ধনধান্য অডিটোরিয়ামের ঝলমলে উদ্বোধনী সন্ধ্যায় পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়কে মঞ্চে দেখে অনেকের মনেই যেন একই প্রশ্ন— এ কি তবে তাঁর প্রত্যাবর্তনের শুরু? গত কয়েক মাসে তাঁকে দেখা গিয়েছে নানা উৎসব ও প্রমোশনাল ইভেন্টে— পুজোর ফিতে কাটা থেকে শুরু করে আমেরিকার পুরস্কার মঞ্চ— কিন্তু বড় পড়দার আলো থেকে ছিলেন অনেকটাই দূরে।
সবাই জানে, আরজিকর হাসপাতালের ঘটনায় সরকারের অবস্থানের বিরুদ্ধে পথে নেমেছিলেন পরমব্রত। ফেডারেশনের বিরুদ্ধেও মামলা করেছিলেন প্রকাশ্যে। সেই প্রতিবাদের ফলস্বরূপই নাকি তাঁর কর্মজীবন থমকে যায়। শুধু তিনিই নন— অনির্বাণ ভট্টাচার্য সহ আরও কয়েক জন শিল্পীর কাজেও নেমে আসে অঘোষিত নিষেধাজ্ঞা। যে DAEI-র হাত ধরে তাঁরা একসময় ঐক্যবদ্ধ লড়াই করেছিলেন, সেই সংগঠনেই পরে দেখা দেয় ভাঙন।
তবে গত দু’মাসে পাল্টাতে শুরু করেছে ছবিটা— অন্তত পরমের জন্য। রেড রোড কার্নিভালের মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রীর পাশে হাসিমুখে দেখা যায় তাঁকে, যিশুর সঙ্গে নাচও করেন। এক সাক্ষাৎকারে শোনা যায় মিলেমিশে যাওয়ার আশাবাদী সুর— “কিছু ভুল বোঝাবুঝি ছিল, সব ঠিক হয়ে যাবে।” আর ঠিক তার পরেই— কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের মঞ্চে জুন মালিয়ার সঙ্গে সঞ্চালকের আসনে পরমব্রত! মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসাও করেন প্রকাশ্যে।
সূত্রের খবর, উৎসবের সন্ধ্যাতেই অরূপ বিশ্বাসের সঙ্গে তাঁর দীর্ঘ সময় কথাবার্তা হয়েছে। উপস্থিত ছিলেন অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়, যিশু, অরিন্দম শীল— আরও অনেকে। এটাই কি বরফ গলার প্রথম ধাপ? যদিও ফেডারেশনের অনেকেই এ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস পর্যন্ত উৎসব মঞ্চ থেকে দূরে থেকেছেন— যা আরও বাড়িয়েছে গুঞ্জন।\
আরও পড়ুনঃ “একটা ছোট ভুলই নায়কের পরিচয় বদলে দেয়!” সোশ্যাল মিডিয়ার ট্রোলিং নিয়ে বিস্ফো’রক মন্তব্য ‘গৃহপ্রবেশ’-এর আদৃত অর্থাৎ সুস্মিত মুখার্জির, ক্ষোভ উগরে দিলেন নেটিজেনদের নিষ্ঠুর সমালোচনার বিরুদ্ধে! “দিনরাত পরিশ্রম করেও শেষমেশ পেতে হয় তিরস্কার, আজকাল ট্রোলিং যেন জীবনেরই অংশ!”-জানালেন অভিনেতা!
এই পরিবর্তনের স্রোতে অনেকেই কাজে ফিরছেন। সুদেষ্ণা রায়ের মতো অনেকে এখন সরকারি অনুষ্ঠানে নিয়মিত। কিন্তু অনির্বাণ ভট্টাচার্য? তিনি এখনও দূরত্বেই। তাই টলিপাড়ার চর্চা— পরমের সঙ্গে কি শিগগিরই ফিরবেন অনির্বাণও? সরকারি মঞ্চে তাঁকেও কি দেখা যাবে মাইক্রোফোন হাতে? টলিউডের সব মনোমালিন্য কি সত্যিই মুছে যাবে? উত্তর দেবে সময়, কিন্তু হাওয়া বদলের গন্ধ যে ইতিমধ্যেই ঠিকরে পড়ছে— তা আর অস্বীকার করার উপায় নেই!
