জয়েন গ্রুপ

বাংলা সিরিয়াল

এই মুহূর্তে

তোমার সাইজ কত? ফাঁকা ঘরে শরীরের মাপ জানতে চেয়েছিলেন পরিচালক, বিস্ফোরক দাবি অভিনেত্রী অনন্যা চট্টোপাধ্যায়ের

প্রায়শই টলিউডে কম্প্রোমাইজের প্রস্তাব পৌঁছে যায় বিভিন্ন অভিনেত্রীদের কাছে। আরে কমপ্রোমাইজ এর সঙ্গে আপোষ না করলেই নাকি কাজ মেলে না। সম্প্রতি অভিনেত্রী অনন্যা চ্যাটার্জী (Ananya Chatterjee) মুখ খুলেছেন এই বিষয়ে। তাঁর অভিজ্ঞতা টলিউডে ‘কাস্টিং কাউচ’ সম্পর্কিত আলোচনায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে। তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, ইন্ডাস্ট্রিতে মহিলাদের পুঁজি শুধুমাত্র অভিনয় নয়, বরং তাঁদের শারীরিক আকর্ষণও হতে পারে। এই সাক্ষাৎকারে অনন্যা তাঁর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা শেয়ার করে, ইন্ডাস্ট্রিতে মহিলাদের সম্মান ও নিরাপত্তা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তুলেছেন।

টলিউডের প্রথম সারির একজন জনপ্রিয় অভিনেত্রী অনন্যা চট্টোপাধ্যায়। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জয়ী “আবহমান” নামক সিনেমায় অভিনয়ের জন্য বহুল পরিচিত তিনি। এই ছবির পরিচালক ছিলেন ঋতুপর্ণ ঘোষ। মমতা শঙ্করের নেত্র প্রতিষ্ঠানের এই ছাত্রী নিজের অভিনয় যাত্রা শুরু করেছিলেন ‘দিন প্রতিদিন’ ধারাবাহিকের মাধ্যমে। এরপরে আর পেছনে ফিরতে তাকাতে হয়নি তাকে ‘ইতি মৃণালিনী’, ‘তিন কন্যা’,’মেঘে ঢাকা’ তারার মতো অন্যতম চলচ্চিত্র গুলিতে অভিনয় করেছেন তিনি। জি বাংলা জনপ্রিয় ‘সুবর্ণলতা’ ধারাবাহিক কে অত্যন্ত জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন তিনি।

সম্প্রতি, অভিনেত্রী একটি সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের সাক্ষাৎকারে ‘কাস্টিং কাউচ’ বা যৌন হয়রানির অভিজ্ঞতা নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করেছেন। তিনি জানান, ১৯ বছর বয়সে ইন্ডাস্ট্রিতে পা রাখার পর, এক প্রযোজক তাঁকে স্ক্রিনে কেমন দেখাবে জানতে চেয়ে তাঁর শারীরিক মাপ সম্পর্কে প্রশ্ন করেছিলেন। এমন পরিস্থিতিতে, অনন্যা তাঁর মাকে সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন এবং প্রযোজকের সঙ্গে কথোপকথনের পর, তিনি বিষয়টি ইন্ডাস্ট্রির পরিচিত ব্যক্তিদের সঙ্গে শেয়ার করেছিলেন। এরপর, সেই প্রযোজক তাঁকে এবং তাঁর পরিবারকে বারবার যোগাযোগ করে ক্ষমা চেয়েছিলেন।

বরাবরই অনন্যা স্পষ্ট বক্তা। এদিনও তার ব্যতিক্রম হল না। তিনি বললেন, “আমি খুব ছোট বয়সে এই ইন্ডাস্ট্রিতে এসেছি। তখন ১৯ বছর বয়স। আমার প্রথম কাজ ইচ্ছের বিরুদ্ধে ছিল। আমি অভিনয় করতে চাইনি। তবে যে পরিচালকের হাত ধরে কাজটা পাই, তাঁকে সকলে খুব সম্মান করতেন। সেই সময় এক প্রযোজক ছিলেন। তিনি আমায় কাজের জন্য ডেকে পাঠান। আমার প্রথম কাজ তাঁর ভাল লেগেছিল। আমি আমার মাকে নিয়ে গিয়েছিলাম। যখন আমি কনফারেন্স রুমে ঢুকলাম, দেখি সবটাই ফাঁকা, উনি একা বসে আছেন। আমায় প্রশ্ন করেছিলেন, তোমার Vital Statistics কী? আমি পাল্টা প্রশ্ন করি, কেন বলুন তো? উত্তরে আমায় বলা হয়, তোমায় স্ক্রিনে কেমন দেখাবে সেটা জানতে চাই। আমি উত্তর দিয়েছিলাম, আপনি তো বড় পরিচালক-প্রযোজক, আপনি যদি আমাকে দেখে না বোঝেন, তাহলে তো আপনার পরিচালক হওয়াই উচিত নয়। তারপরই তিনি চিৎকার করে বলতে শুরু করেন, তুমি জান আমি কে? আমি অমুকের, তমুকের সাইজ জানি…।”

এই ঘটনার পর, অনন্যা তার মায়ের সঙ্গে সেই প্রযোজককে বিষয়টি জানিয়ে দেন এবং প্রযোজক তাঁকে এবং তার পরিবারকে ক্ষমা চাইতে শুরু করেন। তিনি আরও বলেন যে, এই ধরনের ঘটনার পরে তাঁকে নিজেকে নিরাপদ রাখতে সহায়তা করার জন্য অনেক বন্ধু এবং পরিচিত ব্যক্তি তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন। এছাড়াও, অনন্যা বলেন যে, অনেকসময় অভিনেত্রীরা শুধু অভিনয়ের জন্য নয়, বরং তাদের শারীরিক আকর্ষণের কারণে ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ পান। তার মতে, এটি একটি বড় সমস্যা এবং মহিলাদের জন্য ইন্ডাস্ট্রির সংস্কৃতি পরিবর্তন জরুরি। অনন্যা এই ধরনের ঘটনা নিয়ে সরাসরি আলোচনা করে ইন্ডাস্ট্রির শুদ্ধতার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেছেন, যা মহিলাদের নিরাপত্তা এবং সম্মান নিশ্চিত করার গুরুত্বপূর্ণ।

Soumi