জি বাংলার ধারাবাহিকপ্রেমী দর্শকদের কাছে ‘আরাত্রিকা মাইতি’ (Aratrika Maity) আর নতুন মুখ নয়। ‘মিঠিঝোরা’-য় রাই চরিত্রে তিনি যতটা আবেগী আর আত্মত্যাগী ছিলেন, ঠিক ততটাই বিভক্ত প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছিল শেষের দিকে। কেউ ভালোবেসেছিল তার নরম মনটা, আবার অনেকে বিরক্ত হয়েছিল তার অতিরিক্ত অসহায় আচরণে। সেই জায়গা থেকেই দর্শকের তুলনা আজকের ‘জোয়ার ভাঁটা’র উজি চরিত্রের সঙ্গে অনিবার্য হয়ে উঠেছে। উজিও নরম, চুপচাপ এবং দায়িত্ববান, কিন্তু দর্শকের চোখে এবার সেই নম্রতাই যেন বিরক্তির বড় কারণ!
‘জোয়ার ভাঁটা’-র সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোই এই বিরক্তির কেন্দ্রবিন্দু। নিরীহ মুখের আড়ালে উজি যে ক্রমে দিদি নিশার পরিকল্পনাগুলোতে জড়িয়ে পড়ছে স্বেচ্ছায়, সেটা দর্শকদের একদমই আশা ছিল না। সবাই ভেবেছিল এবার অন্তত উজি সঠিক পথ বেছে নেবে, কিন্তু তার একের পর এক সিদ্ধান্তগুলো উল্টো সবকিছু জটিল করে দিয়েছে। বিশেষ করে ঋষির বাড়ির লোকেরাও যখন ধীরে ধীরে তাকে বিশ্বাস করতে শুরু করছিল, তখনই আড়ালে সে এমন কাণ্ড ঘটাল যা গল্পটাকে পুরো অন্য দিকে ঘুরিয়ে দিল।

সবচেয়ে বড় ধাক্কাটা আসে তখন, যখন দেখা যায় যে উজি ঋষির ফোন থেকে পাসকোড বের করে নিশার হাতে তুলে দিচ্ছে। এমন একটা জায়গা যেখানে সে চাইলে সত্যের পাশে দাঁড়াতে পারত, সেখানে সে বেছে নিল দিদির পক্ষ নেওয়ার সিদ্ধান্ত। পরে আবার উজিকে অনুশোচনায় ভুগতে দেখা যায়, আদতেই সে ঠিক করেছে কিনা ভেবে। দর্শকরা এবার বলতে শুরু করেছেন, “উজি সব দোষ করবে, পরে আবার ন্যাকামো করবে…রাইয়ের থেকেও বেশি বিরক্তিকর!” অনেকের মতে, এই চরিত্রটিই গল্পের ভিত নড়বড়ে করছে।
সাম্প্রতিক পর্বে নিশা উজির কাছ থেকে পাসকোড পেয়ে ঋষির ডিজিটাল লকার খালি করে দেয় আর দর্শকদের মতে, সেই সময় ঋষির মুখের অসহায় এই মানসিক অবস্থা ছিল সবচেয়ে কষ্টের মুহূর্ত। কারণ ঋষি মন থেকে বিশ্বাস করেছিল উজিকে, আর সেই মানুষের হাত দিয়েই তার জীবনে আসে সবচেয়ে বড় প্রতারণা। যে মানুষটিকে সে সবচেয়ে আপন মনে করেছিল, সেই আজ বিশ্বাসঘাতকে পরিণত হলো। এই নিয়েও দর্শকদের ক্ষোভ কম নয়।
আরও পড়ুনঃ কুসুম–আয়ুষ্মানের জমাটি রো’ম্যান্সে উত্তাপ বাড়ছে ধারাবাহিকে, ন্যাকা কান্না ছেড়ে টিআরপি বাড়তে ভরসা নায়ক-নায়িকার তুমু’ল প্রেম?
ফলে, বর্তমানে দর্শকদের প্রতিক্রিয়া অনেকটাই একরকম যে উজিকে আর কেউ ‘নিরীহ’ বলে দেখছে না। বরং মনে করছে যে তার বারবার কান্না, চুপচাপ থাকা আর ভুল সিদ্ধান্তগুলোই গল্পটাকে বিপদে ফেলছে। দর্শকেরা আক্ষেপ করে লিখছেন, “রাই ছিল ন্যাকা, কিন্তু উজি তো রাইয়ের থেকেও বেশি অসহ্য!” আর এই কথাটাই স্পষ্ট করে দিচ্ছে, চরিত্র হিসেবে উজির প্রতি বিরক্তি এখন এতটাই বেড়েছে যে মানুষ আর তাকে নরম নয়, বরং বিভ্রান্তিকর এবং ক্ষতিকর চরিত্র বলেই দেখছে।
