জি বাংলার দর্শকদের কাছে এখন অভিনেত্রী ‘কনীনিকা বন্দ্যোপাধ্যায়’ (Koneenica Banerjee) নিত্যদিনের বিকেলের চা ও গল্পের সঙ্গী। সম্প্রতি মাকে হারিয়ে ভীষণভাবে শোকাহত তিনি। আজ তিনি একজন দক্ষ শিল্পী এবং রান্নাঘরের (Zee Bangla Rannaghor) সঞ্চালিকা হলেও, একসময়ে শারীরিক এবং মানসিক সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে তাঁকে। সম্প্রতি একটি পডকাস্ট (Podcast) শোতে এসে নিজের জীবনের গভীরতম যন্ত্রণার অধ্যায়ের কিছু অংশ ভাগ করে নিলেন অভিনেত্রী।
প্রথম গর্ভাবস্থার চতুর্থ মাসে নিজের প্রথম সন্তানকে হারানোর যন্ত্রণায় কীভাবে ভেঙে পড়েছিলেন তিনি, সেই অভিজ্ঞতার কোথাই অকপটে প্রকাশ করলেন এদিন তিনি। কনীনিকা এদিন স্ট্রেট আপ উইথ শ্রী পডকাস্টে জানান, সেই সময় জীবনের সমস্ত দিশা হারিয়ে ফেলেছিলেন তিনি। চারদিক অন্ধকার মনে হয়েছিল, কোথাও কোনও আশার আলো দেখতে পাচ্ছিলেন না। কেন, কি এমন ঘটে অভিনেত্রীর সাথে? তখন নাকি শরীরে হাম (বসন্ত) ধরা পড়ায়, চিকিৎসকদের পরামর্শে বাধ্য হয়েই চতুর্থ মাসে গর্ভপাত করাতে হয়েছিল তাঁকে।

এরপর মন থেকে এতটা ভেঙে পড়েছিলেন যে, নিজের বাড়ি কিংবা শ্বশুরবাড়ি কোথাও শান্তি পাচ্ছিলেন না তিনি। কেবল ঈশ্বর আর সৃষ্টির কাছে তিনি পর্থনা জানিয়ে গিয়েছিলেন, কোনোভাবে যেন আবার কাজের সুযোগ পান, নিজেকে বাঁচিয়ে রাখার আবার যে নতুন কারণ পান। ঠিক এই সময়েই জীবনে আলোর দিশা হয়ে হাজির হয় জি বাংলার ‘অন্দরমহল’ (Andarmahal) ধারাবাহিক। কনীনিকার কথায়, এই ধারাবাহিক যেন তাঁর নিজের জীবনের প্রতিচ্ছবির মতো। সিরিয়ালের চরিত্রের সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত যন্ত্রণা আশ্চর্যভাবে মিলে যায়।
এক সৎ মেয়ের মা হয়ে ওটা, অবিশ্বাস ও লড়াই পেরিয়ে ভালোবাসার বন্ধন তৈরি করা— এই সমস্ত দৃশ্যই যেন পর্দায় তাঁর নিজের জীবনের প্রতিবিম্ব হয়ে উঠেছিল। কনীনিকা বলেন, ওই চরিত্রকে প্রাণ দিয়ে তোলার মধ্যে দিয়েই যেন নিজের ভেতরের ক্ষত সারিয়ে তুলেছিলেন তিনি। এরপর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে জীবন আবার নতুন মোড় নেয়। দেড় থেকে দু’বছরের মধ্যে আবার গর্ভবতী হন কনীনিকা। মাঝের এই সময়ে তিনি কাজ করেছেন বড় পর্দাতেও। ‘হামি’, ‘মুখার্জি দার বউ’ আর ‘কণ্ঠ’—এই তিনটি ছবির মধ্যে দিয়েই ধীরে ধীরে জীবনের স্বাভাবিক ছন্দে ফেরেন তিনি।
আরও পড়ুনঃ ১৮ বছর পর নিজের বাবাকে সামনে পেল দুর্গা!অবশেষে নিজের মেয়ে দেখতে পেয়ে কাছে টেনে নিলো স্বয়ম্ভু!
অভিনেত্রী জানান,’মুখার্জি দার বউ’ ছবির সময় তাঁর সন্তান কিয়া তখন মায়ের গর্ভে মাত্র দুই মাসের। সবশেষে, অভিনেত্রী অকপটে স্বীকার করেছেন, জীবনের এই লড়াইয়ে তাঁর স্বামী সুরজিৎ বড় ভূমিকা নিয়েছেন। কনীনিকার কথায়, বিয়ের পর তাঁর জীবনে এসেছে দারুন সৌভাগ্য। সুরজিতের উপস্থিতি তাঁর জীবনের অনেক কঠিন সময়কে সহজ করে দিয়েছে। আজ যখন তিনি নিজেকে নতুন করে গড়ে তুলেছেন, তখন এই জি বাংলা পরিবার এবং নিজের পরিবারকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছেন তিনি।