টলিউডের ইতিহাসে এমন কিছু চলচ্চিত্র আছে যেগুলো সময়ের সীমানা ছাপিয়ে আজও দর্শকের হৃদয়ে সমানভাবে জায়গা করে নিয়েছে। ছোটো বেলার বন্ধুর মতো সেই সিনেমাগুলো প্রতি প্রজন্মেই নতুন করে অনুভব করা যায়। তাদের মধ্যেই অন্যতম একটি নাম — ‘মৌচাক’ (Mouchak)। উত্তম কুমার এবং রঞ্জিত মল্লিক অভিনীত এই ছবিটি আজও বাঙালির হাসি-ঠাট্টা, প্রেম এবং আবেগের অবিচ্ছেদ্য অংশ।
রঞ্জিত মল্লিক, টলিউডের এক অনন্য অভিনেতা, যাঁর অভিনয় জীবনের শুরুতেই তিনি দর্শকের ভালোবাসা কুড়িয়েছিলেন। তাঁর স্বাভাবিক সংলাপভঙ্গি, সংযত অভিনয় এবং সংবেদনশীল অভিব্যক্তি তাঁকে আজও সকলের কাছে প্রিয় করে রেখেছে। ‘সাত পাকে বাঁধা’, ‘চৌকাঠ’ থেকে ‘মৌচাক’— প্রতিটি চরিত্রে তিনি নিজের স্বাক্ষর রেখে গেছেন।
দীর্ঘদিন পর সম্প্রতি রঞ্জিত মল্লিককে দেখা গেছে ‘স্বার্থপর’ সিনেমায়। নতুন প্রজন্মের অভিনেতাদের সঙ্গে কাজ করে তিনি জানিয়েছেন, এখনও পর্দায় ফেরার উত্তেজনা আগের মতোই থাকে। নিজের অভিনয় জীবনের অভিজ্ঞতা নিয়েও তিনি প্রায়ই খোলাখুলি কথা বলেন, আর সেখানেই উঠে আসে টলিউডের সোনালি যুগের নানা অজানা গল্প।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে অভিনেতা জানিয়েছেন এক হৃদয়ছোঁয়া ঘটনা। একদিন এক রিক্সাচালকের মেয়ে তাঁকে বলেছিল, “বাবা আজ রিক্সা চালাবে না, কারণ সন্ধেবেলা ‘মৌচাক’ দেখবে।” এই কথাটি শুনে অভিনেতা আবেগে ভেসে যান। তাঁর মতে, “একজন সাধারণ মানুষের জীবনে সিনেমা যদি এমন আনন্দ দিতে পারে, তবে সেটাই শিল্পীর সবচেয়ে বড় পুরস্কার।”
আরও পড়ুনঃ “এখন শুধরেছে, মামদোবাজি করেই কাজ চলত…পরমের মতো অভিনেতারা দুঃস্বপ্ন!”— সহ-অভিনেতা রজতাভ দত্তের অকপট স্বীকারোক্তি! পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে কেন এমন তির্যক মন্তব্য করলেন তিনি? আসল ঘটনা কী?
রঞ্জিত মল্লিকের এই মন্তব্যই যেন প্রমাণ করে, ‘মৌচাক’ শুধু একটি সিনেমা নয়—এটি এক প্রজন্মের অনুভূতি। উত্তম কুমারের সঙ্গে তাঁর সেই স্মৃতি আজও টলিউডের ঐতিহ্যের অংশ। দশকের পর দশক পেরিয়েও ‘মৌচাক’-এর জনপ্রিয়তা আজও অটুট, আর সেই কারণেই এটি থেকে যায় বাঙালির হৃদয়ে এক কালজয়ী সিনেমা হিসেবে।
