নব্বইয়ের দশকের দর্শকদের কাছে ‘ফেলুদা’ মানেই সব্যসাচী। কিংবদন্তি সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের পরে যিনি ফেলুদাকে জীবন্ত করে তুলেছিলেন, তিনি আর কেউ নন, তিনি আমাদের সব্যসাচী চক্রবর্তী। দীর্ঘদিন ধরে ছোটপর্দা এবং বড়পর্দায় রাজত্ব করেছেন তিনি। তথাকথিত নায়ক হিসেবে কখনও সিনেমার পর্দায় দেখা যায়নি তাঁকে। তবে অভিনেতা হিসেবে যতবার তিনি ক্যামেরার সামনে ধরা দিয়েছেন, ততবার দর্শকদের কাছে তিনি এক অত্যন্ত প্রিয় চরিত্র হয়ে উঠেছেন।
বয়স ৬০ পেরোলেও পর্দায় তার দাপট বার্ধক্যকে ছাপিয়ে যায়। তবে এবার হয়তো আর দেখা পাবো না তাঁকে সিনেমা জগতে। ৬৬ বছর বয়সে টলিউড থেকে অবসর নিতে চলেছেন বাঙালির প্রিয় ‘ফেলুদা’। বাংলাদেশের একটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তাঁর এই সিদ্ধান্তের কথা জানান সব্যসাচী চক্রবর্তী। তিনি জানান, “আপাতত আমি কোনও সিনেমাতেই নাম লেখাচ্ছি না। আমি সিনেমা থেকে বিদায় নিচ্ছি। এখন অবসরের সময়। সবাইকে আমি না করে দিচ্ছি। অনেক অফার এসেছে। অভিনয় করছি না।”
অভিনেতা জানিয়েছেন, নিজের মতো করে এবার বাকি সময় কাটাতে চান তিনি। পছন্দের খাবার খাবেন, ঘুমাবেন, বই পড়বেন, টেলিভিশন, ওটিটি দেখবেন, খেলা দেখবেন। তার মতে, তাঁর বয়স হয়েছে, কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার পর তিনি অনেকটা অসুস্থও হয়ে পড়েছেন। তাই চলচিত্র জগৎ থেকে অবসর নিতে চান তিনি। দীর্ঘ কেরিয়ারে তাঁর সবথেকে বড় প্রাপ্তি ফেলুদার চরিত্রে অভিনয় করতে পারা, এমনটাই জানান তিনি।
অভিনেতা সব্যসাচীর আরো একটি গুণ হল, তিনি খুব ভাল ওয়াইল্ড লাইফ ফটোগ্রাফার। তাই সুযোগ পেলেই বেরিয়ে পড়তেন ছবি তুলতে। তাঁর দুই ছেলে গৌরব আর অর্জুনও বাবার এই গুণ পেয়েছেন। পাশাপাশি অভিনয় জগতেও তাঁরা বেশ জনপ্রিয়। সম্প্রতি প্রথমবার তিনি ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে গিয়েছিলেন। এই চলচ্চিত্র উৎসবে সব্যসাচী অভিনীত ছবি ‘জেকে ১৯৭১’ এর প্রিমিয়ার হয়েছে। ছবিটির পরিচালনায় ছিলেন ফাখরুল আরেফিন খান।
অভিনেতার চলচিত্র থেকে এই বিদায়ের ঘোষণাতে রীতিমত অবাক হয়ে গিয়েছেন তাঁর ভক্তরা। তিনি যে এত তাড়াতাড়ি অভিনয় জগত ছেড়ে দেওয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলবেন তা আন্দাজ করতে পারেননি কেউ। রাশমিকা মান্দানা ও থালাপতি বিজয় অভিনীত ‘জেকে ১৯৭১’ গত ১১ ই জানুয়ারি তামিল-হিন্দি ভার্সন মুক্তি পেয়েছিল। ভামসি পায়দিপল্লী পরিচালিত এই ছবিটি প্রথম দিন মোট আয় করেছিল ২৬ কোটি টাকারও বেশি।