ঋতুস্রাবের (Menstruation) আগের সেই সময়টা যেন নারীদের শরীর এবং মনের জন্য এক যুদ্ধের সমান, আর একেই বলে ‘পিএমএস’ —প্রিমেনস্ট্রুয়াল সিনড্রোম (PMS)। আর এবার সেই অভিজ্ঞতার কথাই সাহসের সঙ্গে সকলের সামনে তুলে ধরলেন জনপ্রিয় গায়িকা ‘ইমন চক্রবর্তী’ (Iman Chakraborty) । সামাজিক মাধ্যমে নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে তিনি জানালেন, বহু বছর ধরে তিনি পিএমএস-এর সমস্যায় ভুগছেন। এই সময়ে শারীরিক এবং মানসিক অস্বস্তি তাঁর কাছে নতুন কিছু নয়, বরং এই পর্যায়টা কাটানোর জন্য প্রতিবারই তাঁকে নিজেকে মানিয়ে নিতে হয় নতুন করে।
এদিন নিজের সমাজ মাধ্যমের পাতায় তিনি লেখেন, “পিএমএস এক বড় সমস্যা। আমিও দীর্ঘদিন ধরে এর মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। ধ্যান, ব্যায়াম, ভালো খাওয়াদাওয়া—সবই সাহায্য করে। তবে কখনও যদি কিছু করতে না চান, বিশ্রাম নিন। আমি জানি, আমি এর সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারব। আপনারাও চেষ্টা করলে পারবেন, সকল মেয়েদের জন্য শুভকামনা।” ইমনের মতে, পিএমএস মেয়েদের জন্য এক গুরুতর বিষয়, যেটি যথাযথ গুরুত্ব পাওয়া উচিত। নিজের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বুঝেছেন—শুধু ওষুধ বা ঘরোয়া টোটকায় হয়না।
নিজের শরীর ও মনকে বুঝে নেওয়াই এই সময়ে সবচেয়ে জরুরি। তাই তিনি নিজের খাদ্যাভ্যাসে এনেছেন পরিবর্তন, শুরু করেছেন নিয়মিত শরীরচর্চা এবং ধ্যানের অভ্যাসও। কিন্তু তবুও এই সমস্যা একেবারে বিদায় নেয়নি। সেই কারণেই তিনি সকল মেয়েদের উদ্দেশে এই বার্তা দিয়েছেন। গায়িকার এই পোস্টে বহু নেটিজেন সহমত জানিয়েছেন। কেউ কেউ নিজেদের অভিজ্ঞতাও ভাগ করে নিয়েছেন। একাধিক মানুষ মন্তব্য করেছেন, কীভাবে পিএমএস তাঁদের মুড বদলে দেয়, বিষণ্ণতা বাড়িয়ে তোলে এবং দৈনন্দিন জীবনে ব্যাঘাত ঘটায়।
বিশেষ করে যাঁদের মধ্যে ডিপ্রেশনের প্রবণতা রয়েছে, তাঁদের জন্য এই সময়টা আরও কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। অথচ সমাজে এখনও এই বিষয়টিকে নিয়ে খোলাখুলি আলোচনা তেমন হয় না। তাহলে ডাক্তারি মতে কি এই পিএমএস? চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, বেশিরভাগ মহিলাই ঋতুস্রাবের আগে শারীরিক-মানসিক নানা রকম পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যান। মাথাব্যথা, পেট ফাঁপা, কান্না পাওয়া, হাড়ে ব্যথা, মন খারাপ—এই সবই পিএমএস-এর উপসর্গ, ৩০ বছরের আশেপাশের বয়সেই এই সমস্যা বেশি দেখা দেয়।
আরও পড়ুনঃ “ছেলেকে একা ছাড়তে পারব না! ব্রেস্টফিডিং চলবে, সঙ্গে শ্যুটিংও”— ছোট্ট অগ্নিদেবকে নিয়েই সেটে ফিরছেন রূপসা! মাতৃত্ব ও কেরিয়ার একসঙ্গে সামলানোর সিদ্ধান্তে প্রশংসায় পঞ্চমুখ নেটপাড়া!
তবে সকলের ক্ষেত্রে এর তীব্রতা একরকম হয় না। কারও ক্ষেত্রে এতটাই অসহ্য হয়ে ওঠে যে কাজের জায়গা বা স্কুল পর্যন্ত মিস করতে হয়। তবে পিএমএস-এর কোনও স্থায়ী ওষুধ না থাকলেও নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, ব্যায়াম এবং সঠিক খাওয়াদাওয়ার মাধ্যমে অনেকাংশে এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। শরীরচর্চা এবং মেডিটেশনও মানসিক ভারসাম্য রক্ষা করতে সাহায্য করে। সমস্যা বাড়লে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। ইমনের মত সাহসী তারকারা যখন এই বিষয়ে খোলাখুলি কথা বলেন, তখন সাধারণ নারীরাও সাহস পান তাঁদের সমস্যাগুলি নিয়ে সামনে আসতে।