জয়েন গ্রুপ

বাংলা সিরিয়াল

এই মুহূর্তে

“দীপিকার অনেক আগে মা হয়েছি, তবু কাজ থেকে বাদ পড়িনি!” “কাজের সময়সূচী আমিই ঠিক করি, সবাই আমার শর্ত মেনেই চলেন!”— শুভশ্রীর তির্যক মন্তব্যে তুঙ্গে বিতর্ক! টলিউড কি সত্যিই বলিউডের চেয়ে বেশি মানবিক? নাকি শুভশ্রীর মন্তব্য কেবল কূটনৈতিক ‘খোঁচা’?

কিছুদিন আগেই বলিউডের অন্যতম সফল অভিনেত্রী দীপিকা পাড়ুকোন (Deepika Padukone) নিজের সীমা টেনে বলেছিলেন— ‘আমি দিনে ৮ ঘণ্টার বেশি কাজ করব না!’ এই নিয়েই বিনোদন জগতে শুরু হয়েছিল তুমুল বিতর্ক। দাবি উঠেছিল, মাতৃত্বের পর কাজের সময়সীমা নিয়ন্ত্রণ করা অভিনেত্রীদের অধিকার। কিন্তু টলিউডের লেডি সুপারস্টার শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায় (Subhashree Ganguly) সেই আলোচনায় যেন সম্পূর্ণ ভিন্ন স্বর তুলে ধরলেন! সম্প্রতি তিনি এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, মুম্বইয়ের মতো বিপুল সুযোগ-সুবিধা না থাকা সত্ত্বেও, টলিউডে মা হয়েও তিনি কোনওদিন সমস্যায় পড়েননি— বরং সবাই তাঁর শর্ত মেনে চলেছেন!

ফলে প্রশ্ন উঠেছে, দীপিকার বক্তব্যের পরোক্ষ জবাব কি ‘খোঁচা’র মাধ্যমেই দিলেন শুভশ্রী? অভিনেত্রীর কথায়, মুম্বইয়ের ইন্ডাস্ট্রি যতটা সুবিধা পায়, টলিউডে কাজের পরিবেশ ততটাই সীমিত। তবুও এখানে মানবিকতা অনেক বেশি। পরিচালক, প্রযোজক, সহকর্মী— সবাই বুঝে নেন অভিনেত্রীর ব্যক্তিগত জীবনের প্রয়োজনীয়তা। শুভশ্রীর মতে, মাতৃত্ব কোনও বাধা নয়, বরং জীবনের অংশ। সেই অবস্থাতেও কাজ থামেনি তাঁর। উল্টে তিনি নিজেই ঠিক করেন, দিনে কত ঘণ্টা কাজ করবেন, আর প্রযোজক-পরিচালকরা তাঁর সিদ্ধান্ত মেনে নেন।

দীপিকার ‘৮ ঘণ্টা’ বিতর্কের মাঝেই শুভশ্রীর এই মন্তব্য যেন টলিউডের পক্ষে এক বড় পাল্টা দাবি তুলে দিল— এখানে নারী শিল্পীর প্রতি সম্মানটাই মুখ্য, সুযোগ নয়! যেখানে দীপিকা নিজের শর্তে কাজ করতে গিয়ে অভিযোগ তুলেছিলেন, কাজ হারাতে হয়েছে তাঁকে— সেখানে শুভশ্রীর অভিজ্ঞতা একেবারেই উল্টো। তিনি বলেন, দীপিকার আগে মা হওয়ার পরেও কখনও কোনও প্রজেক্ট থেকে বাদ পড়তে হয়নি, বরং সবাই তাঁকে সম্মান দিয়েছেন। তাঁর কথায়, “আমি নিজের সময় নিজেই ঠিক করে কাজ করি, সেটাই সবাই মেনে নেয়।”

তাঁর এই বক্তব্যে যেন স্পষ্ট হয়েছে যে, টলিউডের কর্মসংস্কৃতিতে সহমর্মিতা বলিউডের চেয়ে অনেক বেশি। ফলে প্রশ্ন উঠছে, দীপিকার সীমা টানাটা কি অতিরিক্ত আত্মপ্রদর্শন? শুভশ্রীর মন্তব্য ঘিরে ইতিমধ্যেই আলোচনার ঝড় উঠেছে দুই ইন্ডাস্ট্রির তুলনা নিয়ে। কেউ কেউ বলছেন, এই বক্তব্যে টলিউডের পক্ষে গর্ব করার মতো এক মানবিক চিত্র উঠে এসেছে, আবার কেউ মনে করছেন, দীপিকাকে পরোক্ষ ‘খোঁচা’ দিয়েছেন শুভশ্রী! কারণ, মাতৃত্বের পর কাজ কমানোর দাবি তুলে নিজের পেশাগত সিদ্ধান্তে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন দীপিকা, কিন্তু শুভশ্রী বলছেন— সুযোগ কম, বাজেট সীমিত, তবু সম্মান বেশি!

এই তফাৎটাই যেন এখন নতুন বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু। সবশেষে, শুভশ্রীর এই আত্মবিশ্বাসী অবস্থান যেন এক নতুন বার্তা দিচ্ছে ইন্ডাস্ট্রিকে— নারী শিল্পীর প্রয়োজন যদি বোঝা যায়, তবে বড় বাজেট বা গ্ল্যামার দরকার পড়ে না। বলিউডে যেটা আন্দোলন, টলিউডে সেটা নাকি স্বাভাবিক বাস্তব! দীপিকার ৮ ঘণ্টা দাবি আর শুভশ্রীর ‘নিজের মতো কাজ’ দর্শন— দুই তারকার এই বিপরীত অভিজ্ঞতা এখন সমাজ মাধ্যমের মুখোমুখি। প্রশ্ন একটাই— টলিউড কি সত্যিই বলিউডের চেয়ে বেশি মানবিক? নাকি শুভশ্রীর মন্তব্য কেবল কূটনৈতিক এক ‘খোঁচা’?

Piya Chanda