বাংলার টেলিভিশন জগতে এক সুপরিচিত নাম অভিনেত্রী ‘অঞ্জনা বসু’ (Anjana Basu)। দীর্ঘদিন ধরে ধারাবাহিকের পর্দায় নিজের অভিনয় দক্ষতা আর সাবলীল চরিত্র চয়নের মধ্যে দিয়ে নিজের জায়গা পাকাপাকি করেছেন। বর্তমানে যদিও কোনও ধারাবাহিকে তাঁকে দেখা যাচ্ছে না, তবে শোনা যাচ্ছে খুব শীগ্রই জি বাংলার (Zee Bangla) আসন্ন মেগাতে মায়ের চরিত্রে ধরা দেবেন তিনি। ছোটো পর্দা থেকে দূরে থাকলেও তাঁর কেরিয়ার থেমে নেই এক মুহূর্তের জন্যও। একের পর এক ছবির কাজে ব্যস্ত অঞ্জনা। আগামী মে মাসেই মুক্তি পেতে চলেছে তাঁর ছবি ‘শ্রীমান ভার্সেস শ্রীমতি’ (Shreeman v/s Shreemati) , যেখানে তিনি অভিনয় করবেন টলিউডের মহাগুরু মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গে।
সিনেমার পাশাপাশি সিরিজ ও বিভিন্ন ইভেন্টেও অঞ্জনার উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে নিজের জীবনের নানান বিষয় নিয়ে মুখ খুলেছেন অঞ্জনা। সিনেমার শ্যুটিং থেকে শুরু করে সিরিয়ালের কাজ, আর রাজনৈতিক প্রচার—এই সব কিছুর মাঝেই কীভাবে সময় বের করেন তিনি, তা নিয়ে উঠে এসেছে একাধিক প্রশ্ন। অভিনেত্রী জানিয়েছেন, তিনি নিজের কাজ ভালোবাসেন বলেই এত ব্যস্ততা সত্ত্বেও ক্লান্ত হন না। আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তাঁকে প্রার্থী হিসেবে কি দেখা যাবে নাকি? এই প্রশ্নও ওঠে।
উত্তরে অঞ্জনা সাফ জানিয়ে দিবেন, এখনও সেরম কোনও অফার পাননি তিনি । যদিও বা দল থেকে প্রস্তাব আসে, তবুও তিনি কতটা তৈরি সেটা নিয়ে নিশ্চিত নন। রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে চলচ্চিত্র বা টেলিভিশন জগতে কখনও কোনও প্রভাব পড়েছে কিনা, এই প্রশ্নের উত্তরে অভিনেত্রী স্পষ্টভাবে জানান, তিনি কখনও কাজের অভাবে পড়েননি। বরং তিনি মনে করেন, যদি কেউ নিজের কাজটা মন দিয়ে করে, তাহলে রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে তাঁকে কাজ থেকে দূরে সরানো যায় না।
যদিও তিনি স্বীকার করেন, অনেকের মুখেই শুনেছেন রাজনৈতিক পরিচয়ের জন্য কাজ না পাওয়ার অভিযোগ। তবে তাঁর নিজের অভিজ্ঞতা বরাবরই ইতিবাচক। কাজের সুযোগ তিনি পেয়েছেন নিয়মিতই, স্বাভাবিকভাবে এবং কাজ দিয়ে নিজেকে প্রমাণও করেছেন বারবার। তবে এই কথার ঠিক পরেই অভিনেত্রী এমন এক অভিজ্ঞতার কথা জানালেন, যা এর আগে হয়তো তিনি কখনও প্রকাশ্যে আনেননি। অঞ্জনা জানান, তিনি যখন প্রথমবার বিজেপির সঙ্গে যুক্ত হন, তখন একদিন বাড়ি ফিরেই দেখেন ভয়াবহ দৃশ্য!
তাঁর বাড়ির সমস্ত কাচের দরজা-জানলা ইট-পাটকেল ছুঁড়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। পুরো ঘটনাটাই ঘটেছিল হঠাৎ আর এতটাই ভয়াবহ ছিল যে, তিনি নিজের দলের কাউকেই বলেননি সে সময়। সংবাদ মাধ্যমকেও চুপিসারে এড়িয়ে গিয়েছিলেন তিনি। পরদিন থানা থেকে পুলিশ এসে দেখেও যায় ঘটনাস্থল, কিন্তু অভিনেত্রী নিজেই সব সামলে নেন, নতুন কাচ লাগিয়ে নেন নিজের হাতে। সেই অভিজ্ঞতা তাঁকে ক্ষণিকের জন্য বিচলিত করেছিল ঠিকই, তবে কখনও নিজের অবস্থান বদলাননি। “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে ব্যক্তিগত কোনও রাগ নেই।”
আরও পড়ুনঃ‘মিঠিঝোরা’র ‘শৌর্য’কে ভুলিয়ে এবার সম্পূর্ণ নতুন অবতারে সপ্তর্ষি! দর্শকের ভালোবাসায় নতুন ধারাবাহিকে নায়কের ভূমিকায় ফিরছেন তিনি! নায়িকা চরিত্রে দারুণ চমক
এই কথা বলেই স্পষ্ট ভাষায় জানালেন অঞ্জনা। তিনি বলেন, যখনই দেখা হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে যথেষ্ট সম্মান দিয়েছেন, তিনিও বিনয়ের সঙ্গে সম্মান ফিরিয়েছেন। অঞ্জনার মতে, মুখ্যমন্ত্রী ভালো কাজ করতে চান, তবে তাঁর আশেপাশের মানুষেরা সেই লক্ষ্য পূরণে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছেন। অভিনেত্রীর এই মন্তব্য স্পষ্ট করে দেয়, তিনি ব্যক্তি নয়—প্রশাসনিক ব্যবস্থার দিকেই তাঁর অভিযোগ তুলেছেন। রাজনীতিতে সক্রিয় থেকে অভিনয়ে অবিচল থাকা অভিনেত্রীর অঞ্জনার সাহসিকতা ও দৃঢ়তার পরিচয় দেয়, তিনি নিঃসন্দেহে অনেকের কাছে অনুপ্রেরণা!