বাংলা চলচ্চিত্র ও টেলিভিশনের অন্যতম জনপ্রিয় মুখ ‘সব্যসাচী চক্রবর্তী’ (Sabyasachi Chakraborty) । ফেলুদা হিসেবে তার অভিনয় আজও দর্শকদের মনে অমলিন। শুধু ‘ফেলুদা’ নয়, ‘শ্বেত পাথরের থালা’, ‘হেমলক সোসাইটি’, ‘কাকাবাবু’, সব চরিত্রেই তিনি নিজস্ব ছাপ রেখে গেছেন। অন্যদিকে, মিঠু চক্রবর্তী (Mithu Chakraborty) ও বাংলা অভিনয় জগতের অত্যন্ত পরিচিত নাম। বহু টেলিভিশন ও সিনেমায় তার অভিনয় মন ছুঁয়ে গেছে দর্শকদের। শুধু পর্দায় নয়, বাস্তব জীবনেও তারা দীর্ঘদিন ধরে একসঙ্গে পথ চলেছেন।
সব্যসাচী ও মিঠুর দাম্পত্য জীবন প্রায় চার দশকের। দুজন সফল অভিনেতারও জন্মদাতা এনারা। ‘গৌরব এবং অর্জুন চক্রবর্তী’। শিল্পীজীবন ও সংসার একসঙ্গে সামলেছেন তারা। দু’জনেই একে অপরের পরিপূরক, একই সঙ্গে বন্ধু ও সহযোদ্ধা। তাদের এই দীর্ঘ দাম্পত্য অনেকের কাছে অনুপ্রেরণা। জীবনের নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে, ব্যস্ততার মাঝেও তারা একে অপরের পাশে থেকেছেন, যা তাদের সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করেছে।

তবে এই দাম্পত্যে একসময় বড় ঝড় আসে, যখন মিঠু চক্রবর্তী ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। দীর্ঘ লড়াইয়ের পর তিনি সেই কঠিন সময় পার করেছেন। চিকিৎসার ধকল, শারীরিক কষ্ট ও মানসিক যন্ত্রণার মাঝেও সব্যসাচী ছিলেন তার ছায়াসঙ্গী। স্ত্রীর কষ্ট ভাগ করে নেওয়ার পাশাপাশি, তার পাশে দাঁড়িয়ে সাহস যুগিয়েছেন। মিঠুর অসুস্থতার সময়ে সব্যসাচীর ভালোবাসা এবং যত্ন আরও একবার প্রমাণ করে, কীভাবে প্রকৃত সঙ্গী জীবনের কঠিনতম অধ্যায়ে পাশে থাকে।
আরও পড়ুনঃ মহাবিপদ থেকে শিরিনকে উদ্ধার করল পারুল! এবার কি তবে বদলে যাবে রায়ান পারুলের সম্পর্কের সমীকরণ?
সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে তাদের একসঙ্গে দেখা যায়, যেখানে সব্যসাচী মিঠুর হাত শক্ত করে ধরে রেখেছিলেন। কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, “ক্যান্সারের পর ‘পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি’ নামে একটা সমস্যা হয়, যাতে হাত-পা দুর্বল হয়ে পড়ে, ভারসাম্য হারিয়ে ফেলার সম্ভাবনা থাকে। তাই হাতটা ধরে রেখেছি।” কিন্তু মিঠু হেসে বলেন, “ও আমাকে কখনও পড়তে দেয় না, সব সময় হাতটা শক্ত করে ধরে রাখে।” এই মুহূর্তই যেন তাদের দাম্পত্যের প্রকৃত সংজ্ঞা—ভালোবাসা, নির্ভরতা ও পরস্পরের প্রতি অগাধ বিশ্বাস।
এভাবে ক্যান্সারের মতো কঠিন অধ্যায় পেরিয়েও তারা একে অপরের পাশে থেকেছেন, যা সত্যিকারের ভালোবাসার উদাহরণ। প্রসঙ্গত গত ৮ তারিখ পূর্ণ করেছেন বিবাহের ৩৮ টি বছর। সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সব্যসাচী ও মিঠুর এই সম্পর্ক শুধু তারকাদের দাম্পত্য নয়, বরং সকলের কাছে এক আশার আলো, এক অনন্য ভালোবাসার গল্প।