জি বাংলার জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’কে (Chirodini Tumi Je Amar) ঘিরে গত সপ্তাহে থেকে যে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে, তা এখন ধারাবাহিকের গল্পের থেকেও বেশি আলোচনার জন্ম দিচ্ছে। আগে যেখানে দর্শকরা পর্দার মোড় ঘোরানো ঘটনাগুলো নিয়েই উত্তেজিত হতেন, সেখানে এখন তাঁদের নজর সরাসরি দুই প্রধান চরিত্রের ব্যক্তিগত সম্পর্কের দিকে! অভিনয়ের বাইরে গিয়ে দুই শিল্পীর সমস্যার খবর প্রকাশ্যে আসতেই ধারাবাহিকটিকে ঘিরে নতুন বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
এই ধারাবাহিকের মুখ্য অভিনেতা জিতু কমল (Jeetu Kamal) অসুস্থতা কাটিয়ে সেটে ফিরেই জানান, তাঁকে প্রতিনিয়ত সহ অভিনেত্রীর অভিযোগের মুখোমুখি হতে হচ্ছে, যা তাঁকে মানসিকভাবে চাপে ফেলছে। অন্যদিকে, দিতিপ্রিয়া রায়ের আগের মন্তব্য নিয়ে ভুলবোঝাবুঝি এবং তাঁর ক্ষমা চাওয়ার পরেও সম্পর্ক স্বাভাবিক হয়নি বলেই মনে হচ্ছে। নতুন করে আবার খবর ছড়িয়েছে যে, দিতিপ্রিয়া নাকি জিতুর সঙ্গে একই ফ্রেমে দাঁড়াতে অস্বস্তি বোধ করছেন, বিশেষ করে রোম্যান্টিক দৃশ্যে।
ফলে প্রোডাকশনকে নাকি আলাদা শট নিয়ে কাজ চালাতে হচ্ছে। এই জটিলতার জেরে ধারাবাহিকের নিয়মিত দর্শকদের এক অংশ ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। এই পরিস্থিতিতে এক ধরনের অদৃশ্য বিভক্তি তৈরি হয়েছে ভক্তমহলে। কেউ দিতিপ্রিয়ার ওপর ক্ষুব্ধ, মনে করছেন ব্যক্তিগত অস্বস্তি এমনভাবে কাজের জায়গায় টেনে আনা উচিত নয়। আবার কেউ দাবি তুলছেন, জিতুকে ছাড়া তাঁরা ধারাবাহিক দেখতে রাজি নন। তবে আরেক দল দর্শক বলছেন, দোষ শুধু একপক্ষে দেখতে গেলে ভুল হবে।
পেশাদারিত্ব নিয়ে কাজ করার জন্য দু’জনেরই সমান দায়িত্ব থাকে। বিশেষত যখন কাজটা দীর্ঘমেয়াদী ধারাবাহিকের, তখন পারস্পরিক বোঝাপড়া জরুরি। এর মধ্যেই পরিস্থিতি যেন আরও ঘোরালো হয়েছে বাংলাদেশি অভিনেতা নূরের মন্তব্য প্রকাশ্যে আসার পর। তিনি অতীতে ‘রাণী রাসমণি’ ধারাবাহিকে দিতিপ্রিয়ার সঙ্গেই অভিনয় করেছিলেন। তাঁর মতে, সে সময় দিতিপ্রিয়া ছোট ছিলেন বলে কথাবার্তা কম হত। তবে কোনও বিরূপ পরিবেশ তৈরি হয়নি কখনও। নূর আরও জানান, সে সময় দৃশ্য নেওয়া নিয়ে কোনও জটিলতা হয়নি।
এমনকি দিতিপ্রিয়ার মা সেটে উপস্থিত থাকলেও তাঁর সঙ্গে কাজ করা সহজই ছিল। তাঁর এই বক্তব্য প্রকাশ্যে আসতেই দর্শকদের একাংশের দৃষ্টি ঘুরে গেছে পুরোপুরি জিতুর দিকে! তাঁরা ভাবছেন, তাহলে সমস্যার শিকড় কি অন্য কোথাও? সমাজ মাধ্যমে এখন নানা মত। কেউ বলেছেন “একহাতে কখনও তালি বাজে না, জিতুর অনুরাগীরা বড্ড বাড়াবাড়ি করছে। আগে যতগুলো সিরিয়াল করেছে সেই সিরিয়ালে রোমান্টিক দৃশ্য দিতে কোনদিন সমস্যা হয়নি। তাহলে এখানে কেন করছে এটা বোঝার যদি বুদ্ধি থাকতো জিতুর অনুরাগীদের, তাহলে একজন মেয়েকে বাজে কথা বলতো না।
আরও পড়ুনঃ ‘দিতিপ্রিয়ার সঙ্গে কথা কম হত, মায়ের সামনে ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে শুট…’, ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’এ জিতু-দিতিপ্রিয়াকে ঘিরে বিতর্কে মুখ খুললেন ‘রাণী রাসমণি’ খ্যাত অভিনেতা নূর! রানী মা ঝামেলায় জড়িয়েছিলেন তাঁর সঙ্গেও?
এখানে দোষ দুজনের আছে!” আবার অন্যজন বলছেন, “জিতুর সব ধারাবাহিকেই গণ্ডগোল কেন হয়? এর আগেও মিলন তিথি ধারাবাহিকে একই সমস্যা হয়েছিল। আসলে জিতু বড্ড গায়ে পড়া মেয়েদের আরকি।” কেউ তো আবার সরাসরি বলেছেন, “যা বুঝলাম বেশিরভাগ দোষ জিতুর। রাসমণির নায়ক নূর এর কথাগুলো তাই বলছে। দিদি নং ১ এর এক পর্বে জিতু ওনার প্রাক্তন শাশুড়ীকে নিয়ে যেভাবে ঠাট্টা করেছে বা অন্যান্য শোতে যেভাবে প্রাক্তন স্ত্রী নবনীতাকে ট্রীট করতো তাতে বোঝাই যায় উনি মোটেও সুবিধার কেউ নন!” সব মিলিয়ে এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু দিতিপ্রিয়া নন, বরং জিতু কমলই।
