বাংলা ইন্ডাস্ট্রির ছোট পর্দা এবং বড় পর্দার একজন জনপ্রিয় এবং পরিচিত মুখ অভিনেতা সুরজিৎ সেন। বহু ছবিতে ভিলেনের চরিত্রে অভিনয় করতে দেখেছে মানুষ। সেই সঙ্গে কিছুদিন আগে পর্যন্ত ছোট পর্দাতেও দাপুটে খলনায়কের চরিত্রে দেখা গিয়েছে এই অভিনেতাকে। তবে বর্তমানে তিনি আর কাজ করছেন না। কেন সেই খবরই নিলাম আমরা তার কাছ থেকে। সেই সঙ্গে বরাবর ভিলেনের চরিত্রে তিনি অভিনয় করে গেছেন কখনো কি তার হিরো হওয়ার ইচ্ছা হয়নি? সেই কথাও প্রকাশ করলেন অভিনেতা।
বরাবর ভিলেনের চরিত্রে অভিনয় করেছেন, কখনো হিরো হতে মন চায়নি?
সুরজিৎ- আমার কাছে কখনোই হিরো হওয়ার প্রপোজাল আসেনি কিন্তু আমি হতে চেয়েছি। এটাই আমার দুর্ভাগ্য। সব ভিলেনের চরিত্রের মধ্যে তিনটি ছবিতে আমার চরিত্র আলাদা রয়েছে। একটা হচ্ছে ‘অমানুষ ২’ ওটাতে আমি আর অনিন্দই নায়ক ছিলাম, সোহম ছিল ভিলেন। তার আগে ‘বিন্দাস’ ছবিটাতে দুটো দৃশ্য ছিল যেখানে আমি টিপিকাল ভিলেন কিন্তু তাছাড়া পুরো সিনেমাটাতেই আমি পজেটিভ ক্যারেক্টার করেছি। শেষ পর্যন্ত পুরো পজেটিভ ছিল এই চরিত্রটি। আর অন্যটি হচ্ছে ‘কেল্লাফতে’ যেখানে কমেডি সঙ্গে একদম অন্যরকম একটি চরিত্রতে অভিনয় করেছিলাম। তাছাড়া সব চরিত্রই আমি করেছি যেগুলি একদম টিপিকাল ভিলেন। তবে অনেকেই ‘ফান্দে পড়িয়া বগা কান্দেরে’ সিনেমাটায় আমার চরিত্রটিকে ভিলেন আখ্যা দিয়েছে, কিন্তু আমার মনে হয় গল্প দেখলে আমার চরিত্রটি নিজের বোনকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে। যখন ‘এক ভিলেন’ মুভিটা বেরোলো সেই সময় আমাকে দেখলেই ছেলে থেকে মেয়ে সকলেই ‘এ ভিলেন’ বলে ডাকত। আমি চিরকালই অভিনেতা হতে চেয়েছিলাম, আমাকে ভিলেন বানিয়ে দেওয়া হয়েছে সেখানে আমার কিছু করার ছিল না। তবে আজও আমার হিরো হওয়ার ইচ্ছা আছে। হয়তো আমাকে দেখতে সুন্দর নয় বলে আমি সেরকম সুযোগ পাইনি। আমি সবাইকে বলি ইরফান খান, নাওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকি এনাদের খুব সুন্দর দেখতে বা বডি কিছুই ছিল না তাও তো এনারা হিরো হন। যেমন এখন পংকজ ত্রিপাঠি। আমি অনেকদিন আগে এক পরিচালককে বলেছিলাম যে তুমি তো এই অভিনেতাকে নিয়ে সিনেমা করছ! তুমি আমাকে নিয়ে করো তাহলে দেখবে একদিন হলেও আমার সিনেমা হলে বেশি চলবে। কিন্তু সে আমাকে বলেছিল তোমাকে মানুষ ভিলেন দেখতে অভ্যস্ত। এখানে স্টেরিওটাইপ হয়ে গেছে যে তুমি ভিলেন তোমাকে ভিলেনের চরিত্রই দেওয়া হবে।
এত নতুন নতুন সিরিয়াল আসছে তবু আপনি এই মুহূর্তে কোনো ধারাবাহিকে নেই। আপনার কি মনে হয় এর জন্য টলিউডের রাজনীতি দায়ী?
সুরজিৎ- হ্যাঁ রাজনীতি তো রয়েছে তার থেকেও বড় হচ্ছে অন্যকিছু। আমরা যেটাকে মেগা সিরিয়াল বলি সেগুলো কি আদৌ এখন হয়? মেগা মানে যে সিরিয়ালগুলো ৫-৬ বছর করে চলবে। কিন্তু সেখানে আজকাল দেখা যাচ্ছে সিরিয়াল তিন থেকে ছয় মাস চলছে। সেগুলো কী করে মেগা সিরিয়াল হয়? আসছে চলে যাচ্ছে। আর এখানে তারাই কাজ পাচ্ছে যাদের প্রডিউসার এবং ডিরেক্টরদের সঙ্গে ভালো রেপো রয়েছে বা বলা যেতে পারে যারা খুবই পরিচিত। মানে যাদের ইন্ডাস্ট্রিতে অনেক চেনা জানা রয়েছে বা আগের জেনারেশনের কেউ ইন্ডাস্ট্রি থেকে উঠে এসেছেন এবং সেই সঙ্গে নিয়মিত সবাইকে গিফট দিয়ে যেতে হবে। চ্যানেলের উপর তলার মানুষদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখতে হবে। কিন্তু আমি এগুলো পারি না, তাই জন্যই হয়তো কাজ পাই না। এছাড়া ইন্ডাস্ট্রিতে সন্ধ্যের পরে বিশেষ আসর বসে সেখানে আমি কখনোই নিজেকে বসাতে পারিনি। বা সেই জায়গার খোঁজ পাইনি। আমি কখনো চেষ্টা করিনি আর কখনো কারো সাথে রেপো করতেও পারিনি তাই হয়তো কাজ পাই না।
মরণের অরণ্য আসছে… পরিচালক আপনি.. এই সম্পর্কে একটু বলুন
সুরজিৎ – এই গল্পটি হতে চলেছে পুরোপুরি থ্রিলার এবং ভৌতিক। পরপর তিনটি গল্প হতে চলেছে তিনটিই হতে চলেছে থ্রিলার। একটি ‘মরণের অরণ্য’ এবং আরেকটি হচ্ছে ‘আয়নার ওপারে’ এছাড়া যেটি হতে চলেছে সেটির গল্প হিন্দির করবা চৌথের উপরে। মরণের অরণ্য গল্পটা হতে চলেছে জঙ্গলের। কিছুটা সিরিজ টাইপের হতে চলেছে এগুলি। প্রথম গল্পটির স্ক্রিপ্ট লেখা পুরোপুরি কমপ্লিট। শুধু সময়ের অভাবে এবং জায়গা এখনো ঠিক হয়নি বলে শুটিং শুরু হচ্ছে না খুব তাড়াতাড়ি শুটিং শুরু হবে।