বাংলা সিনেমার ভবিষ্যৎ কি সত্যিই অন্ধকারে? টলিউডের অন্দরে এখন ঘনীভূত হচ্ছে সেই প্রশ্ন। দর্শক থেকে কলাকুশলী— সকলেই যেন চিন্তিত বাংলা ছবির ভাগ্য নিয়ে। বিশেষ করে যখন একের পর এক হিন্দি সিনেমা রাজত্ব কায়েম করছে বাংলারই সিনেমা হলে, তখন বাংলা ছবির জায়গা যে ক্রমশ কোণঠাসা হয়ে আসছে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এই অবস্থায় বাংলা সিনেমার পক্ষেই বড় পদক্ষেপ নিলেন ইন্ডাস্ট্রির কয়েকজন মুখ্য ব্যক্তিত্ব।
গত কয়েক বছর ধরে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, যেসময় কোনও বড় হিন্দি ছবি মুক্তি পায়, তখন মুম্বইয়ের ডিসট্রিবিউটররা শর্ত দেন— সিঙ্গল স্ক্রিন সিনেমা হলে অন্তত চারটি প্রাইম টাইম শো রাখতে হবে হিন্দি ছবির জন্য। বাংলার ছবি থাকলেও, সেই সময় ভাগাভাগি শো তাঁরা মানতে নারাজ। এই চাপের কাছে অনেক সময় অসহায় হয়ে পড়েন হল মালিকরা, ফলে প্রাধান্য পায় হিন্দি ছবি, বাংলা ছবি হারায় জায়গা।
আগামী অগস্টে মুক্তি পেতে চলেছে দেব অভিনীত বহু প্রতীক্ষিত ছবি ‘ধূমকেতু’, কিন্তু একই সময়ে আসছে বড় বাজেটের হিন্দি ছবি ‘ওয়ার টু’। ফলে স্বাভাবিকভাবেই তৈরি হয়েছে দ্বন্দ্ব— বাংলা ছবি কি আদৌ পাবে প্রাইম টাইমে শো? এই সংকট আরও ঘনীভূত হওয়ার আগেই উদ্যোগী হলেন প্রসেনজিত্ চট্টোপাধ্যায়, দেব, শ্রীকান্ত মোহতা, নিশপাল সিং রানে, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় ও সৃজিত মুখোপাধ্যায়।
এই সমস্ত ইন্ডাস্ট্রির মহারথীরা সম্প্রতি একটি যৌথ চিঠি পাঠিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। সেখানে তাঁরা স্পষ্টভাবে লিখেছেন— “বাংলা চলচ্চিত্রের এক গভীর অসম্মানজনক পরিস্থিতিতে আপনার শরণাপন্ন হতে বাধ্য হচ্ছি আমরা। নতুন বাংলা ছবি বারবার রিলিজের সময়ে হল না পেয়ে মুখ থুবড়ে পড়ছে।” তাঁরা আরও লেখেন, “মহারাষ্ট্র, পাঞ্জাব বা দক্ষিণ ভারতে এমন শর্ত কেউ দেয় না, তা হলে বাংলায় কেন?”
আরও পড়ুনঃ “মহিলা মানেই গায়ে হাত দেওয়া যায়”— এবার ইন্ডাস্ট্রিতে কার মানসিকতার কথা তুলে ধরে বি’স্ফো’রক অভিনেত্রী ঋত্বিকা সেন?
এই চিঠির পরেই সরব হয়েছে রাজ্য প্রশাসন। মুখ্যমন্ত্রীর তরফে ক্রীড়া ও সংস্কৃতি মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ডেকেছেন এক জরুরি বৈঠক। আগামী ৭ আগস্ট, দুপুরে নন্দনে এই বৈঠক হওয়ার কথা। এই মিটিং থেকেই হয়তো উঠে আসবে কোনও সমাধানসূত্র, যাতে বাংলা ছবির প্রতি অবিচার না হয়। টলিউড এখন তাকিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দিকে, বাংলা সিনেমা কি আবার ঘুরে দাঁড়াবে? উত্তর দেবে সময়।