তাঁর জন্ম পরিচয় বাংলাদেশী। কিন্তু কর্মপরিচয়ে তিনি ভারতবাসীর ভীষণ কাছের একজন মানুষ। ওপার বাংলা থেকে এপার বাংলা তাঁর অভিনয়ের মুগ্ধতা ছড়িয়ে রয়েছে সর্বত্র। যেমন মোহময়ী রূপ তেমনই বুদ্ধিদীপ্ত অভিনয়ে তিনি বারবার মন মাতিয়েছেন দর্শকদের। আজ ১০ বছর হল এপার বাংলায় কাজ করছেন তিনি। সাফল্যমন্ডিত ধারাবাহিকের সংখ্যাও কিন্তু অসংখ্য। বুঝতেই পারছেন কার কথা বলছি। তিনি প্রতিভাময়ী অভিনেত্রী জয়া আহসান (Jaya Ahsan)।
এই দাপুটে অভিনেত্রীর বিনোদন দুনিয়ায় প্রথম পথ চলা শুরু হয়েছিল মডেলিং দিয়ে। ধীরে ধীরে বাংলাদেশি নাটকে সপ্রতিভ, বুদ্ধিদীপ্ত অভিনয় দিয়ে তিনি দর্শকদের মন যেখানে শুরু করেন। প্রচুর নাটকে অভিনয় করেছেন তিনি, সিনেমাতেও অভিনয় করেছেন তিনি। একাধিকবার পেয়েছেন জাতীয় সম্মানও। কাজ করছেন কমার্শিয়াল সিনেমায়। যদিও তিনি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন আর্ট ফিল্ম বা মিডল ফিল্মে।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে অরিন্দম শীলের আবর্ত সিনেমার হাত ধরে তিনি প্রথমবারের মতো পা রাখেন এপার বাংলায়। এরপর অবশ্য আর তাঁকে পিছন ফিরে দেখাতে হয়নি। সৃজিত মুখার্জি রাজকাহিনী হোক বা এক যে ছিল রাজা, কৌশিক গাঙ্গুলির বিজয়া, বিসর্জন, অর্ধাঙ্গিনী, অতনু ঘোষের রবিবার বা বিনি সুতো এছাড়াও আরও কত পরিচালকের আরও কত সফল সিনেমা রয়েছে তাঁর ঝুলিতে। এমনকি নিজেও পরিচালনা করেছেন একটি সিনেমা দেবী। বাংলাদেশের ব্যাপক সাফল্য পেয়েছিল এই সিনেমাটি।
এই জনপ্রিয় অভিনেত্রীর অভিনয় জীবন যেমন সাফল্যমন্ডিত ব্যক্তিগত জীবন আবার ততটাই ক্ষতবিক্ষত। তাঁকে নিয়ে গুজব, রটনার অন্ত নেই। তিনি দুই বাংলাতেই বিপুল জনপ্রিয়। বিভিন্ন পরিচালকের সঙ্গে বিভিন্ন সময় তাঁর নাম জড়িয়ে তাঁকে কদর্য ভাষায় আক্রমণ করেছেন নেটিজেনরা। কিন্তু না, কোন গুঞ্জনই ধোপে টেকেনি। ১৩ বছরের বিবাহিত জীবন শেষ হয়ে গেলেও আর কখনই বিয়ের পথে পা বাড়াননি বা প্রেমের সম্পর্কে জড়াননি জয়া।
আজও স্বামীর পদবী ব্যবহার করেন অভিনেত্রী। প্রেম করে বিয়ে করেন বাংলাদেশের স্বনামধন্য জমিদার পরিবারের ছেলে ফয়সল আহসানকে। বাংলাদেশের খুব নামই মডেল ছিলেন ফয়সল। কাজের সূত্রেই দুজনের আলাপ। ১৯৯৮-সালে বিয়ে হয় তাঁদের। গভীর প্রেমের পর চার হাত এক হয়। জুটি হিসেবেও জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন তাঁরা। বেশ কয়েকটি নাটকেও একসঙ্গে জুটি বেঁধে কাজ করেছিলেন তাঁরা।
দাম্পত্যের ১৩ বছর পার করে ভেঙে যায় তাঁদের মধ্যেকার বিবাহিত সম্পর্ক। একটি সাক্ষাৎকারে সম্পর্ক ভাঙনের কারণ হিসেবে ফয়সল জানিয়েছিলেন জয়ার সাফল্য, জনপ্রিয়তা ছাপিয়ে যাচ্ছিল। আর ক্রমশই পিছিয়ে পড়ছিলেন ফয়সল। শুরু হয় মন কষাকষি, ইগোর লড়াই। দূরত্ব ক্রমশ বাড়তেই থাকে। কিন্তু পরে অনেক চেষ্টা করেও এই সম্পর্ক ঠিক করতে পারেননি ফয়সাল। ২০১১ সালে পাকাপাকি ভাবে আলাদা হয়ে যান তাঁরা। বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায় তাঁদের। আজও দুজন দুজনের প্রতি অত্যন্ত শ্রদ্ধাশীল। দু’জনের কেউই আর বিয়েও করেননি। একজন ব্যস্ত অভিনয় নিয়ে অন্যজন রাজনীতি নিয়ে।
View this post on Instagram