ভালোবাসা কাকে বলে? এর নিশ্চয়ই আলাদা করে কোনও সংজ্ঞা হয় না। সুখে-দুঃখে, ভালোমন্দে প্রিয়জনের পাশে থাকা, তাকে আগলে রাখা, ভরসা দেওয়া। এটা বোঝানো যে, ‘হাত বাড়ালেই পাবে ভালোবাসার মানুষকে। ভয় নেই, সঙ্গে আছি’। আর এই ভরসা দেওয়ার কাজটাই নিষ্ঠার সঙ্গে করে গিয়েছিলেন সকলের সকলের প্রিয় অভিনেতা সব্যসাচী চৌধুরী (Sabyasachi Chowdhury)।
অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মা’র জন্য সব্যসাচী চৌধুরী যা করেছেন তা চোখে আঙুল দিয়ে বারবার দেখিয়ে দেয় প্রকৃত ভালোবাসা কাকে বলে। তাদের ভালোবাসা যে কতটা গভীর ছিল সেটা ক্রমাগতই বুঝিয়ে গেছেন। তাদের ভালোবাসা তাদের গভীর প্রেম দেখে চোখ ভিজেছে বাঙালির। আর সেই প্রেম যখন মৃত্যুর সামনে ভেঙে পড়েছে তখনও নিজেদের আবেগ সঙ্গে রাখতে পারেনি তাদের অগুণিত ভক্ত-অনুরাগীরা।
উল্লেখ্য, গত বছর ২০শে নভেম্বর ১২:৫৯ মিনিটে প্রয়াত হন অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মা। মাত্র ২৪ বছর বয়সে সবাইকে ছেড়ে চলে যান প্রাণশক্তিতে ভরপুর এই অভিনেত্রী। বারংবার মৃত্যুকে জয় করে ফিরে এসেছিলেন তিনি। আর তাই এই বারও তার ফিরে আসার জন্য প্রার্থনা করেছিলেন সবাই। কিন্তু সবার সব প্রার্থনা বিফলে দিয়ে প্রয়াত হন তিনি। অভিনেত্রীর অকাল মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ হয়ে পড়ে গোটা বাংলা।
ক্যান্সার জয় করে ফিরেছিলেন তিনি। কিন্তু গতবছর ১লা নভেম্বর হঠাৎই ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছিলেন অভিনেত্রী। তাকে হাওড়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়! সেখানেই অস্ত্রপচার হয় অভিনেত্রীর। এরপর লাগাতার ব্রেন স্ট্রোক ও হৃদরোগ আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হন তিনি। ঐন্দ্রিলাকে প্রাণ দিয়ে ভালবাসতেন সব্যসাচী। আর তাই ঐন্দ্রিলার মৃত্যুর পর সব্যসাচীর জন্য কেঁদে ফেলেছিল গোটা বাংলা।
আর আজ ঐন্দ্রিলাকে ছাড়াই এই বছর পুজো কাটালেন সব্যসাচী। যে মানুষটা গত বছর তার হাত ধরে ঠাকুর দেখেছিল আজ সেই মানুষটাই কোথাও নেই। এই মুহূর্তে স্টার জলসার পর্দায় ‘রামপ্রসাদ’ ধারাবাহিকে দেখা যাচ্ছে অভিনেতাকে। কিন্তু কোনভাবেই ঐন্দ্রিলাকে আজও ভুলতে পারেননি তিনি।
এই প্রসঙ্গে অভিনেতা জানিয়েছেন, মানুষ চলে গেলেও সেই মানুষটা মনের কোনও কোনও অংশে রয়ে যায়। আর প্রত্যেকেই ঘটনাটা নিজেদের মতো করে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন, শোক কাটিয়ে ওঠেন। আমিও আমার মতো করে সামলে নিচ্ছি। আমি একই আছি। এ বছর যে খুব বেশি ফারাক হয়েছে তা নয়।
একইসঙ্গে অভিনেতা বলেছেন, ‘আমি বরাবরই ভীষণ রকম অন্তর্মুখী। বেশি কথা বলতে পারি না। কিন্তু আমি পারিনা এটা ভাবতে শুরু করলে তো কিছুই করা যাবে না। আমার সঙ্গে ঐন্দ্রিলার প্রথম দেখা হয়েছিল স্টুডিও পাড়াতেই। কিন্তু ও নেই বলে আমি স্টুডিওতে আসি না এমনটা তো নয়। কখনও কাজ করব না এমনটাও নয়। আমি কাজ করছি। পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি।