অভিনয় জগতে এক প্রশ্ন সেই শুরুর দিন থেকে আজও ঘুরেফিরে আসে— চেহারাই কি নায়িকা হওয়ার প্রথম শর্ত? বহু প্রতিভাবান অভিনেত্রীর মতো ‘শতাক্ষী নন্দী’ (Satakshi Nandy) কেও সেই প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছে। হ্যাঁ, ‘অভিশপ্ত’ (Abhishapto) ওয়েব সিরিজে অপর্ণার পাগলি ননদ! মনে আছে তো? ‘বিরহী’ ওয়েব সিরিজেও রাধার চরিত্রে তাঁর অভিনয় নজর কাড়লেও, একাধিকবার নাকি শুনতে হয়েছে তিনি নাকি নায়িকা হওয়ার জন্য যথেষ্ট সুন্দর নন! অথচ তাঁর অভিনয় দক্ষতা নিয়ে কোনও প্রশ্ন তোলার জায়গা নেই।
সম্প্রতি ‘কাল্পনিক’ ছবিতে সাংবাদিকের চরিত্রে অভিনয় করে তিনি আবারও প্রমাণ করেন, তাঁর অভিনয়ের পরিধি কতটা বিস্তৃত। ছবিতে শতাক্ষীর চরিত্র এক রহস্য উদ্ঘাটনের জাল বুনতে গিয়ে নিজেই জড়িয়ে পড়ে ঝুঁকিপূর্ণ এক অবস্থায়। এই চরিত্র ফুটিয়ে তোলার জন্য তাঁকে নাকি শিখতে হয়েছে মোটরবাইক চালানোও। বাস্তব জীবনের সঙ্গে এই চরিত্রের রয়েছে মিল বলেই মনে করেন তিনি। কারণ শতাক্ষী নিজেও বহু বাধা ডিঙিয়ে পৌঁছেছেন আজকের জায়গায়।
কাজের প্রতি তাঁর নিষ্ঠা এবং প্রস্তুতির কোনও ঘাটতি থাকে না। কিন্তু সমস্যা এসেছে অন্য জায়গা থেকে, বাহ্যিক সৌন্দর্য এবং ‘নায়িকা-মাফিক মুখ’ না থাকা নিয়ে বার বার প্রশ্ন তোলা হয়েছে। শতাক্ষী অকপটভাবে স্বীকার করেছেন, ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ পাওয়ার ক্ষেত্রে শুধু অভিনয় দক্ষতা যথেষ্ট নয়। কে কার সঙ্গে কতটা মিশে চলতে পারে, কার সোশ্যাল সার্কেল কত বড়, তাও কাজের সুযোগ নির্ধারণ করে। শতাক্ষীর ভাষায়, “জনসংযোগ, সম্পর্ক রাখা, এগুলিও আজকের দিনে বড় ফ্যাক্টর। শুধু অভিনয় জানলেই হবে না।
এই যুক্তির ভেতরে একটা যে বাস্তবতা আছে, সেটা ইন্ডাস্ট্রির বহু মানুষ মেনে নেন, কিন্তু প্রকাশ্যে বলেন না।” নাট্যমঞ্চ থেকে তাঁর অভিনয় যাত্রার শুরু। আজ তিনি ওয়েব সিরিজ, ছবিতেও পরিচিত মুখ। তবে অভিনয়ের বাইরে ব্যক্তিগত জীবনেও একাধিক সিদ্ধান্তের জন্য তাঁকে মূল্য দিতে হয়েছে। বহুবার প্রস্তাব এলেও, কাজের বাইরে ‘ঘনিষ্ঠতা’ তৈরিতে উৎসাহী না হওয়ায় তাঁকে কাজ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ ইউনিভার্সিটির পরীক্ষায় টপার পারুল-রায়ান! নিজের হাতে দাদুকে মিষ্টিমুখ করালো রায়ান! ঠাকুমার অসুস্থতার মুখোশ খুলতেই ক্ষোভে ফেটে পড়ল পারুল! এবার সরাসরি উকিলের কাছে তাঁরা! তবে কি আর এক হবে না পারুল-রায়ান?
শতাক্ষী স্পষ্ট করে বলেন, “আমি কাজের পর বাড়ি ফিরি, আলাদা করে বন্ধুত্ব রক্ষা করতে যেখানে সেখানে সবার সাথে যাই না, এই কারণেই অনেক কাজ আর আসেনি।” তবুও অভিনয়ের প্রতি তাঁর ভালোবাসা অটুট। সামাজিক হতে জানেন তিনি, তবে কার সঙ্গে কীভাবে মিশবেন, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন নিজেই। নিজের অবস্থান, ভাবনা এবং লড়াইয়ের কথা সাহসের সঙ্গে তুলে ধরাই তাঁকে আলাদা করে চেনায় এক আত্মবিশ্বাসী অভিনেত্রী হিসেবে।