বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে ‘মহুয়া রায়চৌধুরী’ (Mahua Roy Choudhury) একটি রহস্যময় নাম। আজ তাঁর ৬৭ তম জন্মদিন। কম বয়সেই তিনি খ্যাতির শিখরে উঠেছিলেন, আবার আকস্মিকভাবে বিদায়ও নিয়েছিলেন। মাত্র ২৬ বছরের জীবনে জনপ্রিয় বাংলা ছবির একের পর এক নায়িকা চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকের মনে জায়গা করে নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তাঁর জীবনকে ঘিরে বিতর্ক, কৌতূহল আর অজস্র প্রশ্ন এখনো ঘুরপাক খায়। তিনি কি সত্যিই আ’ত্মহ’ত্যা করেছিলেন? নাকি ঘটেছিল অঘটন?
সেই উত্তর খুঁজেই আগামী বছর বড়পর্দায় আসতে চলেছে নতুন ছবি— গুনগুন করে মহুয়া। এই ছবির পরিচালনায় থাকছেন সোহিনী ভৌমিক, যিনি প্রথমবার বড় ছবি পরিচালনার দায়িত্ব নিতে চলেছেন। সোহিনী জানান, মহুয়ার জীবনের ইতিবাচক দিকগুলো খুব কম আলোচিত হয়েছে। বরং তাঁকে ঘিরে শুধু কেলে’ঙ্কারি, ম’দ্যপান বা উচ্ছৃঙ্খলতার গল্পই বেশি প্রচার পেয়েছে। অথচ একজন মা হিসেবে ছেলেকে খুব ভালোবাসতেন মহুয়া, কাজে বেরোলে অপরাধবোধ কাজ করত তাঁর ভেতরে।
অল্প বয়সে একের পর এক হিট ছবি দিয়েও তিনি দর্শকদের কাছে প্রিয় হয়েছিলেন। কিন্তু ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ভুগেছেন অবহেলা, আঘাত আর অন্যায়ের ভারে। সোহিনীর মতে, একজন নারী হিসেবে এই দিকগুলো তাঁকে নাড়া দিয়েছিল এবং সেখান থেকেই ছবির ভাবনা। প্রয়াত অভিনেত্রী মহুয়ার জন্মদিনের দিনেই প্রকাশ্যে এসেছে এই খবর যে, জি বাংলার জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘জগদ্ধাত্রী’-র অভিনেত্রী অঙ্কিতা মল্লিক এবার বড়পর্দার মহুয়া হয়ে উঠতে চলেছেন। প্রযোজক রানা সরকারের কথায়, অঙ্কিতার ভেতরে মহুয়া হয়ে ওঠার তীব্র খিদে রয়েছে।
বয়স এবং চেহারার সাদৃশ্যও তাঁকে আরও উপযুক্ত করে তুলেছে। অঙ্কিতার কাছে চরিত্রটি নিছক অভিনয় নয়, বরং দায়িত্ব। ধারাবাহিকের শুটিংয়ের ফাঁকে তিনি জানিয়েছেন, প্রথমে বিশ্বাসই করতে পারেননি তাঁকে মহুয়া চরিত্রে বেছে নেওয়া হয়েছে। ছোটবেলা থেকেই মহুয়ার ছবি দেখে বড় হয়েছেন, তাঁর রহস্যময় জীবনের গল্প শুনেছেন। তাই চরিত্রে অভিনয়ের আগে সেই মানুষটিকে বোঝার চেষ্টা করছেন তিনি। তাঁর কথায়, এই চরিত্র তাঁকে একই সঙ্গে ভীষণ কৌতূহলী আর আবেগী করে তুলেছে।
আরও পড়ুনঃ মৌসুমীর সুরেলা কণ্ঠে মাতল মঞ্চ, কিন্তু পারুলের নাচে বদলে গেল খেলার মোড়! সুরের জাদু বনাম নৃত্যের ঝড়, ‘পরিণীতা’য় রায়ানের মা আর পারুলের দ্বন্দ্বে উত্তেজনা তুঙ্গে! প্রতিযোগিতা চূড়ান্ত পর্যায়, শেষ হাসি হাসবে কে?
প্রযোজনা সংস্থা জানিয়েছে, চলতি বছরের শেষ থেকেই অঙ্কিতার লুক-টেস্ট শুরু হবে। সাজসজ্জা থেকে শুরু করে পোশাক, সবকিছুতেই থাকছে বিশেষ পরিকল্পনা। পরিচালক সোহিনী মনে করেন, যেভাবে দর্শক আজও অভিনেত্রীর নাম শুনে কৌতূহলী হন, সেভাবেই হয়তো এই ছবি আবারও আলোচনায় আনবে তাঁকে। চার দশক পেরিয়েও যে প্রশ্নগুলো রয়ে গেছে, সেগুলোর উত্তর কতটা মিলবে, তা বলবে সময়। কিন্তু পরিচালক ও প্রযোজকের আশা, এই ছবিই হয়তো মহুয়ার জীবনের কালিমা মুছে দিতে সক্ষম হবে।