের মন জয় করে নিয়েছেন। তবে শুধুমাত্র সঞ্চালনা নয়, তিনি অভিনয় জগতেও ছিলেন সমান দক্ষ। টেলিভিশন ধারাবাহিক থেকে সিনেমা— সব মাধ্যমেই তাঁর প্রতিভার ছাপ স্পষ্ট। তবুও, তাঁর জনপ্রিয়তার আসল সূত্রপাত ঘটে রান্নার শোয়ের মাধ্যমে, যা আজ ঘরে ঘরে পৌঁছে গেছে।
‘জি বাংলার রান্নাঘর’ (Zee Banglar Rannaghar) নামক জনপ্রিয় কুকিং শো-র হাত ধরেই তিনি বাঙালির প্রিয় মুখ হয়ে ওঠেন। দীর্ঘ ১৭ বছর এই শোয়ের সাথে যুক্ত ছিলেন তিনি। শুধুমাত্র রান্নাবান্নার পর্ব নয়, এই শোয়ের মাধ্যমে বাঙালির রান্নার প্রতি ভালোবাসাকে এক অন্য মাত্রায় নিয়ে গিয়েছেন সুদীপা। হাসিখুশি সঞ্চালনার মাধ্যমে প্রতিটি এপিসোডকে করে তুলেছেন প্রাণবন্ত। সাধারণ গৃহিণী থেকে সেলিব্রিটি শেফ— সকলেই এই শোয়ের অংশ হয়েছেন, আর সুদীপার সাবলীল উপস্থাপনায় তা হয়ে উঠেছে আরও আকর্ষণীয়।

সম্প্রতিক জি বাংলা রান্নাঘর নতুনভাবে শুরু হয়েছে সাময়িক বিরতির পর এইবার অবশ্য সুদীপা এর অংশ নন। বর্তমানে এই শো সঞ্চালনা করছেন অভিনেত্রী কনীনিকা বন্দোপাধ্যায় (Koneenica Banerjee) । এই প্রসঙ্গে অভিনেত্রী সুদীপার মতামত জানতে যাওয়া হলে তিনি একসময় কান্নায় ভেঙে পড়েন। তবে বেশিদিন তিনি রান্নাঘর ছেড়ে থাকতে পারেননি, তাই তৈরি করেছেন “সুদীপার সংসার” নামে এক শো তাঁর ইউটিউব চ্যানেলে যেখানে তিনি নিজেই নিজের কুকিং শো হোস্ট।
তবে এবার তাঁর রান্নাঘরে এক নতুন চমক যোগ হয়েছে, যা তাঁকে নিয়ে গেল অন্য উচ্চতায়। টেলিভিশন জগতের প্রিয় হোস্ট সুদীপার মুকুটে এক নতুন পালক জুড়ল। রান্নার শোয়ের জনপ্রিয়তার নিরিখে তিনি পেলেন এক বিশেষ সম্মান। সুদীপার তৈরি ইউটিউব চ্যানেল এবার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে। আর এই সাফল্যের মূল কারিগর হিসাবে তিনি সকল দর্শক সাবস্ক্রাইবারস ও অনুরাগীরা বলে জানিয়েছেন।
আরও পড়ুনঃ রায় পরিবারে দারুণ খুশির খবর! শুভ-আদৃতের ছেলে হয়েছে, গোটা রায় পরিবারে খুশির আবহাওয়া!
সিলভার প্লে বটন (Silver Play Button) দেওয়া হয়েছে ইউটিউব ইন্ডিয়ার (YouTube India) পক্ষ থেকে ১ লাখ সাবস্ক্রাইবারস এর জন্য। এই সম্মান পাওয়ার পর সুদীপা জানিয়েছেন, রান্না শুধুমাত্র তাঁর জন্য একটি শো নয়, বরং আবেগের বিষয়। তিনি এই শোয়ের প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগ করেন এবং দর্শকদের ভালোবাসাই তাঁকে নতুন করে আবার এই শোয়ের শুরু করতে অনুপ্রাণিত করেছে। তাঁর কথায়, ‘‘এটা শুধুমাত্র আমার নয়, বরং গোটা বাংলার রান্নার সংস্কৃতির জন্য একটি বড় প্রাপ্তি।’’
এখন প্রশ্ন উঠছে, এই বিশেষ স্বীকৃতি ভবিষ্যতে ‘জি বাংলার রান্নাঘর’ বা সুদীপার কেরিয়ারে কী প্রভাব ফেলবে? তবে যা-ই হোক, এটা নিশ্চিত যে এই নতুন অর্জন সুদীপা চ্যাটার্জিকে আরও বড় স্বপ্ন দেখতে সাহায্য করবে। তাঁর অনুরাগীদের কাছে এটি শুধুমাত্র একটি খবর নয়, বরং বাংলার টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রির জন্য এক বড় গর্বের বিষয়!