টলিপাড়ায় যেন গত কয়েক দিন ধরে থামছেই না গুঞ্জন। জীতু কমল আর দিতিপ্রিয়া রায়ের ব্যক্তিগত মনোমালিন্য এখন প্রকাশ্যে, আর সেই ঘটনাই যেন পুরো টেলিভিশন জগতকে বিব্রত করে তুলছে। একটি জনপ্রিয় ধারাবাহিকের শুটিং চলাকালীন দুই প্রধান অভিনেতার মধ্যে এই অশান্তি কাজের গতি কমিয়ে দিয়েছে, আর তাতেই উদ্বিগ্ন শিল্পী থেকে টেকনিশিয়ান সবাই। সত্যিই কি বন্ধ হয়ে যেতে পারে ধারাবাহিকটি? এমন আশঙ্কাও ঘুরে বেড়াচ্ছে অন্দরমহলে।
এই পরিস্থিতি নিয়ে কথা বললেন টলিউডের বেশ কয়েকজন পরিচিত মুখ। কাহিনিকার লীনা গঙ্গোপাধ্যায় জানালেন, যেকোনও পেশাতেই সমস্যা থাকতে পারে এবং সেখানে কাজের উপর তার ছাপ পড়তে বাধ্য। তিনি মনে করেন, দায়িত্বে থাকা সংস্থা থেকে চ্যানেল কর্তৃপক্ষ পর্যন্ত সবাই একসঙ্গে এগিয়ে এলে সমাধান আসবেই। তবে জীতু বা দিতিপ্রিয়া কেউই এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ জানাননি বলেই তাঁর জানা।
অভিনেত্রী স্বস্তিকা দত্তও একই সুরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাঁর মতে, ধারাবাহিক মানে শুধু নায়ক নায়িকা নয়। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছেন অসংখ্য টেকনিশিয়ান, যারা প্রতিদিনের উপার্জনের ওপর নির্ভর করেন। তাই ব্যক্তিগত বিরোধ যদি একটি বড় দলের জীবিকা বিপন্ন করে, তা দুঃখজনক। তাঁর অনুরোধ, মানুষ চাইলে সব সমস্যার সমাধান করতে পারে এবং এখানেও যেন সেই পথেই সবাই এগোন।
‘গৃহপ্রবেশ’ সিরিয়ালের পরিচালক অমিত দাস আবার মনে করছেন, সমস্যার বড় কারণ সমাজমাধ্যম। তাঁর বক্তব্য, এ ধরনের ছোটখাটো মনোমালিন্য শুটিং ফ্লোরেই মিটে যেত, কিন্তু সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় তা বড় আকার নিচ্ছে। এতে টেলিপাড়ার ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাঁর মতে, টেলিভিশনে ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে কিছুই অতিরিক্ত থাকে না, তাই সেগুলি নিয়েও বিরোধের সৃষ্টি হওয়া দুর্ভাগ্যের।
আরও পড়ুনঃ ‘জিতু বড্ড মেয়েদের গায়ে পড়া, প্রাক্তন স্ত্রী ও শাশুড়িকে নিয়ে যেভাবে ঠাট্টা করেছে…যা বুঝলাম বেশিরভাগ দোষ ওর!’– নূরের বক্তব্যের পর এবার আঙুল উঠছে জিতুর দিকেই! দর্শকদের ক্ষোভে সমাজ মাধ্যম তোলপাড়, ‘চিরদিনই’ বিতর্কের নয়া মোড়! সত্যিই কি দিতিপ্রিয়া নির্দোষ? দোষী জিতু?
অভিনেতা ইন্দ্রজিৎ বসু আর কেশসজ্জাশিল্পী হেমা মুন্সিও চাইছেন পরিস্থিতি দ্রুত শান্ত হোক। ইন্দ্রজিৎ বলছেন, বয়সের পার্থক্য কখনোই সমস্যার কারণ নয়, বরং একসঙ্গে বেশি সময় কাটালে মতের অমিল হওয়াই স্বাভাবিক। আর হেমার মন খারাপ দিতিপ্রিয়াকে ছোটবেলা থেকে চেনেন বলে। তিনি মনে করেন, টলিউডের ছোট এই পরিবারে সবাই মিলেমিশে কাজ করুক— এই প্রত্যাশাতেই আছেন সবাই।
