জয়েন গ্রুপ

বাংলা সিরিয়াল

এই মুহূর্তে

‘বড় সুযোগ পেয়ে বিচলিত হলে চলবে না, আমি ভিতরে বাইরে একই মানুষ…সারাজীবন বাবা-মাকে গর্বিত করতে হবে!’ বর্ধমান থেকে বড়পর্দা, দেবের নায়িকা হয়েও শিকড় ভুলতে নারাজ জ্যোতির্ময়ী কুণ্ডু! জানেন, কেমন ছিল তার অভিনেত্রী হওয়ার গল্প?

চেনা পথ ধরে নয় বরং নিজে পথ খুঁজেই অভিনয়ের জগতে পা রেখেছেন অভিনেত্রী ‘জ্যোতির্ময়ী কুণ্ডু’ (Jyotirmoyee Kundu)। বড় পর্দায় সদ্য মুক্তি পাওয়া ‘প্রজাপতি ২’-এ (Prajapati 2) দেবের বিপরীতে তাঁর উপস্থিতি দর্শকের চোখে পড়েছে স্বাভাবিক অভিনয় আর আত্মবিশ্বাসী ব্যক্তিত্বের জন্য। কিন্তু এই জায়গায় পৌঁছনোর গল্পটা রাতারাতি সাফল্যের নয়। ছোট শহর বর্ধমান থেকে শুরু করে কলকাতার কাজের জগতে নিজেকে মানিয়ে নেওয়ার পুরো যাত্রার মধ্যেই লুকিয়ে আছে পরিশ্রম, ধৈর্য আর নিজের ওপর অটুট বিশ্বাস।

বর্ধমানেই বড় হওয়া জ্যোতির্ময়ীর পরিবার বিনোদন জগতের সঙ্গে কোনওভাবেই যুক্ত নয়। ছোটবেলা থেকেই মডেলিংয়ের প্রতি আগ্রহ থাকলেও সেই স্বপ্নকে বাস্তব রূপ দিতে প্রতিদিনের জীবন ছিল বেশ কঠিন। বর্ধমান থেকে কলকাতায় নিয়মিত যাতায়াত, অনিশ্চিত কাজের খোঁজ মিলিয়ে কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়েই তিনি এগিয়েছেন। এই সময়ে তাঁর সবচেয়ে বড় ভরসা ছিলেন বাবা-মা। কোনও রকম সামাজিক চাপ বা ভয় দেখিয়ে তাঁকে থামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা পরিবারের তরফে কখনও করা হয়নি।

বরং তাঁদের সমর্থনই ধীরে ধীরে তাঁকে সাহস জুগিয়েছে। প্রসঙ্গত, ছোট পর্দার ধারাবাহিক ‘বধূয়া’তে প্রথম দর্শকের নজরে আসেন জ্যোতির্ময়ী। ওই কাজের পর কলকাতায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন তিনি। অভিনয় জীবনের শুরুটা যে একেবারেই পরিকল্পিত ছিল, তা নয়। সমাজ মাধ্যমে দেওয়া একটি ছবির সূত্র ধরেই প্রথম ফটোশুটের প্রস্তাব আসে তাঁর কাছে। তখন ইন্ডাস্ট্রির নিয়মকানুন সম্পর্কে খুব বেশি ধারণা না থাকলেও কাজ করতে করতেই আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়।

ধীরে ধীরে সেই পথ ধরেই খুলে যায় বড় পর্দার দরজা। মিঠুন চক্রবর্তী বা দেবের মতো তারকাদের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ আসবে, সেটা তিনি নিজেও ভাবেননি। প্রস্তাবটা প্রথম শুনে যেন বাস্তব আর স্বপ্নের মাঝামাঝি কোথাও দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। তবে শুটিং ফ্লোরে এত বড় ব্যক্তিত্বদের উপস্থিতি তাঁকে বিচলিত করেনি। স্বাভাবিক থাকতে পারাই তাঁর অভিনয়ে সাহায্য করেছে। নিজের অনুভূতি প্রকাশ নিয়ে জ্যোতির্ময়ী বরাবর একটু আলাদা।

খুব বেশি উচ্ছ্বাস বা হতাশা কোনোটাই তিনি প্রকাশ করেন না। তাঁর কাছে স্থির থাকা, নিজের কাজটা ঠিকভাবে করা, এই দুটোই সবচেয়ে জরুরি। তিনি দ্বিচারিতা বোঝেন না, অন্তরে যা আছে সেটা বাইরে বলতেও দ্বিধা নেই তাঁর। উল্লেখ্য, আগামী দিনে ছোটপর্দায় ফিরতে চান তিনি। তাঁর মতে, ছোটপর্দা তাঁর শিকড় আর সেখান থেকেই তিনি পরিচিতি পেয়েছেন। সুযোগ এলে অবশ্যই আবার ধারাবাহিক করবেন। তবে, সাফল্যের আড়ালে লুকিয়ে থেকে অনেক কটাক্ষ!

অন্ধকার থেকে আলোয় আসার পথে নানান কথা, কটাক্ষ যে শুনতে হয়নি, তা নয়। সময় বদলানোর সঙ্গে সঙ্গে মানুষের আচরণও যে বদলে যায়, সেটাও তিনি কাছ থেকে দেখেছেন। তাঁর কথায়, এক সময় যাঁরা খারাপ ইঙ্গিত করত, তারাই আজকে সোনা-মনা বলে কথা বলে। তাদের নামে আজকে কথা বলতে গেলে নিজের পরিবারকেও টেনে আনতে হবে, তাই তিনি এইসব এড়িয়ে চলেন। তবে এইসব অভিজ্ঞতাই তাঁকে বারবার বাস্তবের মাটিতে ফিরিয়ে আনে। জ্যোতির্ময়ীর লক্ষ্য খুব সাধারণ, নিজের কাজ দিয়ে এগিয়ে চলা আর সারাজীবন বাবা-মাকে গর্বিত রাখতে পারা।

Piya Chanda

                 

You cannot copy content of this page