জয়েন গ্রুপ

বাংলা সিরিয়াল

এই মুহূর্তে

মাতৃত্ব শুধু জন্মদানের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, ভালোবাসা ও যত্ন তাকে মানুষ করাই আসল মাতৃত্ব! আমিও ‘মা’ তাই বুঝি! অকপট ঋতাভরী

বাংলা চলচ্চিত্রের অন্যতম প্রতিভাবান অভিনেত্রী ঋতাভরী চক্রবর্তী (Ritabhari Chakraborty) বরাবরই নিজের অভিনয় দক্ষতা দিয়ে দর্শকদের মুগ্ধ করেছেন। তার অভিনীত চরিত্রগুলোতে বৈচিত্র্য স্পষ্ট, যা তাকে ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম ব্যতিক্রমী অভিনেত্রী হিসেবে প্রতিষ্ঠা দিয়েছে। কখনো সামাজিক বার্তা নির্ভর গল্প, কখনো হালকা মেজাজের ছবি—সব ক্ষেত্রেই তিনি নিজের স্বকীয়তা বজায় রেখেছেন। এবার তিনি ফিরছেন, মৈনাক ভৌমিকের ‘গৃহস্থ’ (Grihostho) নিয়ে।

মৈনাক ভৌমিকের পরিচালনায় এর আগে “মিনি” ছবিতে মিমি চক্রবর্তী অভিনয় করেছিলেন, যা দুই অসমবয়সী নারীর বন্ধুত্ব ও নারীবাদী বিষয়বস্তু নিয়ে নির্মিত হয়েছিল। “গৃহস্থ” ছবিতেও নারীর আত্মপরিচয় ও পারিবারিক দায়িত্বের মধ্যে সমন্বয় নিয়ে কাজ করা হয়েছে। সিনেমা জগতে বর্তমানে পরিবর্তনের হাওয়া বইছে। বিষয়বস্তু নির্বাচনের ক্ষেত্রে নির্মাতারা দর্শকদের রুচি অনুযায়ী নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে ভাবছেন। এই পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ঋতাভরীও নিজের কাজের ধারা বদলাচ্ছেন।

এই ছবির প্রসঙ্গেই যখন তাঁকে এক সংবাদমাধ্যমের তরফ থেকে জানতে চাওয়া হয় তার নিজস্ব গৃহস্থের কথা, অভিনেত্রী যখন জানান– ঋতাভরী চক্রবর্তী এমন একটি বাড়ি পছন্দ করেন, যা শুধু সাজানো-গোছানোই নয়, বরং যেখানে ভালোবাসার ছোঁয়া স্পষ্ট থাকবে। তিনি চান বাড়ির প্রতিটি কোণ যেন পরিবারের সুখী মুহূর্তের সাক্ষী হয়ে থাকে। গাছপালায় ঘেরা পরিবেশ, পরিবারের সদস্যদের প্রিয় রঙের পর্দা, কাছের মানুষের দেওয়া উপহার কিংবা ডাইনিং টেবিলে রাখা ভালোবাসার ফুলের তোড়া—এসবই তার স্বপ্নের বাড়ির অংশ।

তার মতে, একটি বাড়ি শুধু বিলাসবহুল হলে চলে না, সেখানে থাকতে হবে অনুভূতি, যা দেখলেই বোঝা যায় এখানে এক সুখী পরিবার বাস করে। তিনি আরও বলেন, মাতৃত্ব কেবল জন্মদানের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, ভালোবাসা ও যত্ন দিয়ে সন্তান মানুষ করাই আসল মাতৃত্ব। নিজের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি জানান, বধির ও মুক ৮৬ জন শিশুর দায়িত্ব নেওয়া তার জন্য এক বড় চ্যালেঞ্জ, কারণ তাদের অনুভূতি বুঝে নেওয়াটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সিঙ্গেল মাদারের সন্তান হিসেবে বড় হওয়ার অভিজ্ঞতা শেয়ার করে তিনি বলেন, মায়ের কঠিন লড়াই তাকে শক্তি জুগিয়েছে, যদিও বাবার অভাব জীবনের একটি শূন্যতা তৈরি করেছে।

তবে ওয়ার্কিং মাদারদের প্রতি তার গভীর শ্রদ্ধা আছে, কারণ তারা সংসার, সন্তান ও পেশাগত জীবন একসঙ্গে সামলান, যা সত্যিই প্রশংসার যোগ্য। এরপর সিনেমার প্লট জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন– একসময় সুগঠিত ও পরিপাটি জীবন ছিল তার। স্কুল কাউন্সেলর হিসেবে কাজ করতেন, ছিলেন হাসিখুশি ও সহানুভূতিশীল। কিন্তু একের পর এক ট্রমার ধাক্কায় তিনি বদলে যান। এখন তিনি চরম প্যারানয়েড, সর্বদা সন্তানের নিরাপত্তা নিয়ে আতঙ্কিত। হাত ধোয়া, পরিচ্ছন্নতার কঠোর নিয়ম মেনে চলা, স্বামীকেও দূরে রাখা—এসবই তার মানসিক অস্থিরতার প্রকাশ।

সমাজ তাকে ‘পাগল’ বলে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে, কিন্তু তার মনে একটাই ভয়—কখন যেন কোনো ভয়ঙ্কর কিছু ঘটে যায়। এই আতঙ্কের মধ্যেই একদিন তিনি একটি খুন হতে দেখেন। দুর্ভাগ্যবশত, কেউ তার কথা বিশ্বাস করে না—না পাড়ার লোক, না পুলিশ। কিন্তু হত্যাকাণ্ডের সাক্ষী হয়ে যাওয়া তাকে আরও কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি দাঁড় করায়। যে বাড়িতে খুন হয়েছে, সেখানে অনুশা নামে এক মেয়ে থাকে, যার জীবন এখন বিপদের মুখে। সমাজের অবিশ্বাস, নিজের মানসিক অবস্থা—সবকিছুকে উপেক্ষা করে তিনি সত্য উন্মোচনের সিদ্ধান্ত নেন।

এবার লড়াই শুধু তার নিজের জন্য নয়, অনুশাকেও রক্ষা করতে হবে, কারণ সত্য উদ্ঘাটনের দায়িত্ব এখন তার একার। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য আগামী ৭ ই মার্চ বড় পর্দায় মুক্তি পেতে চলেছে ঋতাভরীর ‘গৃহস্থ’। দেখার বিষয় বরাবরের মতো অভিনয় দিয়ে ঋতাভরী দর্শকদের মুগ্ধ করতে পারেন কিনা।

Piya Chanda