বিনোদন জগতের রঙিন আলো যতটা ঝলমলে, তার আড়ালের গল্পগুলো ততটাই আবেগে ভরা। পর্দায় যাঁদের দেখলে দর্শক মুগ্ধ হন, তাঁদের ব্যক্তিজীবনে লুকিয়ে থাকে অজস্র লড়াই, হারানোর বেদনা আর নতুন পথ খুঁজে পাওয়ার গল্প। বহু শিল্পীর মতোই একই পথ অতিক্রম করেছেন অভিনেত্রী রূপসা গুহ—যার পথচলা আজও অনুপ্রেরণা হয়ে দাঁড়ায় অনেকের কাছে।
টলিউডের পরিচিত মুখ রূপসা গুহ ছোট পর্দা থেকে বড় পর্দা—দুই ক্ষেত্রেই নিজের অভিনয় প্রতিভা প্রমাণ করেছেন বহুবার। একসময় ধারাবাহিকের জনপ্রিয় মুখ ছিলেন তিনি। অভিনয়ের প্রতি তাঁর নিষ্ঠা, সংবেদনশীলতা আর বিভিন্ন চরিত্র কাজ করার ক্ষমতা তাঁকে দ্রুতই আলাদা জায়গা করে দেয়। তাঁর অভিনীত চরিত্রগুলো দর্শকের মনে দাগ কেটেছে বারবার।
বর্তমানে নবাগত পরিচালক হিসেবে রূপসার যাত্রা শুরু হয়েছে আরও বড় স্বপ্ন নিয়ে। ইতিমধ্যেই মুক্তি পেয়েছে তাঁর নির্মিত নতুন ছবি ‘হু আর ইউ ফিরোজ়’। বাস্তব একজন শিল্পকর্ম ব্যবসায়ীকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে এই গল্প। ছবিতে ফিরোজ়ের জীবনের নিঃসঙ্গতা, স্মৃতি, ভালোবাসা আর হারানোর ভয়—সবকিছুই সূক্ষ্মভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন রূপসা। যদিও হল পাওয়া নিয়ে কিছু সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে তাঁকে, তবু তিনি আত্মবিশ্বাসী—“ভালো ছবি দেখতে চাইলেই দর্শক খুঁজে নেবে,” বলেই জানিয়েছেন তিনি।
তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের লড়াইও কিছু কম না। একসময় একজন পরিচালককে বিয়ে করেছিলেন রূপসা। প্রথমে বৈবাহিক সম্পর্ক সুন্দরই ছিল, কিন্তু ধীরে ধীরে সম্পর্ক তিক্ততার দিকে এগোতে থাকে। প্রায় প্রতিদিনই তিনি খোঁটা শুনতেন, মানসিক চাপ বাড়তে থাকে, এমনকি অভিনয় জগত থেকেও দূরে সরে যেতে বসেছিলেন তিনি।
আরও পড়ুনঃ ‘উজি সব দোষ করে ন্যাকামো করবে…রাই ছিল ন্যাকা, কিন্তু রাইয়ের থেকেও বেশি অসহ্য এই চরিত্র!’ ‘জোয়ার ভাঁটা’-য় আরাত্রিকার চরিত্র নিয়ে দর্শকের ক্ষোভ! তাদের মতে, ‘মিঠিঝোরা’র রাই নিরীহ সেজে থাকলেও এতটা বিরক্তিকর ছিল না!
সবচেয়ে কঠিন আঘাত আসে যখন তিনি বুঝতে পারেন, তাঁদের সম্পর্কে তৃতীয় একজনের উপস্থিতি রয়েছে। এই ব্যক্তিগত সংকট তাঁকে ভেঙে দিলেও শেষ পর্যন্ত হার মানেননি তিনি। সময় নিয়ে নিজেকে সামলে আবারও ক্যামেরার পিছনে দাঁড়ালেন, নিজের ভাষায় নিজের গল্প বলতে শুরু করলেন। আজ তিনি নতুন করে জীবন সাজিয়ে নিয়েছেন এবং নতুন ছবির মাধ্যমে প্রত্যাবর্তন করেছেন আরও শক্তভাবে। রূপসার কথায়, “অভিনয় আমার প্রথম প্রেম। ভালো ছবি দেখেন যাঁরা, তাঁরা আমার ওপর ভরসা রাখতে পারেন।”
