বিনোদন জগৎ মানেই গ্ল্যামার, আলো ঝলমলে দুনিয়া— অনেকের কাছেই এমনই এক পরাবাস্তব জগৎ। কিন্তু এই রঙিন পর্দার আড়ালে কতখানি অন্ধকার লুকিয়ে আছে, তা মাঝেমধ্যেই উঠে আসে আলোচনায়। বিশেষ করে যখন কোনও অভিনেত্রী সাহস করে সেই বাস্তব কথা প্রকাশ্যে আনেন। সম্প্রতি দক্ষিণী চলচ্চিত্র জগতের একাধিক অভিনেত্রীর বক্তব্যে ফের সামনে এসেছে যৌন হেনস্থা, কুপ্রস্তাব এবং কাস্টিং কাউচ ইস্যু। ঠিক তখনই এই প্রসঙ্গে মুখ খুললেন বাঙালি অভিনেত্রী ঋত্বিকা সেন। তাঁর বক্তব্য ফের চিন্তায় ফেলেছে সমাজের এক বড় অংশকে।
দক্ষিণী ছবিতে কাজ করেছেন ঋত্বিকা। তাই প্রশ্ন উঠেছিল, তিনিও কি তেমন কোনও অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছেন? উত্তরে অভিনেত্রী জানালেন, “আমার সরাসরি কোনও খারাপ অভিজ্ঞতা হয়নি। তবে আমরা সকলেই জানি, কাস্টিং কাউচ তো সব ইন্ডাস্ট্রিতেই রয়েছে।” শুধু বিনোদন নয়, অন্যান্য পেশাতেও এমন পরিস্থিতি দেখা যায় বলে দাবি তাঁর। একাধিক বান্ধবীর উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, তথ্য প্রযুক্তি সংস্থায় কর্মরত অনেক মেয়েকেই কুপ্রস্তাব ও হেনস্থার শিকার হতে হয়েছে।
ঋত্বিকার মতে, সমাজে এমন কিছু মানুষ রয়েছেন, যারা মনে করেন ‘মহিলা মানেই যা খুশি বলা বা করা যায়’। তাঁদের মতে, মহিলাদের দমিয়ে রাখাই সহজ। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বিনোদন জগৎ বা যে কোনও ইন্ডাস্ট্রি, সবই তো সমাজেরই অংশ। সেই কারণে একই ধরনের মানসিকতা সব ক্ষেত্রেই দেখতে পাওয়া যায়।” এমন মানসিকতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোই একমাত্র উপায় বলে মনে করেন তিনি।
কোনও রকম আপত্তিকর প্রস্তাব পেলে ঋত্বিকা বরাবরই স্পষ্ট ভাষায় জবাব দিয়েছেন। বলেন, “আমি সপাটে উত্তর দিতে পছন্দ করি।” অভিনেত্রীর অভিজ্ঞতা অনুযায়ী, অনেক পুরুষ এমন পরিবেশে বড় হয়েছেন, যেখানে মেয়েদের সম্মান করার শিক্ষা মেলেনি। গণপরিবহণ থেকে কর্মক্ষেত্র— সর্বত্রই মেয়েরা হেনস্থার শিকার হন। যদিও নিজের অভিজ্ঞতা এমন নয়, কিন্তু কাছের অনেক মহিলার দুর্দশা দেখেছেন তিনি।
আরও পড়ুনঃ অপর্ণার অজান্তেই ভাগ্য তাকে টেনে আনল আর্যর দরজায়! আর্যর অফিসেই আবার পৌঁছে গেল অপর্ণা, পরিকল্পনা না ভবিতব্যের খেলা? টাকার জোরে ভালোবাসা ফেরাতে চাইল আর্য, কিন্তু অপর্ণা কি মেনে নেবে?
নিজেকে কর্মরতা, স্বনির্ভর নারী বলে দাবি করে ঋত্বিকা বলেন, “আমি গাড়ি চালাতে পারি, নিজের সব কাজ নিজে করতে পারি। পুরুষেরা যা পারে, মহিলারাও পারে।” এমন বহু মানুষের সঙ্গে তিনি দেখা করেছেন, যাঁদের সঙ্গে সামান্য কথোপকথনেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে তাঁদের মানসিকতা কতটা বিকৃত। তাঁর মতে, এই ধরনের মানুষ সমাজের সর্বত্র ছড়িয়ে রয়েছেন এবং তাঁদের চুপ করিয়ে দেওয়াই একমাত্র উপায়। এজন্য সরাসরি কথা বলার সাহস থাকা দরকার বলেই মনে করেন ঋত্বিকা।