নব্বইয়ের দশকের বাংলা ছবি জনপ্রিয় অভিনেত্রীদের মধ্যে অন্যতম ‘শতাব্দী রায়’ (Satabdi Roy)। একসময়ে জনপ্রিয় অভিনেতাদের বিপরীতে একাধিক ছবিতে অভিনয় করে বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছিলেন। এরপর অভিনয়ের পাশাপাশি বীরভূম লোকসভা (Lok Sabha Candidate) কেন্দ্রের শাসক দলের প্রার্থী হিসেবে ২০০৯ সালে সাংসদ পদে নির্বাচিত হন তিনি। এরপর ধীরে ধীরে অভিনয় জগত থেকে দূরে সরে যান তিনি।
অবশেষে প্রায় এক যুগেরও বেশি সময়ের পরে মৈনাক ভৌমিকের ছবি ‘বাৎসরিক’ (Batsorik) দিয়ে অভিনয় জগতে প্রত্যাবর্তন হলো অভিনেত্রীর। এদিন এক সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়ার সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রীর নতুন করে পর্দায় ফেরার অভিজ্ঞতা জানতে চাওয়া হয়। অভিনেত্রী বলেন, “নতুন প্রজন্ম আমাদের থেকে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী এবং আত্মনির্ভরশীল। আমাদের থেকে অনেক বেশি জানে ওরা, আমাদের মত এত চিন্তাভাবনা করে না। যেমন পারে তেমন ভাবেই কাজটা করে, যেটা নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য।”
এরপর শতাব্দিকে জানতে চাওয়া হয় যুগ পরিবর্তনের সাথে প্রযুক্তিগত পরিবর্তন এসেছে, নতুন প্রযুক্তি আর কাজের পদ্ধতি নিয়ে তাঁর অভিজ্ঞতা কেমন? অভিনেত্রী বলেন, “যুগের সাথে সব কিছুই পাল্টে গেছে, সেটা প্রযুক্তিই হোক বা মানুষ। তাই কাজের পদ্ধতিতেও পরিবর্তন আসবে এটাই স্বাভাবিক। প্রথমে ভেবেছিলাম অসুবিধা হবে, কিন্তু অনেকদিন পর্দা থেকে দূরে থাকায় কাজে ফিরে মনে হল নতুন করে অভিনেত্রী হলাম। তাই খুব একটা অসুবিধা হয়নি।”
বর্তমানে টলিউড ইন্ডাস্ট্রি পরিস্থিতি নিয়ে শতাব্দী বলেন যুগ পাল্টে গেছে, মানুষের হাতে সময় এখন খুবই কম তাই প্রেক্ষাগৃহে নতুন কিছু না পেলে মানুষ যেতে চায় না। আমার মতে একই রকম গল্প থেকে বেরিয়ে এসে অন্যান্য ধারাও আবিষ্কার করতে হবে। যেমন ধারাবাহিক গুলিতে একই পারিবারিক গল্পকে ভিন্ন ভিন্ন ভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে, মানুষ কিন্তু বেশ পছন্দও করছেন। বাংলা ইন্ডাস্ট্রি যে একদমই চেষ্টা করছে না সে কথা বলবো না। এখন কিছু কিছু ভিন্ন স্বাদের ছবি নতুন করে হচ্ছে, আর ভালো ফলাফলও করছে।
কিন্তু বাংলা ছবির ক্ষেত্রে যেটা সবচেয়ে বড় সমস্যা সেটা হল বাজেট, এরপরে কিছু প্রেক্ষাগৃহও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তবে দর্শক এখনো ভালো কিছুর অপেক্ষায় রয়েছে।” অভিনেত্রীকে জানতে চাওয়া হয় নিয়মিত অভিনয় ফিরছেন নাকি রাজনীতি করতে বেশি পছন্দ করেন? এবার অভিনেত্রী কিছুটা চিন্তায় পড়ে গিয়ে জানালেন তবে এখনো তেমন কিছু ভাবনা নেই, ভবিষ্যতে ভালো চরিত্র পেলে অবশ্যই আবার পর্দায় দেখা যাবে তাঁকে।
এইবার করা হয় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন! রাজনীতির ময়দানে কি অভিনয় করতে হয়? অভিনেত্রী ভাবনা চিন্তা করে বলেন, “যাদের অভিনয় করা স্বভাব তাঁরা করেন সেটা বিনোদন হোক কিংবা রাজনীতি।” এই কথার রেশ টেনেই অভিনেত্রী বলেন, “শুধু অভিনয় জগৎ বা রাজনীতি ময়দানই কেন? এর বাইরেও তো সাধারণ মানুষ কত ক্ষেত্রে অভিনয় করেন! কখনো নিজে বাঁচার জন্য, কখনো অন্য কাউকে ঠকানোর জন্য, আবার কখনো শুধু নিজেদেরকে ভালো রাখার জন্য।
আরও পড়ুনঃ সুরভীকে খোঁচা দিয়ে কচি প্রেমিকের মতো স্ত্রী শার্লিকে নিয়ে অভিষেকের পোস্ট! “এতো লোক দেখানো কিসের? সম্পর্ক আদৌও টিকবে তো? কটাক্ষ নেট পাড়ার
অভিনয় সর্বত্রই হয়ে থাকে, শুধুমাত্র রাজনীতিবিদ্যা বা অভিনেতা-অভিনেত্রীদেরই এই দোষ দেওয়া উচিত না। মানুষকে নিত্যদিনে যেকোনও কারণেই অভিনয় করতে হয়। কখনো খুশি থাকার, কখনো দুঃখ থাকার।” প্রসঙ্গত এবার অভিনেত্রীকে বাৎসরিক নামক ছবিতে দেখা যাবে, যেখানে একজন স্ত্রী সদ্য বিধবা হয়েছে এবং একই বাড়িতে ননদকে নিয়ে থাকেন, আর এই ননদের ভূমিকায় অভিনয় করছেন শতাব্দী রায়।