কেটে গিয়েছে উৎসবের সময়। নানা ঝকমকি আলোয় না, পার্ক স্ট্রিট সেজে রয়েছে নিজের মতো করেই। সেখানেই একটি পাবের সামনে গিটার হাতে গান গাইছে এই বছর কুড়ির কাছাকাছি এক তরুণ। নাম শুভম। সামনে রাখা একটি বক্স। তাতে রয়েছে কিছু টাকা। আর পাশে একটা সাদা কার্ড বোর্ডে লেখা কিছু কথা। সেই কথাগুলোই সব প্রশ্নের জবাব।
হঠাৎ কেনই বা সেন্ট জেভিয়ার্সের বি. কমের তৃতীয় বর্ষের এই ছাত্রটি রাস্তায় গান গাইছে? শীতে যেসময় পড়ুয়ারা বাড়িতে বেশি করে থাকতে চাইছে, সেসময় সে রাস্তায় গান গাইছে। অনুষ্ঠানের এই স্টাইলকে বাস্কিং বলে। ওই সাদা কার্ড বোর্ডে লেখা, শুভমের বাবাকে সপ্তাহে তিনবার ডায়ালিসিস করাতে হয়। পরিবারের এই দুঃসময়ে আর্থিকভাবে পাশে দাঁড়াতেই বাস্কিং – কে বেছে নিয়েছেন তিনি। বাবার চিকিৎসার পাশাপাশি নিজের পড়াশোনা ও পরিবারের খরচ জোগাড় করতেই শিল্পকে হাতিয়ার করেছেন শুভম। বোর্ডে শেষের দিকে ‘ সাপোর্ট বাস্কিং ‘, ‘ সাপোর্ট স্ট্রাগলিং মিউজিশিয়ান ‘ – ও লেখা।
নিজের শিল্পের মাধ্যমে পথ চলতি বহু মানুষের নজরেই আসছেন তিনি। কেউ কেউ তাড়াহুড়োয় যথাসম্ভব সাহায্য করে চলে যাচ্ছেন। আবার অনেকে সাহায্য করতে না পারলেও দাঁড়িয়ে গান শুনছেন। এই রাস্তা থেকেই অনেকে সঙ্গে পরিচয় হয়েছে শুভমের। বেশ কিছু জায়গায় শো করার অফারও পেয়েছেন।
বিদ্যাসাগর হাসপাতালে শুভকে বাবার ডায়ালিসিস হয়। ধীরে ধীরে শারীরিক পরিস্থিতির উন্নতি হতে থাকে। তবে শুভম আশাবাদী। সে পিছিয়ে আসেনি, পালিয়ে যায়নি। সে লড়ে যাচ্ছে। আপনি যদি শুভমের লড়াইয়ের ওকে একটু সাহায্য করতে চান, তাহলে একদিন পার্কস্ট্রিটের দিকে গিয়ে একটু সাহায্য করে আসতে পারেন।