আজকের দিনে পারিবারিক সম্পর্কের চেহারাটা অনেকটাই বদলে গেছে। একসময় যেখানে যৌথ পরিবার ছিল স্বাভাবিক, সেখানে এখন বেশিরভাগ মানুষ ছোট পরিসরের পরিবারেই বড় হচ্ছেন। কর্মব্যস্ত জীবন, আলাদা থাকার অভ্যাস আর একাকিত্ব মিলিয়ে সম্পর্কের মধ্যেও একটা দূরত্ব তৈরি হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রেই মানুষ ধরে নিচ্ছে যে একা থাকাতেই সুখ। কিন্তু বাস্তবটা যে ঠিক উল্টো, সেটাই মনে করিয়ে দিচ্ছেন অভিনেত্রী ‘কোয়েল মল্লিক’ (Koel Mullick)।
কোয়েলের বেড়ে হয়ে ওঠা একেবারে ভিন্ন পরিবেশে। বনেদি যৌথ পরিবারে বড় হওয়ার অভিজ্ঞতা তাঁকে শিখিয়েছে যে সম্পর্ক মানেই সব সময় সমান দেওয়া-নেওয়া হবে এমনটা নয়। তাঁর মতে, কোনও সম্পর্কেই নিখুঁত হিসাব চলে না। প্রত্যাশার ভার বেশি হয়ে গেলেই সমস্যা শুরু হয়। তাই তিনি মনে করেন, কষ্ট জমিয়ে না রেখে ভুল বোঝাবুঝি মিটিয়ে নিলেই সম্পর্কগুলো সুন্দর হয়। এই ভাবনার পেছনে বড় ভূমিকা রয়েছে তাঁর বাবার।
জনপ্রিয় অভিনেতা রঞ্জিত মল্লিক (Ranjit Mullick) শুধুমাত্র পর্দায় নয়, বাস্তব জীবনেও পরিবারকেই সবসময় অগ্রাধিকার দিয়েছেন। কোয়েল নিজেও স্বীকার করেন যে বাবাকে দেখেই তিনি জীবনের ভারসাম্যটা শিখেছেন। সম্প্রতি বাবার প্রসঙ্গে কোয়েল বলেছেন, “বাবা সব সময় ফ্যামিলি পার্সন। বাবাকে দেখেই আমি কাজ আর সংসার ব্যালেন্স করা শিখেছি। যেমন করে ঘর সামলাই, তেমনই ক্যামেরার সামনে ১০০ শতাংশ দিই, যাতে দর্শকদের সময় আর কষ্টের টাকা নষ্ট না হয়।”
তাঁর এই বক্তব্যেই স্পষ্ট, পেশাদারিত্ব আর পারিবারিক দায়িত্ব, দুটোই তাঁর কাছে সমান গুরুত্বপূর্ণ। প্রসঙ্গত, মেয়ের সঙ্গে বাবার সম্পর্কটা বরাবরই খুব কাছের। তবু কোয়েল মানেন যে সব কথা সব সময় বলা যায় না। এখন নিজের সংসারে এসে তিনি বুঝেছেন, নিজের ছোটখাটো কষ্টগুলো সবসময় জাহির করলে, অন্যের কষ্ট আরও বেড়ে যাবে। আজও নিজের প্রয়জন বা বাবা-মাকে অকারণে চিন্তায় ফেলতে চান না তিনি।
আরও পড়ুনঃ ‘ইধিকা নাকি ভবিষ্যতে দেব ছাড়া আর কারও সঙ্গে ছবি করতে চাইছেন না!’ কটা’ক্ষ দর্শকদের! ‘আমি শুধু দেবদার নায়িকা নই’- সমালোচনার সোজাসাপ্টা জবাব দিলেন ইধিকা পাল! ‘খাদান’ থেকে ‘প্রজাপতি ২’ পর্যন্ত সাফল্যের পর ভবিষ্যতে কোন পথে হাঁটবেন অভিনেত্রী?-জানালেন নিজেই!
এই সংযম, এই বোঝাপড়াটাই এসেছে পারিবারিক শিক্ষার মধ্য দিয়ে। আজকের সময়ে যেখানে সামান্য ভুল বোঝাবুঝিতেই সম্পর্ক ভেঙে যায়, সেখানে কোয়েলের এই দৃষ্টিভঙ্গি আলাদা করে গুরুত্ব পায়। প্রযুক্তি এগোচ্ছে, জীবন ছুটছে, কিন্তু সম্পর্ক বাঁচিয়ে রাখতে গেলে সহানুভূতি ও দায়িত্বপালনের গুরুত্ব কমে যাওয়া চলবে না। যৌথ পরিবার হয়তো কমে এসেছে, কিন্তু সম্পর্কের গভীরতা ধরে রাখার দায়িত্ব এখনও আমাদেরই। আর সেই ভারসাম্যটা রপ্ত করতে গেলে, কোয়েলের মতো করে পরিবারকে দেখার চোখটা বদলানোই হতে পারে প্রথম ধাপ।
