জয়েন গ্রুপ

বাংলা সিরিয়াল

এই মুহূর্তে

“আমি চাইনি দীপাবলী নায়িকা হোক, বাংলার নায়িকারা দূষিত পরিবেশে বাঁচে!” “সবচেয়ে জনপ্রিয় অভিনেত্রীর থেকেও সফল আমার মেয়ে, ওর উপার্জন টলিউডে কল্পনাও করা যায় না!”— মেয়ের সিদ্ধান্তে গর্বিত চিরঞ্জিত চক্রবর্তী! দীপাবলির সাফল্যের সঙ্গে কারও তুলনা চলে না, দাবি বাবার!

বাংলা চলচ্চিত্রের এক উজ্জ্বল অধ্যায়ের নাম ‘চিরঞ্জিত চক্রবর্তী’ (Chiranjeet Chakraborty)। এক সময়ে টলিউডে সুপারস্টারদের তালিকায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। আজ অভিনয়ের জগৎ থেকে অনেকটাই সরে এলেও, তাঁর ব্যক্তিত্ব আর স্পষ্টভাষী মনোভাব ঠিক আগের মতোই রয়ে গেছে। সম্প্রতি তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, “আপনার মেয়ে অসম্ভব সুন্দর নাচ করতেন এবং দেখতেও খুবই ভালো, তা সত্ত্বেও এমন এক প্রতিভা থেকে বাংলাকে কেন বঞ্চিত করলেন আপনি?” এই প্রশ্ন যেন বহু দর্শকের মনেরও।

একজন সুপারস্টারের কন্যা, যার মধ্যে সবরকম প্রতিভা ছিল, তিনি কেন লাইমলাইটের বাইরে রইলেন? চিরঞ্জিত চক্রবর্তীর উত্তর ছিল একেবারে সোজাসাপ্টা, কিন্তু তার গভীরতা ছিল চোখে পড়ার মতো। তিনি বললেন, “আমি যেমন আমার নীতিতে চলি, আমার মেয়েও তেমন তার নীতিতে চলে। ও কোনদিনওই পড়াশোনার বাইরে কিছু চিন্তা-ভাবনা করেনি। আর সত্যি কথা বলতে আমিও খুব একটা খুশি হতাম না, ও যদি বাংলার হিরোইন হতো। বাংলার নায়িকারা যেভাবে দূষিত পরিবেশের মধ্যে বাঁচেন এবং সব সময় একটা চিন্তা কাজ করে, তার থেকে ও অনেক ভালো আছে।

ডক্টরেট হয়ে যে টাকার মাইনে পায় ভাবলে মাথা খারাপ হয়ে যাবে। ডাক্তারের গদিতে বসে শান্তিতে আছে ওখানে, ওর সফলতার সঙ্গে টলিউডের এই মুহূর্তে সবচেয়ে জনপ্রিয় অভিনেত্রীও তুলনা হয় না।” বাবার মুখে মেয়ের জন্য এমন আত্মবিশ্বাস আর গর্ব শোনা সত্যিই বিরল। উল্লেখ্য, অভিনেতার কন্যা দীপাবলি চক্রবর্তীর জীবনযাত্রা সত্যিই আলাদা। ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনার প্রতি ছিল গভীর আগ্রহ। মাইক্রোবায়োলজিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি পাওয়ার পর বেঙ্গালুরু থেকে তাঁর পড়াশোনা। হাউস্টনের হেলথ সায়েন্স সেন্টার থেকে তিনি ডক্টরেট সম্পন্ন করেন।

এরপর ইউটিএমডি ক্যা’ন্সার সেন্টারে শুরু করেন গবেষণামূলক কাজ। এমন নয় যে সুযোগ ছিল না গ্ল্যামার জগতে পা রাখার, কিন্তু তিনি নিজের রাস্তা নিজেই বেছে নিয়েছেন। যেখানে আলো আছে, কিন্তু তা ক্যামেরার ফ্ল্যাশলাইটের নয়, বরং জ্ঞানের দীপ্তি। চিরঞ্জিত বলেন, মেয়ের মধ্যে ছোটবেলা থেকেই যেটা দেখেছেন, সেটা হলো ‘খিদে’-কিন্তু সেটা নাম, যশ বা জনপ্রিয়তার নয়, বরং জ্ঞানের। স্কুলে পড়াকালীনই তার পড়াশোনার প্রতি নিষ্ঠা দেখে অভিভাবকরাও আর অভিনয়ের মতো বিকল্প নিয়ে ভাবেননি। দীপাবলির ‘গোল্ড মেডেল’ পাওয়ার পর সেই খিদেটা আরও বেড়ে গিয়েছে।

এই ধরনের সাফল্য যে আসলে ‘লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশনের’ চেয়ে অনেক বেশি অর্থবহ, সেটা স্পষ্ট চিরঞ্জিতের কথায়। আজ দীপাবলি নিজের পরিবার নিয়ে আমেরিকার টেক্সাসে থাকেন, এক কন্যাসন্তানের মা তিনি, এবং একইসঙ্গে সফল এক গবেষকও। তাঁর জীবনের প্রতিটি অধ্যায়ে আছে এক ধরণের আত্মনির্ভরতার ছাপ, যা হয়তো বাবার চরিত্র থেকেই পাওয়া। তবে কাজের চাপ যতই থাকুক, দীপাবলি সময় পেলেই কলকাতায় বাবা-মায়ের কাছে চলে আসেন, বিশেষ করে দুর্গাপূজোর সময়। দীপাবলীর বিকল্প সাফল্যের গল্প, আজকের দিনে বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের কাছে সত্যিই শিক্ষণীয়।

Piya Chanda

                 

You cannot copy content of this page