স্মৃতি সবসময় ঠিক পাশেই ঘুরে বেড়ায়। মানুষ না থাকলেও তাঁর অভ্যাস, তাঁর ভালবাসার ছায়া, ছোট ছোট মুহূর্তগুলো কাছেই থাকে। দুর্গাপুজোর সময় যেন কাছের মানুষগুলোর এই অনুপস্থিতি যেন আরও বেশি করে টের পাওয়া যায়। বিশেষ করে দেবীপক্ষের (Mahalaya) সূচনাই যেখানে পিতৃপুরুষদের জল দানের মাধ্যমে হয়। এই বছর ঠিক তেমনটাই শুন্যতা অনুভব করছেন ‘ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত’ (Rituparna Sengupta)। মা নেই-এই বাস্তবতাকে মেনে নেওয়া সহজ নয় তাঁর কাছে।
চারিদিকে ঢাকার আওয়াজ, আগমনী গান, আলোয় ঢেকে গেছে যতদূর চোখ যায়— এত কিছুর ভিড়েও যেন কোথাও একটুকরো অন্ধকার জমেছে অভিনেত্রীর মনে। ঋতুপর্ণার কাছে এত দিন ধরে পুজো মানেই ছিল বাড়ির সকলে মিলে খাওয়া-দাওয়া, হাসি-ঠাট্টা, ঠাকুর দেখা, আর সবকিছুর কেন্দ্রে থাকতেন মা। সব কাজের ব্যস্ততার মধ্যেও পুজোর চারটে দিন আলাদা করে সময় দিতেন অভিনেত্রী। শুধু মা’র জন্যই সেই সময়টুকু তুলে রাখতেন তিনি।
প্রতিবার মায়ের একটাই প্রশ্ন থাকত-“কবে আসবি?” এই ছোট্ট প্রশ্নটাই এখন যেন গলার কাঁটা হয়ে রয়ে গিয়েছে তাঁর। গত কয়েক মাস ধরে একটার পর একটা ছবি মুক্তি পেয়েছে ঋতুপর্ণার। তিনি চেষ্টা করেছেন কাজের মধ্যে ডুবে থাকতে, নিজেকে ব্যস্ত রাখার। কিন্তু উৎসবের এই সময়ে সবকিছু ঠেলে ওপরে উঠে এসেছে মায়ের অভাব। একসময় মা নিজে পছন্দ করে অভিনেত্রীর জন্য পুজোর শাড়ি কিনতেন, সেই শাড়ি আজ শুধু স্মৃতির একটা রঙিন টুকরো হয়ে গেছে।
আক্ষেপ করে তাই তিনি বলেলন, “আর কেউ বলবে না, এই শাড়িটা ভালো লাগছে তোর?” প্রসঙ্গত, বাবার প্রয়াণের পর অভিনেত্রীর ভাই মহালয়ার দিন তর্পণ করতেন। এবার থেকে কি তিনিও সেই পথে হাঁটবেন? প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এখনও ঠিক মেনে নিতে পারছেন না যে মা নেই। সেই ‘তর্পণ’ শব্দটাও যেন তাঁকে ব্যথা দিচ্ছে। সময় হয়তো একদিন সেই জায়গায় নিয়ে যাবে, কিন্তু এখনই তা সম্ভব নয় বলেই মনে করছেন ঋতুপর্ণা।
আরও পড়ুনঃ শাস্তির দাবিতে কড়া অবস্থান রায়ানের! পারুলের পায়ে পড়ে ক্ষমা ভিক্ষা টগরের, গ্রেফতারের মুখে মৌসুমী-শিরীন, শেষ মুহূর্তে পারুলের অপ্রত্যাশিত সিদ্ধান্তে বদলে গেল সব!
এখন মায়ের স্মৃতি আঁকড়ে প্রতিদিন কাটছে তাঁর, আর সে কারণেই এবার পুজোটা তিনি বিদেশেই কাটাতে চাইছেন-অন্য পরিবেশে, অন্য রকমের এক শান্তিতে। ঋতুপর্ণা একজন জনপ্রিয় অভিনেত্রী, কিন্তু তার থেকেও বড় কথা তিনি একজন মেয়ে, একজন মায়ের মেয়ে। যে কোনও কাজের ব্যস্ততা মায়ের অভাব পূরণ করতে পারে না। জীবনের প্রথম বন্ধুকে হারিয়ে তাই, অভিনেত্রীর এবারের পুজো যেন একটু বেশি নিঃসঙ্গ।