বাংলা টেলিভিশনের পর্দায় যাঁর উপস্থিতি মানেই আলাদা এক বিশ্বাসযোগ্যতা, সেই পল্লবী শর্মা আবারও আলোচনার কেন্দ্রে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে ভেঙে গড়ে নেওয়া এই অভিনেত্রী খুব অল্প সময়েই ছোটপর্দার দর্শকের ঘরের মানুষ হয়ে উঠেছেন। আবেগ, দৃঢ়তা আর সংযম—এই তিনের মিশেলেই পল্লবীর অভিনয় আলাদা করে নজর কাড়ে। তাই দীর্ঘ বিরতির পর তাঁর প্রত্যাবর্তন মানেই দর্শকের মনে বাড়তি প্রত্যাশা।
‘কে আপন কে পর’-এর জবা হোক বা ‘নিম ফুলের মধু’-র পর্ণা—দুটো চরিত্রই পল্লবী শর্মার কেরিয়ারের মাইলস্টোন। প্রতিটি চরিত্রে নিজেকে এমনভাবে মিশিয়ে দিয়েছেন যে, পর্দার বাইরেও দর্শক তাঁকে সেই নামেই চিনেছেন। দীর্ঘ ন’মাসের বিরতির পর আগামী ১৫ ডিসেম্বর জি বাংলার নতুন মেগা ধারাবাহিক ‘তারে ধরি ধরি মনে করি’-তে নায়িকা হিসেবে ফিরছেন তিনি। এই ধারাবাহিকে রূপমঞ্জরী চরিত্রে এক বনেদি পরিবারের দায়িত্বশীলা বউমা হিসেবে দেখা যাবে পল্লবীকে, যাঁকে ঘিরেই এগোবে গল্পের মূল স্রোত।
পর্দার সাফল্যের আড়ালে পল্লবীর বাস্তব জীবন কিন্তু ছিল কঠিন লড়াইয়ে ভরা। হাওড়ার এই অভিনেত্রী খুব অল্প বয়সেই মা-বাবাকে হারান। ক্লাস টেনের পরীক্ষার প্রথম দিনেই বাবার মৃত্যুসংবাদ পেয়েও বাবার ইচ্ছাকে সম্মান জানিয়ে পরীক্ষায় বসেছিলেন তিনি। পিসির হাত ধরে স্টুডিয়োয় যাতায়াত থেকেই শুরু হয় অভিনয়ের পথচলা—সংগ্রাম, অভাব আর স্বপ্ন একসঙ্গে নিয়েই।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ‘নিম ফুলের মধু’ শেষ হওয়ার পর দীর্ঘ বিরতি নিয়ে মুখ খুলেছেন পল্লবী। তিনি জানান, কোনও ধারাবাহিক বা প্রজেক্ট শেষ করার পর কিছুদিন নিজের জন্য সময় নেওয়া জরুরি। একজন অভিনেত্রী হিসেবে একটি চরিত্র থেকে বেরিয়ে আসা এবং নতুন চরিত্রে ঢুকে পড়তে মানসিক প্রস্তুতির প্রয়োজন হয়। সেই সময়টুকু নিজেকে দেওয়া, নিজের সঙ্গে থাকা—এটাই তিনি বেছে নিয়েছিলেন।
আরও পড়ুনঃ বিষ্ণুপুর মেলায় জিৎ-এর অনুষ্ঠানে তীব্র বিশৃ’ঙ্খলা! ভিড়ের চাপে তাণ্ড’ব, লাঠিচার্জ পুলিশের
এই বিরতিই হয়তো আবার নতুন করে তৈরি করেছে পল্লবী শর্মাকে। আত্মসম্মান, ধৈর্য আর পেশার প্রতি দায়বদ্ধতা—এই তিনের ভারসাম্যেই তিনি বিশ্বাসী। তাই ‘ধরি ধরি’-তে রূপমঞ্জরী হয়ে তাঁর প্রত্যাবর্তন শুধু একটি নতুন চরিত্র নয়, বরং নিজেকে নতুনভাবে আবিষ্কারের আরেকটি অধ্যায় বলেই মনে করছেন অনেকে।
