আমরা অনেকেই বিশ্বাস করি, সম্পর্কে বয়সের হিসেব কোনওদিনই আসল মাপকাঠি নয়। ভালোবাসা আর বোঝাপড়া থাকলেই সম্পর্ক টিকে যায়, সেটা যতই সমালোচনা হোক না কেন। আর এরকমটাই প্রমাণ করেছেন এই দম্পতি। টলিউডে বয়সের ব্যবধান নিয়ে প্রেম আর বিয়ে সবসময়ই আলোচনার বিষয় হয়ে এসেছে। ‘সোহিনী সেনগুপ্ত’ (Sohini Sengupta) এবং ‘সপ্তর্ষি মৌলিক’-এর (Saptarshi Maulik) সম্পর্ক তার বড় উদাহরণ। সোহিনীর থেকে ১৫ বছরের ছোট সপ্তর্ষি, অথচ এই ব্যবধানকে উপেক্ষা করেই দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা সংসার করছেন।
সমাজ মাধ্যম থেকে বাস্তবে অনেক সমালোচনা শুনতে হলেও, দু’জনের সিদ্ধান্তে কোনও দ্বিধা ছিল না। বন্ধুর মতো একে অপরের পাশে থাকাই তাঁদের সম্পর্ককে টিকিয়ে রেখেছে, এমনটাই বলছেন কাছের মানুষরা। যদিও সোহিনীর জীবনের পথচলা কিন্তু সহজ ছিল না। প্রথম জীবনে মা-বাবার নাটকের দলে কাজ শুরু করলেও, পর্দায় তখনও আত্মপ্রকাশ করেননি তিনি। ব্যক্তিগত জীবনেও স্থিতি ছিল না তেমন। প্রথম সংসারে ভাঙন আসে গৌতম হালদারের সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদের মাধ্যমে। এর পরেই আবার নতুনভাবে জীবন গড়েন তিনি।
অপর্ণা সেনের ছবিতে অভিনয় করে জাতীয় পুরস্কার পাওয়া সোহিনী প্রমাণ করেছিলেন, তিনি শুধু একজন অভিনেত্রী নন, বরং একজন শক্তিশালী মানুষও। জীবনের একদিকে সাফল্যের আলো, আর অন্যদিকে ব্যক্তিগত সম্পর্কের ভাঙন— দুই বিপরীত পরিস্থিতিতেই তিনি নিজেকে শক্ত রেখেছেন সব সময়। অন্যদিকে, সপ্তর্ষির কর্মজীবনও শুরু হয়নি তখনও। সোহিনীর কাছেই সে অভিনয় শেখা শুরু করে। এরপর অজান্তেই দু’জনের মধ্যে একটা সম্পর্ক গড়ে ওঠে, যার ফলস্বরূপ এখন সুখী দাম্পত্য জীবন। জনপ্রিয় ধারাবাহিক শ্রীময়ী-তে অভিনয় করে সপ্তর্ষি দর্শকের কাছে পরিচিত হন।
তারপর একাধিক ছবিতেও কাজ করেছেন তিনি। বয়সে ছোট হলেও পেশাদারিত্বে কোনও ফারাক নেই, এমনটাই বারবার স্পষ্ট করেছেন তিনি। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, সোহিনীর ছেলের চরিত্রে অভিনয় করতে হলে কী করবেন। দ্বিধাহীনভাবে তিনি জানিয়েছিলেন, চরিত্রের প্রয়োজনে সেটা করতে তাঁর কোনও আপত্তি নেই। তাঁর কথায়, “সম্পর্ককে আলাদা করে পেশাদার দিকটাকেও সমান গুরুত্ব দেওয়া জরুরি।” তবে এই সম্পর্ক সহজে গ্রহণ করেনি চারপাশের মানুষ। ‘বয়সের ফারাক’– এই একটা কারণেই তাঁদের কটাক্ষ সহ্য করতে হয়েছে কর্মক্ষেত্রেও।
কিন্তু সোহিনী-সপ্তর্ষি কখনওই মানুষের কথায় কান দেননি। বরং বছরকে বছর পার করে তাঁরা প্রমাণ করেছেন, বয়স দিয়ে সম্পর্কের গভীরতা মাপা যায় না। একসঙ্গে টিকে থাকার শক্তিই আসল পরীক্ষা। আগস্টে তাঁদের দাম্পত্য জীবন ১২ বছরে পা রেখেছে। সবচেয়ে বড় কথা, তাঁরা একে অপরের কাছে জীবনসঙ্গী হয়েও বন্ধুর মতো থাকেন। হয়তো সেই কারণেই এত সমালোচনা সত্ত্বেও তাঁদের সম্পর্ক টিকে আছে। বয়সের সমীকরণকে গুরুত্ব না দিয়ে তাঁরা বরং দেখিয়েছেন— সম্পর্কে সম্মান থাকলেই দাম্পত্য দীর্ঘস্থায়ী হয়। তাই আজও এই জুটি টলিউডে আলোচনায় থেকেও নিজেদের মতো করে সুখে সংসার করছে।
আরও পড়ুনঃ বিয়ের পরে বউ দুর্গা, বর হল অসুর! দুর্গা রূপে জি বাংলার পর্দায় ধরা দূবেন শ্বেতা পাশে মহিষাসুর স্বামী রুবেল! জি বাংলার মহালয়ার অনুষ্ঠানে ইধিকার শিব কে হচ্ছেন? বাকি নায়িকারা রয়েছেন কোন চরিত্রে?
Disclaimer: এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত মতামত, মন্তব্য বা বক্তব্যসমূহ সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি মাত্র। এটি আমাদের পোর্টালের মতামত বা অবস্থান নয়। কারও অনুভূতিতে আঘাত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়, এবং এতে প্রকাশিত মতামতের জন্য আমরা কোনো প্রকার দায়ভার গ্রহণ করি না।