জয়েন গ্রুপ

বাংলা সিরিয়াল

এই মুহূর্তে

‘বাংলা ছবি তৈরির ক্ষেত্রে সত্যজিৎ রায়ই সবচেয়ে বড় সমস্যা, আমার ওঁর কোনও ছবি পছন্দ নয়’, সত্যজিৎ রায়ের জন্মশতবার্ষিকীতে এ কী বললেন বললেন পরিচালক কিউ?

পরিচালক সত্যজিৎ রায় ও পরিচালক কিউ-এর মধ্যেকার দ্বন্দ্ব সকলেই মোটামুটি জানেন। ২০১৫ সালে সন্দীপ রায়ের ‘ডবল ফেলুদা’ নিয়ে সত্যজিৎ রায় সম্বন্ধে প্রথম বিস্ফোরক মন্তব্য করেছিলেন কিউ। উচ্চারণ করেছিলেন অশালীন মন্তব্যেরও।

আর ভাগ্যের পরিহাস, অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের জীবনী পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ের ছবি ‘অভিযান’-এ সত্যজিৎ রায়ের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন সেই কিউ-ই। পরমব্রতর মতে, “কিংবদন্তি পরিচালকের সঙ্গে কিউয়ের মতো বাহ্যিক সাদৃশ্য আর কারওর নেই। আমিই রূপটানের পরে দেখে চমকে গিয়েছিলাম”।

আজ সত্যজিৎ রায়ের জন্মশতবার্ষিকী। পর্দায় সেই সত্যজিৎকে ফুটিয়ে তুলতে ঠিক কতটা বেগ পেতে হয়েছিল কিউকে। এক সংবাদমাধ্যমে এই নিয়ে তিনি বলেন, “অবশ্যই মহড়া দিতে হয়েছিল। এক, ওঁকে সবাই চেনেন। দুই, ওঁর আচরণের সঙ্গেও সবাই পরিচিত। যা আমার থেকে একদম আলাদা। ফলে, ওঁর সব কিছু নিজের মধ্যে ধারণ করতে গিয়ে আমায় প্রশিক্ষণের মধ্যে থাকতে হয়েছে। চরিত্রের মধ্যে থেকেও দিনযাপন করতে হয়েছে”।

satyajit ray: Latest News, Photos, Videos on satyajit ray | mynation.com

জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে পর্দায় তিন ‘সত্যজিৎ রায়’ হাজির হয়েছেন। ‘অভিযান’ ছবিতে কিউ, অতনু বসুর ‘অজানা উত্তম’-এ প্রিয়াংশু চট্টোপাধ্যায় ও অনীক দত্তের ‘অপরাজিত’ ছবিতে জিতু কমল। সাদৃশ্যে ও অভিনয়ে কে কতটা ভালোভাবে সত্যজিৎকে ফুটিয়ে তুলতে পেরেছেন, তা নিয়ে দ্বন্দ্ব তো থাকবেই। তবে কিউয়ের কথায়, তিনি প্রিয়াংশুর অভিনয় দেখেন নি। তবে সত্যজিৎকে পর্দায় ফুটিয়ে তুলতে তাঁকে নিজেকে আলাদা করে পড়াশোনা করতে হয়েছে।
সত্যজিৎ রায়কে নিয়ে বাঙালির আবেগ আকাশছোঁয়া। সেই চরিত্রে কাজ করতে কোনও দ্বিধা কী কাজ করেনি?

ফের কিউয়ের সোজাসাপটা জবাব, “আমার এক ফোঁটা আবেগ নেই। আমি আবেগ পছন্দও করি না। সবাই সেটা জানেন। তাই আমায় প্রচণ্ড গালাগালি খেতে হয় সারা ক্ষণ। বাঙালি আবেগ আঁকড়ে পিছনে পড়ে থাকতে ভালবাসে। সেটা আমার আসে না। তাই অভিনেয়র আগে এ ভাবে ভাবিনি। চেষ্টা করেছি সোজাসুজি ভাবে দেখার। এই চরিত্রের হাত ধরে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছিলাম। চেষ্টা করেছিলাম তাকে গ্রহণ করে আমার সেরাটা দিতে। আমার কাছে এটি চরিত্র ছাড়া আর কিচ্ছু নয়। আবেগসর্বস্ব হয়ে ভয় পেলে তো কাজটাই করতে পারব না”।

এখন বাংলা ছবির যা অবস্থা তাতে এর হাল ধরতে পারেন আরও একজন সত্যজিৎ রায়? ১০০ বছর পরও কেন তিনিই এক ও অদ্বিতীয়? কিউয়ের কথায়, “আবার একজন সত্যজিৎ রায়? না না, সে কি? ১০০ বছর পরও আবার তিনি, কেন”?

1
কিউয়ের কথায়, সত্যজিৎ যখন ছবি বানিয়েছেন, তখন বাঙালি তাঁর ছবি দেখে নি। মৃত্যুর পর তাঁর ছবি স্বীকৃতি পেয়েছে। তাঁর মতোই পরিচালককেও ছবি বানাতে বেশ বেসগ পেতে হয়েছিল। তাঁর সময়েও ছবি তৈরি সহজ ছিল না। এখনও নেই।

কিউ বলেন, “বাংলা ছবি তৈরির ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সমস্যা সত্যজিৎ রায়। তার থেকেও বড় সমস্যা তাঁকে ঘিরে আমাদের অনুভূতিগুলো। সত্যজিৎকে ঈশ্বরতুল্য বানিয়ে নিজেদের সমস্যা আমরা নিজেরাই ডেকে এনেছি। জাপান, আমেরিকায় প্রচুর সত্যজিৎ রায়। ওরা একজনে সন্তুষ্ট নয়। ফলে, একজনকে আঁকড়ে তারা তাকে ঈশ্বর বানায়নি। সময়ের দাবী মেনে প্রতি দশকেই নতুন পরিচালক এসেছেন। তাঁদের কাজে ওদের ইন্ডাস্ট্রি সমৃদ্ধ। বাংলায় সেটি হচ্ছে না। তাই এই দুরবস্থা”। আর ঠিক এই কারণেই সত্যজিৎ রায়ের কোনও ছবিই কিউয়ের পছন্দ নয়। তিনি ক্লাসিক ছবি পছন্দ করেন না।

Piya Chanda