শীত এলেই বাংলার বিভিন্ন জেলায় শুরু হয়ে যায় মেলা ও মাচা অনুষ্ঠান। এই সময় দর্শকদের অন্যতম আকর্ষণ টলিউড তারকাদের কাছ থেকে দেখার সুযোগ। প্রসেনজিৎ ও দেবের পাশাপাশি অভিনেতা জিৎ এর জনপ্রিয়তা যে আকাশছোঁয়া, তা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। যেখানেই জিৎ যান, সেখানেই উপচে পড়ে মানুষের ঢল। ঠিক তেমনই চিত্র দেখা গেল বাঁকুড়ার ঐতিহ্যবাহী বিষ্ণুপুর মেলায়। জিৎ এর অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে সেখানে তৈরি হল চরম বিশৃঙ্খলা, যা মুহূর্তের মধ্যেই ভয়াবহ আকার নেয়।
শনিবার সন্ধ্যায় বিষ্ণুপুর মেলার যদুভট্ট মঞ্চে আয়োজন করা হয়েছিল জিৎ সহ একাধিক শিল্পীর নাচ ও গানের অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠান শুরুর আগেই বিষ্ণুপুর ও বাঁকুড়া জেলার নানা প্রান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষ জমায়েত হন। রাত আটটা নাগাদ অনুষ্ঠান শুরু হতেই ভিড় আরও বাড়তে থাকে। দর্শকদের উচ্ছ্বাস সামলাতে গিয়ে পুলিশ কার্যত হিমসিম খেতে শুরু করে। ধাক্কাধাক্কি ও চাপে পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।
উত্তেজনা বাড়তেই দর্শকদের একাংশ মঞ্চের সামনে থাকা ব্যরিকেড ভেঙে ফেলে। মুহূর্তের মধ্যেই ভাঙচুর শুরু হয়। অনুষ্ঠানস্থলে থাকা শয়ে শয়ে চেয়ার ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। শুধু তাই নয়, মেলার আশপাশের একাধিক দোকানেও হামলা চালানো হয়। ছিঁড়ে ফেলা হয় ব্যানার ও ফ্লেক্স। অভিযোগ ওঠে লুঠপাটেরও। গোটা এলাকা কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়, আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে।
পরিস্থিতি সামাল দিতে শেষ পর্যন্ত পুলিশকে হালকা লাঠিচার্জ করতে হয়। তাতে উত্তেজিত জনতার ক্ষোভ আরও বেড়ে যায়। পুলিশের সঙ্গে দর্শকদের বচসা শুরু হয়। ধাক্কাধাক্কিতে বেশ কয়েকজন দর্শক আহত হয়েছেন বলেও জানা গিয়েছে। যদিও বড় কোনও দুর্ঘটনা ঘটেনি বলেই প্রশাসন সূত্রে খবর। জাতীয় মেলার স্বীকৃতি পাওয়া বিষ্ণুপুর মেলায় এর আগে এমন ঘটনা না ঘটায় স্বাভাবিকভাবেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
আরও পড়ুনঃ “আমাকে নায়িকার ভূমিকায় মানায় না, এই কথাই বারবার শুনেছি!” বাবা চাইতেন মেয়ে যোগ দিক সেনাবাহিনীতে! কিন্তু অদম্য জেদ ও দক্ষতায়, অভিনয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছেন ‘কুসুম’ তানিষ্কা! স্বপ্নপূরণের লড়াই জিতে, এবার মুখ খুললেন অভিনেত্রী! আপনাদের কেমন লাগে তাঁর অভিনয়?
তবে এই সমস্ত বিশৃঙ্খলার মধ্যেও মূল অনুষ্ঠান নির্বিঘ্নেই সম্পন্ন হয়। উদ্যোক্তাদের দাবি, মঞ্চের নিরাপত্তা ঠিক থাকায় জিৎ এর পারফরম্যান্সে কোনও প্রভাব পড়েনি। নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অনুষ্ঠান করে সুস্থভাবেই মঞ্চ ছাড়েন অভিনেতা। পরে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে। আনন্দের অনুষ্ঠানে এই ধরনের অশান্তি নিঃসন্দেহে মেলার আনন্দে বড় ছেদ ফেলল বলেই মনে করছেন অনেকেই।
